সৌরদীপ মুখোপাধ্যায় পর্ব ১ : যাত্রার প্রথম সকাল ভোর পাঁচটা নাগাদ কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর–এর চতুর্থ নম্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হাতে শক্ত করে ধরা ছিল এক পুরনো খাতা—যে খাতায় আমি এতদিন যাবৎ সব ভ্রমণকাহিনি লিখে রেখেছি। শৈশব থেকেই সমুদ্রের প্রতি আমার অদ্ভুত টান, অথচ যতবার সমুদ্র দেখেছি, তা সবই দীঘা কিংবা পুরীর মতো চেনা জায়গায়। এবার প্রথমবার আন্দামান। নামটা শুনলেই আমার কানে বাজে নীল জলের ফিসফিস, ঝড়ের রাতে ইংরেজ জাহাজের ঘণ্টাধ্বনি আর অন্ধকার সেলের ভেতরে হারিয়ে যাওয়া বন্দিদের আর্তনাদ। চেক-ইন শেষে বিমানে উঠে বুকের ভেতর কেমন ঢিপঢিপ শব্দ হচ্ছিল। আমার পাশের সিটে ছিলেন এক বৃদ্ধ দম্পতি—দু’জনেই পোর্ট…
-
-
অমিতাভ বসু পর্ব ১: জলের ওপারে শব্দ ১৮৯৭ সালের জানুয়ারি মাস। আন্দামানের বাতাসে তখনও রৌদ্রের ছায়া। দূর থেকে দেখা যায় সেলুলার জেলের লোহা-দেওয়া গঠন, যেটা যেন কোনো বিশাল মাছের কঙ্কালের মতো পড়ে আছে দ্বীপের বুক চিরে। লম্বা বারান্দা, ভয়ানক নির্জনতা, আর তিনতলার ফাঁসির মঞ্চ—সব মিলিয়ে এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের এক ঠান্ডা নরক। এই সেলুলার জেলেই এসে পৌঁছেছিল এক কবি—নাম হেমচন্দ্র সেন। কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে সাহিত্য পড়াতেন, বিপ্লবী ভাবনার জন্যে যুবকদের মধ্যে ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। তবে তাঁর বিপ্লবের অস্ত্র ছিল আগুন নয়—কবিতা। তাঁর লেখা ‘রক্তঝরা বসন্ত’ কবিতা ব্রিটিশদের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায়, কারণ তিনি তাতে এক বদ্ধঘরের ছাদ ভেদ করে বেরিয়ে আসতে…