ঐশী মুখার্জী পর্ব ১ কলকাতার দুপুরটা ছিল সেই রকম একটা দুপুর, যেটা চুলের গোড়া দিয়ে মাথা গরম করে দেয়। ফ্লাইওভারের নিচে বাস দাঁড়াতে দাঁড়াতে হাঁপিয়ে ওঠে, ছেলেমেয়েরা অফিসের জামা-প্যান্টের নিচে ঘেমে নেয়ে অস্থির হয়ে পড়ে। এমনি একটা দুপুরে রোদ্দুর প্রথম পা রাখে তার নতুন অফিসে—এই শহরের এক মাঝারি রকমের আইটি কোম্পানি, নাম ‘টেকমাইন্ড’। নতুন চাকরি, নতুন পরিবেশ, নতুন মুখ। রোদ্দুরের বয়স পঁচিশ, সদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে প্র্যাকটিকাল লাইফে প্রবেশ করেছে। সে স্বপ্ন দেখে—অফিস মানে হবে বন্ধুত্ব, চা, হাসি, হয়তো কোথাও গিয়ে প্রেম। কিন্তু বাস্তব চুপচাপ থাকে। সকালটা গিয়েছিল ইন্ট্রোডাকশনের মাঝে, কেউ কারও দিকে তাকায়নি ঠিক করে, শুধু HR বলেছিল, “Meet…
-
-
ঈশিতা মল্লিক পর্ব ১ ঘড়িতে তখন ঠিক বারোটা। রোদটা ছিল না ঠিক চড়া, আবার ম্লানও না। একটা পাহাড়ি দুপুরের মধ্যে ঠিক যেমনটা আলোর আভা থাকে—নির্দিষ্ট কিছু নয়, নরম ছায়ার মতো। ঈরা জানালার কাঁচে কপাল ঠেকিয়ে বসে ছিল, গাড়ির প্রতিটা ঝাঁকুনি যেন তার বুকের ভেতরও কিছু একটা আলগা করে দিচ্ছিল। শিলিগুড়ি ছাড়িয়ে এখন পাহাড়ি রাস্তায় ঢুকে পড়েছে গাড়ি। সহযাত্রী দুজন—বাবা আর মৌদি—পেছনের সিটে ঘুমোচ্ছে, আর ঈরার হাতে ধরা নোটবুকের পাতায় শুধু একটা বাক্য লেখা: “এইবার পাহাড়ে শুধু মনটা নিয়ে যাবো, শরীরটা থাক না কোথাও গড়িয়ে।” ঈরার পাহাড়ে আসা নতুন নয়। স্কুলের সময় থেকে টানা আট বছরে সে পাহাড়ে এসেছে দশবার। কিন্তু…
-
अनामिका जोशी 1 शाम की हवा में अजीब सी उदासी थी, जैसे दिन अपने पैरों के निशान समेट रहा हो। दिल्ली के हज़रत निज़ामुद्दीन स्टेशन पर मयंक एक बेंच पर बैठा था, अपने नीले डफल बैग के ऊपर कोहनी टिकाए, और दूसरी ओर एक किताब पकड़े—”Norwegian Wood”। कानों में ईयरफोन, लेकिन कोई गाना नहीं चल रहा था। बस, शोर से खुद को काटने की एक कोशिश थी। उसे ट्रेन पकड़नी थी—जयपुर जाने वाली इंटरसिटी। पहली नौकरी, पहली पोस्टिंग, और पहली बार दिल्ली छोड़ना। भीतर कुछ हल्का सा डर भी था और थोड़ा गर्व भी। आसपास लोग भागदौड़ कर रहे थे,…
-
ঈশান দত্ত পর্ব ১: জানলার ধারে বসে নিউ জলপাইগুড়ির শালবন ঘেরা রেল কোয়ার্টার পাড়ার ঠিক পেছনে ছিল এক পুরনো ইংরেজ আমলের স্কুল—”নিউ জলপাইগুড়ি বয়েজ হাই স্কুল”। সেই স্কুলের দশম শ্রেণির ‘বি’ সেকশনের শেষ বেঞ্চে বসত পাঁচজন—সোহম, তন্ময়, রিমঝিম, অরিত্র আর সঞ্জনা। সবার মধ্যে কিছুটা যেন ছন্দে গাঁথা বন্ধুত্ব ছিল, আর