• Bangla - হাস্যকৌতুক

    হাঁসের সাইকেল

    বটুকেশ্বর পাল পটাশপুর গ্রামের নাম যাঁরা শুনেছেন, তাঁরা জানেন—এই গ্রামে জিনিসপত্র যত পুরনো, তার চেয়ে বেশি পুরোনো মানুষের বিশ্বাস। কিন্তু এই প্রাচীন চিন্তার ঢেউয়ে মাঝেমাঝে উঠে আসে এক-একটা অদ্ভুত ঢেউ, যেমন হরিপদ কাকা। উনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি নিজেকে “গাঁয়ের গ্যালিলিও” বলেই দাবি করেন। যদিও কাকার অঙ্কে তেমন হাত ছিল না—শ্রেণি সাত অবধি পড়েছেন, তারপরে খাজাঞ্চির দোকানে হিসেব রাখার বদলে লোকের পকেট ভুল করে গুণে গুণে ফাঁকা করে ফেলেছিলেন। সেই থেকে “গণিত ত্যাগ” করে, মন দিয়েছেন বিজ্ঞানে—অর্থাৎ, নিজের মতো করে সব কিছু আবিষ্কার করার চেষ্টায় দিনরাত বিভোর। কাকার এই বিজ্ঞানমনস্কতা আসলে এল আকাশ থেকে। কয়েক বছর আগে এক ঝড়বৃষ্টির রাতে…

  • Bangla - ভূতের গল্প - হাস্যকৌতুক

    ভূতের বউ আর ব্রহ্মচারী বটগাছ

    বিমলেশ বাগচী পর্ব ১: বটগাছের ব্রত ও ভবেশের বুদ্ধি ধলেশ্বরীপুর নামটা শুনলেই হাসি পায় অনেকের। কারণ এই গ্রামে আছে এমন এক বটগাছ, যেটা নাকি ব্রহ্মচারী। গ্রামের সব গুঞ্জন আর গপ্পে এই বটগাছ নিয়ে—কে নাকি এর ছায়ায় বসে প্রেম করল, আর কে নাকি ভয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে পালাল। এই বটগাছকে কেন্দ্র করেই গল্পের শুরু। এই গাছটা গ্রামের উত্তর প্রান্তে, কাঁঠালতলা মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে। বিশাল, পুরনো, আর তার গায়ে মাটির সিন্দুর আর মাটি-গোলাপ দিয়ে সাজানো একটা ছোট্ট বেদি। সবাই জানে, এখানে প্রেম করা মানে কেলেঙ্কারি নিশ্চিত! গাঁয়ের ছেলেরা বলে, “এই গাছের নিচে বসে প্রেম করতে গেলেই ল্যাংটো ছাগল পেছনে ধাওয়া করে!” কেউ…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    গিন্নি যখন গোয়েন্দা

    সায়ন দে পর্ব ১: চায়ের কাপ ও চোরের গল্প সকাল ঠিক আটটা। মালবিকা দেবী বারান্দায় বসে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে পাড়ার খবর পড়ছেন। অবশ্য এই খবর পত্রিকায় নয়, তা তৈরি হয় তাঁর মনেই—কে আজ সকালবেলা কার দরজায় কড়া নাড়ল, কে ছাদে গিয়ে কিসের জন্য চিৎকার করল, আর কে কার সঙ্গে বাজারে গেল। তিনি ছিলেন একজনা সজাগ নাগরিক, এবং অতি সজাগ গিন্নি। হঠাৎ চায়ের কাপ নামিয়ে তিনি চিৎকার করলেন, “অশোক! ঘরের ফ্রিজ থেকে আমার সন্দেশগুলো কে চুরি করল?” অশোকবাবু, তাঁর শান্ত স্বামী, যিনি সদ্য অবসর নিয়েছেন পোস্ট অফিস থেকে, ভেতর থেকে গলা তুলে বললেন, “চুরি? বাড়িতে চোর কোথা থেকে আসবে? আর…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    গণেশদার গোয়েন্দাগিরি

    সুব্রত বসাক পর্ব ১: চায়ের দোকানে চাঞ্চল্য গাঁয়ের নাম গোরুর হাট। ম্যাপে নেই, তবে পাড়ার চা-তেলের দোকান থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত অফিস পর্যন্ত সবাই জানে, এখানে সমস্যা মানেই “গণেশ দা-র তদন্ত”! গণেশ দা হলেন পাড়ার অঘোষিত গোয়েন্দা—মাথায় হালকা টাক, হাতে চা, আর পকেটে সবসময় কলম আর ছেঁড়া খাতা। চশমা কাঁধে ঝুলিয়ে যখন হাঁটেন, তখন মনে হয় পাড়ার সব রাজ্যগুপ্ত খবর উনারই কানে। ঘটনা শুরু হয় এক সকালে, বাজারের মোড়ে হাকিম দা-র চায়ের দোকানে। হাকিম দা বলল, — “রঘুর দোকান থেকে সোনালি ইলিশ চুরি গেছে রে!” — “সোনালি ইলিশ?” – পাশে বসে থাকা মধু বলল। — “হ্যাঁ রে! ওইটা প্ল্যাস্টিকে মোড়ানো,…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    আলতা বৌ ও স্মার্টফোন

