• Bangla - কল্পবিজ্ঞান

    মনের ভ্রমণকারী

    প্ৰসূন মন্ডল প্রফেসর অরিন্দমের ল্যাবের ভেতরের পরিবেশ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ল্যাবটি আধুনিক যন্ত্রপাতি, আলোকসজ্জা এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক নথি দিয়ে ভরা, যা যেন এক রহস্যময় জায়গার মতো মনে হয়। প্রফেসরের আবিষ্কৃত নতুন হেডসেটটি একটি চমকপ্রদ যন্ত্র, যার ধাতব কাঠামো এবং নরম প্যাডিং মানুষের মাথার সঙ্গে মিলিয়ে যায়। আলোছায়ার খেলা এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের শব্দ এক সঙ্গে মিলিয়ে এই ল্যাবকে জীবন্ত করে তোলে। অনির্বাণ, মীরা এবং রোহিত ল্যাবের মধ্যে প্রবেশ করতেই প্রথমে বিমোহিত হয়। তাদের চোখে ল্যাবটি এক অনন্য জগৎ মনে হয়, যেখানে বিজ্ঞান এবং কল্পনার মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটেছে। প্রফেসর অরিন্দম নিজে একজন উদ্ভাবক এবং শিক্ষাবিদ, যার চোখে উদ্দীপনা ও গভীর…

  • Bangla - ছোটদের গল্প

    সার্কাসের নতুন সদস্য

    রূপালী মিত্র ১ অজানা শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে প্রধান চরিত্রটি একটি নতুন জীবন এবং নতুন সম্ভাবনার সামনে নিজেকে খুঁজে পায়। শহরের বুকে হাঁটতে হাঁটতে সে বিভিন্ন রাস্তার গন্ধ, মানুষের ব্যস্ততা, এবং অচেনা কোলাহলের মাঝে ডুবে যায়। প্রতিটি দোকান, প্রতিটি রাস্তার কোণা যেন তাকে বলে, এখানে কিছু বিশেষ আছে, কিছু অজানা অপেক্ষা করছে। মূল চরিত্রটি নিজেকে হঠাৎ এক ধরণের স্নিগ্ধ উত্তেজনার মধ্যে পায়। হালকা লাজুক হলেও চোখে ভর করে কৌতূহল। সে লক্ষ্য করে, শহরের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট ব্যানার, রঙিন বাতাসে উড়তে থাকা ফ্ল্যাগ, আর দূরে একটি বড় তাঁবুর ছায়া—সবই যেন তাকে আহ্বান করছে। তার পদচারণার সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছে শহরের…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    কৃষ্ণনগরের পুতুলবাড়ির গুপ্তধন

    ঋতব্রত সেন [১] জুলাইয়ের এক মেঘলা দুপুরে মিহির তার ঠাকুরদার পুরনো কাঠের আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, যেখান থেকে ধুলোমাখা বই আর ভাঙা পুতুলের গন্ধ ভেসে আসছিল। ঠাকুরদা, বিশ্বেশ্বর পাল, এককালে ইতিহাসের শিক্ষক ছিলেন—তার চোখে এখনও সেই অতীতের আলো জ্বলে। মিহির ছুটির দিনে তার কাছ থেকে নানা কাহিনি শুনতে ভালোবাসত, বিশেষ করে কৃষ্ণনগরের পুতুলশিল্প ও রাজাদের গোপন ইতিহাস। সেই দিন, যখন বৃষ্টি বাইরের দিগন্ত ঘিরে রেখেছিল, ঠাকুরদা হঠাৎ এক গল্প শুরু করলেন—একটা পরিত্যক্ত বাড়ির, যেটি সবাই ‘পুতুলবাড়ি’ বলে চিনত। সেই বাড়ি নাকি এক কালে ছিল রামানন্দ পাল নামের এক পুতুলশিল্পীর, যিনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের দরবারে কাজ করতেন। কথিত আছে, রাজপরিবারের গুপ্তধন…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    নবান্নর আগের রাত