তার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল প্রেম, অভিমান আর একটা কাঁচা উত্তেজনা। সোহম আর তন্ময়—শৈশবের বন্ধু। একসঙ্গে হিউম্যানিটিজ নিয়েছে। ক্লাসে সবসময় তৃতীয় বা চতুর্থ রোল নম্বরেই থাকে, কিন্তু পড়াশোনায় তেমন মন নেই। সোহমের চোখের কোণ সবসময় সঞ্জনাকে খোঁজে, আর তন্ময় সেটা জানলেও কিছু বলে না। তন্ময়ের মন পড়ে থাকে নীল আকাশে, সেও…
-
সুস্মিতা লাহা পর্ব ১: জানালার ধারে বৃষ্টিটা সন্ধ্যা ছ’টার পর থেকেই নেমেছে, একটানা। জানালার কাঁচে ছোট ছোট ফোঁটা গলে পড়ছে, আর তৃষা একমনে তাকিয়ে আছে বাইরে। ফ্ল্যাটটা নিস্তব্ধ, অন্ধকারে ঢেকে গেছে। ঘরের ভেতরে হালকা হলুদ আলো জ্বলছে, কিন্তু তাতে মন ভরে না আজকাল। ঘড়িতে সাতটা পঁচিশ। অফিস থেকে ফেরার ট্রেনটা আজও মিস করেছে অমিত—এটা আর অবাক করে না তৃষাকে। বরং সে ধরে নিয়েছে, এসএমএসটা কখন আসবে, কখন শুনবে “আজ একটু দেরি হবে”—সে তো জানা কথাই। তৃষা জানে কাজ নয়, কাজের নামে অনন্যা। অমিতের সহকর্মী, ঝকঝকে স্মার্ট, নিখুঁত ঠোঁটের হাসি আর স্মোকি চোখের মেয়ে। সে মেয়েটাকে কখনো দেখেনি, শুধু অনুভব করেছে…
-
অভিজিৎ হাজৰিকা পর্ব ১ ধৰাপাত শিখা শেষ কৰোতেই নীলমণি চকু ওপৰলৈ তুলি খিৰিকিৰ বাহিৰে চাই থাকিল। কলেজৰ পৰা আহি চিৰিকিয়া ধুৱাঁ উঠে চাহৰ কাপ এটা লৈ তেওঁ ওলাইছিলে বাৰাণ্ডালৈ। সদায়ৰ দৰে আজি পূব দিশৰ হালধীয়া পোহৰে তেওঁৰ কপালত পৰিছিল, যেন কোনো এজন সৰু ল’ৰাই ৰং তুলিকাৰে তেওঁৰ মুখত আলফুলে নেৰাই দিছে। আজিও চৌদিশে চুপচাপ, কেৱল মুকলি গৰম বতাহ আৰু একেটা চিন্তাৰ শব্দ—ইমান দিন হ’ল, আকাশ সেউজীয়া কিয় নহ’ল? আকাশটো সেউজীয়া নহ’ল কিয় বুলি তেওঁ ভাবি থাকোঁতেই ফোনখন ভাইব্ৰেট কৰি উঠিল। স্ক্ৰিনত এখন নাম পোহৰ পেলাই উঠিল—”ঋষৱ কলিং…” কিবা এটা ভিতৰত টিপ খাই উঠিল। তিনিদিন ধৰি কথা নাই। কথা নহয় মানেই…
-
প্রীতম ১ শিয়ালদহ স্টেশনের বিকেলের চেনা ব্যস্ততা। প্ল্যাটফর্ম নম্বর পাঁচে লোকাল ট্রেন এসে দাঁড়ালে যে শব্দটা ওঠে—লোকের হাঁটার, announcements-এর কণ্ঠস্বর, ভ্যাপসা গরমে বাতাসের কম্পন—সেইসব কৌশিকের কাছে নতুন কিছু নয়। গত ছয় মাস ধরে, রোজ এই সময়েই, সে দাঁড়ায় একই জায়গায়—একটা পুরনো চায়ের দোকানের পাশের হলুদ রঙের খুঁটির সামনে। তার রুটিন প্রায় যন্ত্রের মতো: অফিস থেকে বেরিয়ে ট্রাম ধরে স্টেশন, তারপর সেই নির্দিষ্ট কোচে উঠে বাড়ি ফেরা। কিন্তু আজ কৌশিকের মন একটু অস্থির। সে ঠিক জানে না কেন। হয়তো কারণ, গত তিন দিন ধরে সে যার মুখ খুঁজছিল, সেই মেয়েটিকে দেখতে পাচ্ছে না। মেয়েটির নাম জানে না কৌশিক। তারা কোনোদিন কথাও…