    বিমল রায়চৌধুরী কুলতলি গ্রামের বিকেলটা ছিল একদম শান্ত। হালকা হাওয়া বইছে, নারকেল গাছের পাতারা ঝিরঝির করে দুলছে। গ্রামের প্রধান রাস্তাটা পেরিয়ে বাঁশবাগানের মধ্যে দিয়ে হেঁটে আসছেন এক মহিলার ছায়া। সিঁথিতে গাঢ় সিঁদুর, হাতে কাজ করা শাঁখা-পলা, চোখে আত্মবিশ্বাস। আর সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়—তার হাতে চকচকে একটা স্মার্টফোন! হ্যাঁ, উনি আলতা বৌ। পুরো গ্রামের প্রথম মহিলা যিনি নিজে উপার্জন করে কিনেছেন একটা স্মার্টফোন। আজ থেকে দুই মাস আগে সিধু ভাইয়ের দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে উনি বলেছিলেন, “দাদা, ফোনটা কতো বলো তো?” সিধু ভাই তো অবাক, “বৌদি, এইটা তেনার ফোন! শহরের লোকেরা চালায়, ফেসবুক-ইউটিউব করে। তোমার কি হবে ও দিয়ে?” আলতা বৌ একগাল হেসে…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    বউ ও পাসওয়ার্ডের রহস্য

    বৃষ্টি পড়ছিল সেদিন সকাল থেকেই। জানালার কাঁচে টুপটাপ বৃষ্টির ছোঁয়া, আর রান্নাঘরে উনুনে ফুটছে ডালের হাঁড়ি। সঞ্চিতা চা বানাতে বানাতে বারান্দার দিকে একবার তাকালো। ঘরের মধ্যে স্বামী অনিরুদ্ধ তখন গুটিশুটি হয়ে সোফায় মোবাইলে কিছু দেখছিল। মাঝে মাঝে তার মুখে হাসির রেখা—কখনও এক ফুঁয়ে হেসে ওঠা, আবার কখনও ঠোঁটের কোণে এক ধরণের রহস্যময় চওড়া হাসি। সঞ্চিতার চোখ সেদিকে স্থির। বেশ কিছুদিন ধরে এই দৃশ্যটা সে বারবার দেখছে। বিশেষ করে রাত আটটার পর থেকে মোবাইল যেন অনিরুদ্ধর জীবনের দ্বিতীয় স্ত্রীর মতো আচরণ করে—সারাক্ষণ চ্যাটিং, অদ্ভুত অডিও মেসেজ, আর মাঝেমধ্যে কিছু ‘টিং টিং’ শব্দে স্বামীর মুখে এক অদ্ভুত হাসি। সঞ্চিতার ভেতরে একটু একটু…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    ভজহরি মামার বউ খোঁজা

    বাপ্পা মণ্ডল পাড়ার সবচেয়ে আজব চরিত্র যদি কেউ হয়, তাহলে সেটা নিঃসন্দেহে ভজহরি মণ্ডল। বয়স ৪৫ হলেও মনটা আটকে আছে ১৮-তে। বগলে রেডিও, গলায় প্রেমের গান, মুখে রসিকতা—এই হলো তার দৈনন্দিন জীবন। পুরো গ্রাম তাকে চেনে “ভজহরি মামা” নামে—কেউ হাসে, কেউ বিরক্ত হয়, কিন্তু সবাই জানে, তার মত ব্যাচেলর আর হয় না। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই ভজহরির মাথায় চেপে বসে বিয়ের ভূত! “আমি কি বিয়ে করব না?”—এই প্রশ্ন থেকেই শুরু হয় এক অসম্ভব মজার, অদ্ভুতুড়ে এবং কখনো কখনো আবেগঘন অভিযান। পর্ব ১: ব্যাচেলর বোম্বা ভজহরি ভজহরি মণ্ডল—এই নামটা শুনলেই গাঁয়ের মানুষদের মুখে হাসির রেখা ফুটে ওঠে। কেউ বলে তিনি পাগল,…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    বাবলু দার বিয়ে.কম

    স্বপন সরকার অধ্যায় ১: বিয়ের বিজ্ঞাপন ও বিড়ম্বনা বাবলু দা, পুরো নাম বাবলু মুখার্জি, পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই, কিন্তু এখনও ব্যাচেলর। কেউ কেউ বলে — “ব্যাচেলর” না, “চিরকুমার”! চোঙা প্যান্ট, ফুলহাতা সাদা গেঞ্জি আর একটা জরাজীর্ণ হাতঘড়ি হাতে, চুলের রং এখন আর কালো নয়, তবে টানা চিরুনিতে পাক ধরা চুলেও বাবলু দা এক রকম আভিজাত্য বজায় রেখেছেন। থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরের এক অজ পাড়াগাঁয়ে, নাম হল ‘আটঘরা’। গাঁয়ে কেউ ‘বাবলু মুখার্জি’ বলে না, সবাই বলে “বাবলু দা”। কেউ আবার বলে “বিয়ের পাকা খাতা খুলে রেখে ধোঁয়া তুলছেন।” বাবলু দা’র বিয়ে হয়নি কেন, সেটা নিয়ে গোটা গ্রামে অন্তত সাত রকমের গল্প প্রচলিত। কেউ…