অদ্রিতা সেন পর্ব ১ : নীরবতার প্রথম ফাটল কলকাতার উত্তর শহরের পুরনো বাড়ি। উঁচু ছাদের ঘর, লাল ইটের দেওয়াল, বারান্দায় শুকোতে দেওয়া সাদা শাড়ি আর মাটির টবে মানিকজোড় তুলসী গাছ—সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত নস্টালজিয়ার ছবি। এই বাড়ির ভেতরেই বাস করে মৈত্র পরিবার। বড়ো ছেলে অনিরুদ্ধ মৈত্র, তার স্ত্রী অনন্যা আর ছোটো ভাই অরিত্র। গল্প শুরু হয় এখান থেকেই। অরিত্র, পেশায় তরুণ অধ্যাপক। শহরের নামী কলেজে ইতিহাস পড়ান তিনি। মেধাবী, সুদর্শন, আর ভেতরে ভেতরে সংবেদনশীল। বাবা-মা চলে যাওয়ার পর বড়ো ভাই-ই তার অভিভাবক। পরিবারের সকলেই তাকে নিয়ে গর্বিত। অন্যদিকে অনন্যা—অরিত্রর কাকিমা। বয়সে সামান্য বড়ো, কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে…
-
-
ঋদ্ধিমান চক্রবর্তী পর্ব ১: চিঠির খামে কাঞ্চনজঙ্ঘা পুজোর ঠিক আগের দিন সকালে মিঠির চিঠিখানা হাতে আসে—একটা পুরোনো বাদামি খামে, অদ্ভুত সুন্দর হস্তাক্ষরে লেখা ‘মিতালী সেন’ নামটা ঠিক তার ছেলেবেলার ডাকনামের পাশে। তবে এই ডাকনামটা আজ বহু বছর কেউ ডাকে না, এমনকি নিজের কাছেও মিঠি অনেককাল হয়ে গেছে মিসেস মিতালী বসু। কিন্তু চিঠিটা খুলতেই মনে হল, সময় যেন উল্টোপথে হাঁটতে শুরু করেছে। প্রেরক: প্রমথেশ চৌধুরী। ঠিকানা: সেন ভিলা, হিলকার্ট রোড, দার্জিলিং। তারিখ: ১৯৮৬। মিঠি শিউরে উঠেছিল। ১৯৮৬? তা হলে এই চিঠিটা এখন তার হাতে পৌঁছেছে ৩৯ বছর পরে? চিঠির ভাঁজে আরও ছিল একটি ছোট স্কেচ—হাতের আঁকা, পেনসিলে আঁকা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া, এক…
-
অনিন্দ্য দাশগুপ্ত পর্ব ১: যে মানুষটি নিখোঁজ পুজোর ঠিক আগের বিকেল, আকাশে হালকা সোনালি রোদ। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার এক ফ্ল্যাটবাড়িতে চার তলায় হঠাৎ কোলাহল—”নয়নবাবু কোথায়? ফোন ধরছেন না!” ফ্ল্যাটের দারোয়ান রবীন, পাশের ফ্ল্যাটের মৌসুমীদির সঙ্গে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন মুখে তাকিয়ে আছে। নয়ন ঘোষাল, ৬৮ বছর বয়স, অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কেরানি। প্রতিদিন সকালে বারান্দায় বসে চা খেয়ে ‘আনন্দবাজার’ পড়তেন। ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে হতো না, নাতির পড়াশোনা তদারকি করতে হতো না, এমনকিছুই ছিল না তাঁর জীবনজুড়ে। স্ত্রী সুপর্ণা গতবছর চলে গেছেন—স্তব্ধতা ও অভ্যাসের মাঝখানে একা দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি যেন হঠাৎ নেই। “ফোন বন্ধ, দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ নয়। মানে উনি নিজের…