সায়ন চক্রবর্তী রবিবারের বিকেলটা এই গ্রামে যেন আলাদা আলোয় ঝলমল করে, সূর্যটা নদীর পাড়ে গড়িয়ে যেতে যেতে এমন এক নরম রঙ ছড়িয়ে দেয় যে হাঁসফাঁস করা সপ্তাহের ধুলোও মুহূর্তে থিতিয়ে আসে, আর সেই সময়েই শুরু হয় স্কুলবাড়ির বারান্দায় গানের আসর; হেডস্যার নিজের হাতে টাঙানো লণ্ঠনের নিচে মাদুর পাতা, ধুলো ধূসর কলাপাতায় রাখা গরম চা, কাঁচের গেলাসে তুলে দেওয়া মুড়ি-চানা, সরল অথচ শৌখিন এই আড্ডাটাই সৌম্যের সপ্তাহজুড়ে বেঁচে থাকার প্রাণবায়ু, যেহেতু সে জানে সোমবার থেকে আবার অঙ্কের ক-খ, ইংরেজির সরল বাক্য, ছাত্রদের টিফিনের গন্ধ আর খাতা পরীক্ষা—এই সব মিলিয়ে চার দেওয়ালের নীরসতা তাকে চেপে ধরবে; অথচ আজকের রবিবারটা অন্য রকম, কারণ…
-
-
অর্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায় পর্ব ১: প্রথম বার্তা সৌম্য মুখার্জী প্রথম দিন স্কুলে ঢুকেই বুঝেছিল, এই স্কুলটা একটু অন্যরকম। শান্তিনিকেতনের সীমানা ছুঁয়ে থাকা এই পুরনো হাইস্কুলটির নাম ‘চৈতন্য বিদ্যামন্দির’, তবে গেটের ওপরে নামটা আধফাটা, আর নিচে একটা ছেঁড়া ব্যানারে আজও ঝুলছে গত বছরের নববর্ষের শুভেচ্ছা। স্কুলের বিল্ডিংটা অনেক পুরোনো, লাল ইটের দেয়াল আর কড়ি-পাতার ছাদ। অথচ, ভেতরের পরিবেশে একটা অদ্ভুত স্তব্ধতা। যেন কেউ কথা বলতে ভয় পায়। যেন স্কুলটা চুপচাপ নিঃশব্দে কোন কিছু লুকিয়ে রাখছে। সৌম্য বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স করে সদ্য চাকরিতে ঢুকেছে, ইংরেজি পড়ায়। নিজের মধ্যেই গম্ভীর স্বভাব, কিন্তু আজ সকাল থেকেই বুকের ভেতর টানটান অস্বস্তি। প্রিন্সিপাল রুমে বসে থাকা মাঝবয়সী…