অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় পর্ব ১ : শ্মশানের গহ্বর রাত তখন ন’টা পেরিয়েছে। আষাঢ়ের ভিজে হাওয়া কলকাতার গলিগুলোকে এক অদ্ভুত কুয়াশার মতো জড়িয়ে রেখেছে। দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গার ধারে ছোট্ট একটা শ্মশান—লেখাপড়ার বইতে নাম নেই, লোকমুখে প্রচলিত কেবল—“কালকেতুর আখড়া”। স্থানীয়রা বলে, এখানে শবদাহ হলে আগুন নেভার পরে অচেনা ছায়ারা ভিড় করে, যেমন করে কাক ভিড় করে ছাইয়ের স্তূপে। অয়ন, জাদুঘরে কাজ করা এক তরুণ গবেষক, সেই শ্মশানের দিকে এগোচ্ছিল। তার হাতে মোটা চামড়ার ফাইল, ভেতরে কিছু পুরোনো তালপাতার পুঁথি। সেগুলোর অক্ষর কালো হয়ে গিয়েছে, তবু সেখানে যে শব্দ লেখা আছে, সেগুলো অয়ন এক সপ্তাহ ধরে পড়ছে। শব্দগুলোতে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত আকর্ষণ—“অমায়া তন্ত্র”—এক গোপন…
-
-
অরিন্দম মুখোপাধ্যায় পর্ব ১ – অদ্ভুত চিঠি শহরের ভেতরে এমন সব গলি আছে যেগুলোতে সূর্যের আলো পৌঁছতে চায় না, আর চাইলেও পৌঁছতে পারে না। পুরনো ইমারত, একটার গায়ে আরেকটা ঠেসে দাঁড়িয়ে আছে, জানলার গ্রিলগুলো মরচে পড়ে ক্ষয়ে গেছে, ভাঙা তার ঝুলে আছে রাস্তায়। সেই অন্ধকার গলির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে একটা বিশাল বারো তলা বাড়ি, যেটাকে আশপাশের মানুষ শুধু “ছায়ার বাড়ি” বলে ডাকে। কারণ এই বাড়ির জানলাগুলোতে গত দশ বছর ধরে কোনো আলো জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। তবুও মাঝেমাঝে অনেকে বলে থাকে, রাত বারোটার পর ওই বাড়ির ছাদে নাকি একটা অস্পষ্ট ছায়া দেখা যায়, কিন্তু কাছে গিয়ে কিছু বোঝা যায় না।…
-
অভিষেক দত্ত পর্ব ১ : অরণ্যের প্রান্তে সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে গড়িয়ে পড়ছে। লালচে আলো যেন মায়ার পর্দার মতো ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। মহারানী অরণ্যের গাঢ় সবুজ ছাতার উপর সেই আলোর আভা পড়তেই জঙ্গলটা আরও রহস্যময়, আরও গম্ভীর হয়ে উঠছে। বাতাসে এক অদ্ভুত শীতলতা, অথচ গ্রীষ্মকাল, গরমের দাপট চরমে থাকার কথা। যেন এই জঙ্গলের আলাদা এক নিজস্ব ঋতুচক্র আছে—বাকি পৃথিবীর সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই। অভিজিৎ ট্রেকিং ব্যাগ পিঠে চাপিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল ধুলোমাখা কাঁচা রাস্তায়। তার চোখে কৌতূহলের ঝিলিক। বয়স পঁচিশের কাছাকাছি, সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এক বন্যপ্রাণী গবেষক। তার লক্ষ্য—অদৃশ্যপ্রায় বন্যপ্রাণীদের খোঁজ পাওয়া। কত গল্পই না ছড়ানো…
-
অরিন্দম লাহিড়ী পর্ব ১: রেখার ভেতর লুকোনো মুখ কলকাতার বর্ষার দিনগুলোর আলাদা একটা গন্ধ আছে। ভিজে মাটির সঙ্গে পুরোনো বইয়ের পাতা মিশে এক ধরনের স্যাঁতসেঁতে শ্বাস ছড়িয়ে দেয় শহরের অলিগলিতে। আড্ডাতলার সেই ভাঙাচোরা চায়ের দোকানটার সামনে বৃষ্টির ফোঁটা তিরতির করে ঝরছিল টিনের চাল থেকে। দোকানটা শহরের পুরোনো সাংবাদিক, লেখক, চিত্রশিল্পীদের এক অদ্ভুত আড্ডাখানা। সেই দোকানের কোণের টেবিলে বসেছিল অরিজিৎ সেন—চল্লিশের কোটায় পৌঁছে যাওয়া এক কার্টুনিস্ট। তার চুলগুলো কিছুটা অগোছালো, চোখের নিচে কালো দাগ, আঙুলে শুকিয়ে যাওয়া কালির ছোপ। অরিজিৎ সেই দিন একটা নতুন কাজ আঁকছিল। কাগজে আঁকা মানুষগুলো তার কাছে শুধুই ব্যঙ্গাত্মক চরিত্র নয়, যেন তারা জীবন্ত হয়ে ওঠে। আজকের…
-
দেবদীপ মুখার্জী পুরনো ভাড়াবাড়ি শহরের প্রান্তে, যেখানে নতুন উঁচু ফ্ল্যাটের দালান এখনও পুরোপুরি গজিয়ে ওঠেনি, সেখানেই একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ভাঙাচোরা, শ্যাওলা-ঢাকা একটি ভাড়াবাড়ি। বাইরে থেকে দেখলেই মনে হয় বহুদিন কেউ থাকেনি। কিন্তু আসলে সেটা ভাড়ার জন্যই রাখা হয়েছে—সস্তা ভাড়া, সামান্য মেরামতির খরচে কেউ যদি সাহস করে থাকতে রাজি হয়। রুদ্র, সদ্য কলেজ শেষ করে সাংবাদিকতার চাকরিতে ঢোকা এক তরুণ, তার অফিসের কাছে একটা থাকার জায়গা চাইছিল। শহরের ভেতরে ভাড়া সামলানো সম্ভব হচ্ছিল না। ঠিক তখনই এক প্রপার্টি ডিলারের মাধ্যমে এই বাড়ির খোঁজ পায়। বাড়িটা দেখতে এসে প্রথমেই বুক কেঁপে উঠেছিল—কালচে দেওয়াল, কাঠের জানালায় ফাটল, ছাদের কোণে বাদুড় ঝুলে আছে। কিন্তু…
