স্নিগ্ধা চক্রবর্তী এক ভোরের আলো ধীরে ধীরে রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ঢুকে মীরার সিঁথির পাশে খসে পড়া চুলে লেগে যায়। চায়ের কাপে দুধ গরম হওয়ার শব্দ, প্রেসার কুকারের শিস, আর পাশের ঘর থেকে ভেসে আসা অরুণের গম্ভীর কাশি—সব মিলিয়ে ঘরটা যেন এক অদৃশ্য নিয়মে চলছে। অথচ এই শব্দের ভেতরে মীরার মনটা থাকে অন্য কোথাও। হাতের কাজ চলতে থাকে অভ্যাসের মতো, কিন্তু মাথার ভেতর এক ফাঁকা গহ্বর—যেন দিনের শুরু মানেই আরেকটা একই রকম দিনের পুনরাবৃত্তি। সবার জন্য সকালের নাস্তা সাজিয়ে দেওয়ার পরও মনে হয়, কেউ যেন তাকে দেখে না, শোনে না। মীরার কাছে সংসারটা এখন যেন এক অদৃশ্য খাঁচা, যেখানে সে নিজেই…
-
-
ঋতা মিত্র বাড়ির পেছনের ছোট উঠোনটাতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল মেয়েটা। নাম তার মেঘলা, কিন্তু আকাশে তখন মেঘ ছিল না—ছিল একরাশ বিস্ময় আর প্রশ্ন। পাড়ার লোকেরা বলে, “এই মেয়েটা নাকি ছেলেদের মতো, এত পড়াশোনা কিসের?” মা মাঝে মাঝে কাঁদে—চুপচাপ, রান্নাঘরের কোণে, যেন হাঁড়ির ফুটতে থাকা ডালের গন্ধে কান্নার লোনা গন্ধ মিশে যায়। মেঘলা পড়ে বারো ক্লাসে। ছোট শহরের এই স্কুলে এমনিতেই মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাতে গোনা। তার মধ্যে মেঘলা—যার চোখে রয়েছে খবরের কাগজের শিরোনাম, রিপোর্টারের মাইক ধরা হাত আর সত্যি বলার সাহস। সে চায় সাংবাদিক হতে। এ শহরে সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্নটা প্রায় অপরাধের মতো। শিক্ষক বলেছে, “তুই যদি ম্যাডাম…