• Bangla - হাস্যকৌতুক

    অফিসের কাহিনি

    শুভময় ব্যানার্জী প্রথম পর্ব – বোর্ডের বুদ্ধি কলকাতার গরম দুপুর। ট্রামে চেপে, বাস ধরে, নানারকম বাহন পাল্টে অবশেষে অফিসে ঢোকার সময়টা প্রায় দুপুর গড়িয়ে যায়। অফিসে ঢুকেই বিমলবাবু নিজের কপালে ঘাম মুছে চেয়ার টেনে বসলেন। বসের চোখ তখন লাল টকটকে, যেন মশারির ভেতর আটকে পড়া মশা। —“বিমল, আবার দেরি?” বিমল হেসে বলল, —“স্যার, এবার কিন্তু দোষ আমার নয়। রাস্তায় বড়ো বোর্ডে লেখা ছিল—‘Slow: School Ahead’। আমি তো ভদ্রলোক, নিয়ম মানতেই হবে! তাই দাঁড়িয়ে থাকলাম যতক্ষণ না স্কুল ছুটি হলো।” অফিস একেবারে ফেটে পড়ল হাসিতে। পিয়ন হেসে চেয়ার ধরে বসেছে, টাইপিস্টের হাত কীবোর্ডে থেমে গেছে, আর পাশের টেবিলের শীলা দি হাসতে…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    ঠাকুমার কুকুর–কাণ্ড

    উপাসনা ব্যানার্জী আমাদের ঠাকুমা বড়ই দাপুটে মহিলা। আশেপাশের সবাই তাকে “হেডমাস্টার ঠাকুমা” বলে ডাকে। কারণ, তার কথার জোর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের থেকেও বেশি। সকালবেলা কার ঘরে কে দেরি করে উঠলো, কে দাঁত মাজলো না, কে লুকিয়ে কচুরি খেয়ে ফেললো—সব খবর তার নখদর্পণে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ঠাকুমা নতুন কুকুর “ভোলানাথ” বাড়িতে এনেছেন। শুনতে শান্তশিষ্ট মনে হলেও ভোলানাথ আসলে একেবারে দস্যি। ঠাকুমার সামনে সে নরম ভদ্রলোকের মতো বসে থাকে, লেজ নাড়ায়, কিন্তু ঠাকুমা উল্টোদিকে মুখ ফেরালেই, গামছা টেনে নেয়, ভাতের হাঁড়ি উল্টে দেয়, আর পাড়ার বাচ্চাদের জুতো চুরি করে পালায়। একদিন সকালে ঠাকুমা কাকিমাকে বলে দিলেন— “আজ থেকে ভোলানাথকে আমি…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    ঠাকুমার টিকটক

    ঋজু সেন ঠাকুমা ও ‘ShortyShorts’-এর প্রথম সাক্ষাৎ কলকাতার বালিগঞ্জে পুরনো বনেদি দোতলা বাড়ি, ছাদের কোণে একটা নারকেল গাছ, দেওয়ালে ফাটল, আর উঠোনে ঝাঁপিয়ে পড়া হিবিসকাস ফুল। বাড়িটার বয়স প্রায় একশো। আর তার একজন স্থায়ী বাসিন্দা—শৈলজা বসু, ওরফে ‘ঠাকুমা’। বয়স ৮২, চোখে চশমা, মুখে হাঁ করা চমকানো অভিব্যক্তি প্রায় সর্বক্ষণ। কিন্তু তিনি হাঁটেন সোজা, শাড়ি পরেন রঙিন—তুলসী পাতার মতো সবুজ, চেরি ফুলের মতো গোলাপি। ঠাকুমা সারাদিন খবরের কাগজ পড়েন, টিভি দেখে রান্নার শো, আর মাঝে মাঝে শঙ্খ বাজিয়ে জানান দেন তিনি এখন “যোগা” করছেন। কিন্তু এই পরিপাটি নিয়মমাফিক জীবনে হঠাৎ একদিন হট্টগোল লাগে। নাতি অভ্র, ক্লাস টুয়েলভে পড়ে, তার ঘরে বসে…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    ভূতের প্রেমে চার পাগল

    রক্তিম জানা বাড়িটা একটু বেশিই ঠান্ডা বিকেল পাঁচটা বাজতে না বাজতেই চারজন দাঁড়িয়ে ছিল পাণ্ডুগ্রামের পুরনো ‘সিংহবাড়ি’র সামনে। সাদা রঙের ছোপ ছোপ দেয়াল, বড় বড় কাঠের জানালা, আর ছাদের কিনারা দিয়ে বেয়ে নামা আগাছা দেখে মনে হচ্ছিল বাড়িটা কাঁদছে। “এই বাড়িতেই না তোর মামাবাড়ি ছিল, বুদু?”— প্রশ্ন করল চঞ্চল, যার চশমার কাঁচের পেছন থেকে সবসময় একটা অবিশ্বাস ফুটে বেরোয়। “হ্যাঁ রে… কিন্তু তোরা জানিস না, আমার মামারা কেন এই বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় চলে গেল,”— গলায় অদ্ভুত এক থমথমে ভাব এনে বলল বুদু। “ভূতের গল্প করিস না,”— বলল তোতন, যার বুকের মধ্যে বাঘ থাকলেও পোকা দেখলে চেঁচিয়ে উঠে। “ভূত হলে তো…

  • Bangla - ভূতের গল্প - হাস্যকৌতুক

    ভূতের বউ আর ব্রহ্মচারী বটগাছ

    বিমলেশ বাগচী পর্ব ১: বটগাছের ব্রত ও ভবেশের বুদ্ধি ধলেশ্বরীপুর নামটা শুনলেই হাসি পায় অনেকের। কারণ এই গ্রামে আছে এমন এক বটগাছ, যেটা নাকি ব্রহ্মচারী। গ্রামের সব গুঞ্জন আর গপ্পে এই বটগাছ নিয়ে—কে নাকি এর ছায়ায় বসে প্রেম করল, আর কে নাকি ভয়ে প্যান্ট ভিজিয়ে পালাল। এই বটগাছকে কেন্দ্র করেই গল্পের শুরু। এই গাছটা গ্রামের উত্তর প্রান্তে, কাঁঠালতলা মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে। বিশাল, পুরনো, আর তার গায়ে মাটির সিন্দুর আর মাটি-গোলাপ দিয়ে সাজানো একটা ছোট্ট বেদি। সবাই জানে, এখানে প্রেম করা মানে কেলেঙ্কারি নিশ্চিত! গাঁয়ের ছেলেরা বলে, “এই গাছের নিচে বসে প্রেম করতে গেলেই ল্যাংটো ছাগল পেছনে ধাওয়া করে!” কেউ…