সৌরদীপ দত্ত পর্ব ১: আলোয় ভেসে ওঠে সাদা-কালো কলকাতার উত্তর দিকের এক অচেনা লাইব্রেরি—“জ্ঞানসাগর পাঠাগার”—এখন কেউ বিশেষ আসে না। একসময় বইপ্রেমিকদের আশ্রয় ছিল এই জায়গা, এখন সেখানে দিনের শেষে শুধু একটাই প্রাণী দেখা যায়—সত্যব্রত রায়। বছর বাহাত্তরের এই বৃদ্ধ লাইব্রেরিয়ান প্রতিদিন সকাল দশটায় দরজা খোলেন, সাড়ে ছটায় বন্ধ করেন, আর মাঝে মাঝে ঘুম ভাঙে কোনো পুরনো বইয়ের হেঁচকি কাশিতে। লাইব্রেরির পেছনের ঘরে তাঁর নিজের সাম্রাজ্য—দেয়ালে সিনেমার পোস্টার, একটা কুয়াশা ধরা রেডিও, আর মাঝখানে কাঠের টেবিলে রাখা এক পুরনো প্রজেক্টর, যার গায়ে লেখা—“Bell & Howell – Silent Series”। এই প্রজেক্টরটিই ছিল সত্যব্রতের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু। বহু বছর আগে কলেজের থিসিস করতে…
-
-
শ্যামল রায় পর্ব ১: শেষ প্রদর্শনের আগে পূর্ব মেদিনীপুরের একটা ছোট্ট গ্রাম—ধনঞ্জয়চক। গাছপালা ঘেরা, ধুলো মাখা পথ, আর বিকেলের শেষে চায়ের দোকানে গমগমে আড্ডা। সেই গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা টালির ঘর, চারপাশে জঙ্গল গজিয়ে উঠেছে, জানলার ধারে একটা কাঠের তাক। তাকের ওপর সারি সারি মুখোশ—রাবণের, হনুমানের, গরুড়ের, রাক্ষসের, বাঘের, মহিষাসুরের। এবং একটা মুখোশ—সাদামাটা, ফ্যাকাশে, যার এক চোখ সামান্য খুঁত আছে। এই মুখোশটা হাতে নিয়ে বসে আছেন সদানন্দ বাউরী। বয়স আশির কাছাকাছি, গায়ে পাটবস্ত্রের ফেটানো ফতুয়া, মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি। বহুরূপী জীবনের শেষ অধ্যায়ে দাঁড়িয়ে সদানন্দ, মনস্থির করেছেন—এবছর মহালয়ার আগের দিন, তিনি শেষবার মঞ্চে উঠবেন। কিন্তু ব্যাপারটা কেবল একটা অভিনয় নয়। এই…