ঋত্বিক দত্ত পার্ট ১: যাত্রার প্রথম সকাল শহরের ভিড়ভাট্টা থেকে সমুদ্রের দিকে যাত্রা শুরু করার মুহূর্তটাই যেন এক অদ্ভুত মুক্তি। কলকাতা বিমানবন্দরের জানালার কাচের ওপার থেকে ভোরবেলা আকাশের নীলচে আলো যখন সোনালি হতে শুরু করছিল, তখন আমার বুকের ভেতর অদ্ভুত এক উৎকণ্ঠা কাজ করছিল। দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখেছিলাম আন্দামান যাওয়া হবে—কেবল হাভলক বা নীল দ্বীপের সমুদ্রস্নান নয়, আমি চেয়েছিলাম খুঁজে বের করতে অজানা এক কোণ, যেখানে পর্যটকদের কোলাহল নেই, নেই রঙিন বিজ্ঞাপনমাখা হোটেলের ছায়া, আছে কেবল নির্জনতার ঘন অরণ্য আর সমুদ্রের শ্বাস। বিমান মেঘ কাটিয়ে নামতে শুরু করতেই জানালার বাইরে নীলের উপর সবুজের ছোপ দেখা গেল। দূর থেকে যেন অসংখ্য…
-
-
অমিতাভ বসু পর্ব ১: জলের ওপারে শব্দ ১৮৯৭ সালের জানুয়ারি মাস। আন্দামানের বাতাসে তখনও রৌদ্রের ছায়া। দূর থেকে দেখা যায় সেলুলার জেলের লোহা-দেওয়া গঠন, যেটা যেন কোনো বিশাল মাছের কঙ্কালের মতো পড়ে আছে দ্বীপের বুক চিরে। লম্বা বারান্দা, ভয়ানক নির্জনতা, আর তিনতলার ফাঁসির মঞ্চ—সব মিলিয়ে এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের এক ঠান্ডা নরক। এই সেলুলার জেলেই এসে পৌঁছেছিল এক কবি—নাম হেমচন্দ্র সেন। কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে সাহিত্য পড়াতেন, বিপ্লবী ভাবনার জন্যে যুবকদের মধ্যে ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। তবে তাঁর বিপ্লবের অস্ত্র ছিল আগুন নয়—কবিতা। তাঁর লেখা ‘রক্তঝরা বসন্ত’ কবিতা ব্রিটিশদের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায়, কারণ তিনি তাতে এক বদ্ধঘরের ছাদ ভেদ করে বেরিয়ে আসতে…