-
পর্ব ১ আনন্দবাজারের শেষ পাতায় ছোট একটা বিজ্ঞাপন ছিল—“থিয়েটার ওয়ার্কশপ: কেউ যদি মঞ্চের আলোয় হাঁটতে চান, আসুন। বয়স, পেশা, অভিজ্ঞতা—সব এক পাশে সরিয়ে রাখুন।” রুদ্রর চোখে পড়েছিল বিজ্ঞাপনটা এক শনিবারের সকালে, যখন সে অফিস যাওয়ার আগেই হাঁপিয়ে উঠছিল জীবনের নিয়মে বাঁধা পড়ে। কর্পোরেট অফিসের কাঁচের জানালা দিয়ে সে প্রতিদিন শহরটাকে দেখে, কিন্তু তাতে কিছুই দেখা হয় না। ফাইল, মিটিং, টার্গেট—সব কিছুর মধ্যে কোথাও যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিল। নাটকের সাথে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না, কিন্তু শব্দটা ‘চরিত্র’ যেন কেমন করে তার গায়ে লেগে গিয়েছিল। নিজের চরিত্রটা কেমন, সেটাই সে বুঝতে পারছিল না। ওয়ার্কশপের প্রথম দিন ছিল রবিবার। গলফ গ্রিনের একটা…
-
কৌস্তভ রায়চৌধুরী সকালের আলোর মতো প্রতি শুক্রবার বিকেলে যোধপুর পার্কের একটু ভিতরের দিকে যে কোচিং সেন্টারটা, সেখানে একদল অভিভাবক এসে জড়ো হন। ঠিক চারটের দিকে একটা চাপা ব্যস্ততা ছড়িয়ে পড়ে — স্কুলব্যাগে ঠাসা স্বপ্ন, টিফিনের শেষটুকু গন্ধ, মায়েদের তাড়াহুড়ো করা চোখ, বাবাদের ফোনে নিমগ্ন মুখ। আমি অরিত্র, প্রতি শুক্রবারের মতোই আমার ছেলে অর্ককে নিয়ে এসেছি ক্লাসে বসাতে। আজকের দিনটা আলাদা ছিল না, আবার ছিলও। সেই প্রথম দেখেছিলাম তাকে। একটা হালকা ধূসর রঙের তাঁতের শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, চোখে মাটি ছোঁয়া দৃষ্টি। এমনভাবে দাঁড়ানো, যেন তিনি কারও জন্যে অপেক্ষা করছেন না—তবু অপেক্ষা তাঁর চারপাশে ছায়ার মতো জড়িয়ে। আমি সেদিনই প্রথম লক্ষ…
-
অঙ্কুর বিশ্বাস বৃষ্টির দিনে দেখা কলকাতার আকাশটায় সেই বিকেলটা যেন ভেজা ক্যানভাস হয়ে ছিল। মেঘে ঢাকা আকাশ, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, আর একরাশ ধোঁয়াটে আলো—তাতে শহরটা কিছুটা ক্লান্ত, কিছুটা স্বপ্নালু লাগছিল। কলেজের ফটকের বাইরে, ছাতাহীন অনুরাধা হাঁটছিল ধীরে ধীরে। সোনালি সালোয়ারটা হাঁটু পর্যন্ত ভিজে গিয়েছে, চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালের ওপর নেমে এসেছে। সে তাড়াহুড়ো করছিল না। বৃষ্টি আর স্মৃতির মিশেলে একটা অদ্ভুত আবেশ ছিল তার মধ্যে। সে হাঁটছিল ঠিক সেই সময়, এক অচেনা কণ্ঠস্বর তাকে থামিয়ে দিল। “তুমি অনুরাধা?” কণ্ঠটা ভদ্র, কিন্তু আত্মবিশ্বাসী। মুখ ঘুরিয়ে দেখল, এক ছেলেকে। হাতে ক্যামেরা, চোখে গোল ফ্রেমের চশমা, কাঁধে একটা ছোট ব্যাগ। তার মুখটা একেবারে পরিচিত…