    অর্ঘ্য দত্ত আগমন বিকেলের আলো তখনো জমে আছে গাছের পাতায়, যখন শুভম দাস ট্রেন থেকে নামল। ছোট্ট একটা স্টেশন—নাম ‘মাহেশচর’। আশেপাশে ঝিম ধরা সবুজ মাঠ, দূরে একটা নদীর রেখা দেখা যায়, আর ঝাঁক বেঁধে উড়ছে সাদা বক। শুভম শহরের ছেলে, কলকাতার এক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। পিএইচডির বিষয় “লোকজ কৃষিপদ্ধতি ও তার সামাজিক প্রভাব”, আর সেই সূত্রেই আজ এই প্রত্যন্ত জায়গায় তার পদার্পণ। এতটা ভিতরে ঢুকতে হবে, তা আগে আন্দাজ করেনি। স্থানীয় এক শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচিত হয়েছে গ্রামের নাম—গোপীনাথপুর, আর সেই গ্রামের পাশেই একটি রহস্যময় ধানখেত, যেখানে প্রতি বছর নবান্নর আগের রাতে কেউ পা রাখে না। স্টেশন থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেই…

  • Bangla - নারীবিষয়ক গল্প

    ছিন্নমস্তার প্রলয়

    ঊর্মি পাল অধ্যায় ১: “অশ্রু ও বিষ” অমৃতা এক কঠিন সন্ধ্যায় ঘরের জানালার কপাট বন্ধ করে বসেছিল। তার চারপাশে সন্ধ্যার অন্ধকার পসরানো শুরু করেছে, কিন্তু তার মনে এখনও মায়ার মতো সাদা আলোয় একটা বিষণ্ণ রূপের প্রতিফলন। এক সময় সে স্বপ্ন দেখেছিল, কী সুন্দর হবে তার জীবন! কিন্তু এখন তার সামনে শুধু একটা দীর্ঘ অন্ধকার পথ, যেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব নয়। তার জীবনের সবকিছুই যেন একটা অদৃশ্য বেষ্টনীতে আটকে গেছে, পরিবারের চাহিদা, তার স্বামী রোহিতের প্রত্যাশা, তার সন্তান মাহির স্নেহের আগ্রহ—এসব কিছু মিলে এক ভারী বোঝা হয়ে গেছে। রোহিত একজন সফল ব্যবসায়ী, কিন্তু তার সাফল্যের পেছনে সে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে।…

  • Bangla - সামাজিক গল্প

    ছোট্ট সোনালী সেতু

    প্রিয়া সরকার গ্রামের মাঝে যখন একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব উঠলো, তখন তা সাধারণত গ্রামবাসীদের মধ্যে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হিসেবে ভাবা হয়। সেতু হবে দুই গ্রামের মধ্যে, একটি ছোট গ্রাম, অপরটি বড়। দুটো গ্রামের মানুষদের মাঝে দূরত্ব ছিল শুধু শারীরিক নয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিকও। গ্রামগুলো একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এবং একে অপরকে প্রায় কখনোই বুঝতে পারত না। আফতাব রহমান, এক তরুণ নেতা, জানত এই সেতুর মাধ্যমে শুধু দূরত্বের অভাবই পূর্ণ হবে না, বরং দুই গ্রামের মধ্যে এক শক্তিশালী সামাজিক ঐক্যও প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু, গ্রামবাসীরা জানত না যে, তাদের মধ্যে এক দীর্ঘকাল ধরে থাকা বিভেদ, সমাজের ঐতিহ্য এবং শ্রেণীভেদ এমন…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    গহনপুরের গুপ্তধন

    অর্ণব গুহ অধ্যায় ১: হারিয়ে যাওয়া নোটবই গহনপুর – নামটায় এক রকম রহস্য আছে। বাঁকুড়া জেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামটার ইতিহাস কতদূর ছড়িয়ে, কেউ তা স্পষ্ট বলতে পারে না। জঙ্গলে ঘেরা, পিচঢালা রাস্তা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই এই গহনপুর। গ্রামের মধ্যে এখনও কিছু টালির ছাউনি ঘর, একটা ভাঙা জমিদার বাড়ি আর একটা প্রাচীন শিবমন্দির—কোনটা কবে তৈরি, সঠিক কেউ জানে না। সেই গহনপুরেই পৌঁছল তিনজন বন্ধু—সুদীপ্ত, ঐন্দ্রিলা আর বাপি। কলকাতার স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব এখন কাজের চাপে একটু আলগা হলেও, এই রহস্যময় আমন্ত্রণ তাদের আবার এক করল। “এই বাড়িটা তো একেবারে হন্টেড সিনেমার মতো!”—বাপি গাড়ি থেকে নামতে নামতে বলে। ঐন্দ্রিলা একটু…