-
তনয়া সেন বিকেলের শেষ আলোয় যখন সূর্য পাহাড়ের গায়ে ধূসর হয়ে গলে আসছিল, তখনই অরণ্যের বাস এসে পৌঁছল ছোট্ট গ্রামটায়। বাস বলতে আসলে একটা পুরোনো মিনিবাস, জানালার কাচ ঝাপসা, সিটের চামড়ায় ফাটল। গাঁয়ের নাম রাধাপুর—এমন নাম মানচিত্রে খুঁজলেও পাওয়া মুশকিল। তবু অরণ্যের মতো ফটোগ্রাফারের কাছে এই জায়গার টান ছিল অন্যরকম। শহরের কোলাহল, নামজাদা প্রকল্প, নামী রিসর্ট নয়—বরং অচেনা, অনাবিষ্কৃত জায়গার মধ্যে লুকোনো প্রকৃতির ছবি তুলতে তার সবচেয়ে ভালো লাগে। অরণ্যের কাঁধে ঝোলানো ব্যাগটা ভারী, ভিতরে ক্যামেরা, লেন্স, ত্রিপড আর কিছু নোটবুক। বাসস্ট্যান্ডে নেমে চারপাশে তাকাতেই সে বুঝল, এই গ্রাম যেন সময়ের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কাঁচা রাস্তা, খড়ের চালের ঘর, বাচ্চাদের…
-
Rahul Malhotra One The summer sun was already high when Rohan, Anya, Kabir, and Tara found themselves assigned to the same group for their history project, a mundane school task about the “lost traditions of Himachal.” At first, they treated it with typical teenage indifference, expecting a few hours of research in the library and a quick, perfunctory presentation. Rohan, with his love for photography, suggested documenting old artifacts in the town; Kabir, always the skeptic, rolled his eyes at the thought of dusty legends; Tara, the organized one, insisted on interviews with the elders; and Anya, curious and restless,…
-
Aanya Roy Part 1: Arrival in Chandrapur The monsoon had begun its slow, deliberate siege over Bankura, draping the laterite hills in a persistent, misty gray. Every hill and hollow seemed to hold a secret, every forested path whispered with wind and rain. Arjun Sen’s jeep rolled over the slick red clay road, tires squelching in protest, as he left the asphalt of the district town behind and entered the forgotten spine of Chandrapur. The village appeared as if it had emerged from another century—terracotta temples leaning in tired dignity, mud walls patched with moss, and narrow lanes where…
-
Aarushi Trivedi One The monsoon had just withdrawn from the land, leaving behind a scent of damp earth and ancient memories as Dr. Meera Rao stepped off the dusty jeep that brought her to Shulgaon—a quiet riverside village wrapped in dense sal groves and secrets. From the banks of the Narmada, the landscape stretched out with a deceptive serenity, the river gliding past like a sentient observer. Meera adjusted the scarf around her neck, shielding herself from the lingering heat, her eyes already scanning the site marked by flags and canvas tarps. It was an unassuming mound just fifty meters…
-
Vivaan Malik Part 1: The Room That Doesn’t Exist The rain fell like nails on the roof of the boarding house, hard and deliberate. Elliot Crane stepped out of the taxi, dragging a battered suitcase behind him, the soles of his boots already slick with Kolkata’s monsoon grime. The signboard above the house was missing letters—what remained read: “B R ING H USE.” A broken bulb swung from the lintel like a dying eye. He paused for a moment, collar turned up, and knocked twice. Behind the faded blue door, something shifted. A slit opened. Grey eyes squinted. “Room?” Elliot…