জয় সাহা গলির মেয়ে সহেলীর জন্ম এক ছোট্ট শহরের এক অজপাড়া গলিতে। সে ছিল এক সাধারণ মেয়ে, যেখানে সমাজের চোখে তার কোন বিশেষ গুরুত্ব ছিল না। তার জীবন ছিল একেবারে নিরস, রুটিনমাফিক। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার কাজ ছিল ঘরের কাজ, মা-বাবার সহায়তা, ছোট ভাই-বোনদের দেখাশোনা, আর মাঝে মধ্যে স্কুলে যাওয়া। তবে, সহেলী কখনোই এই নির্ধারিত জীবনটিকে সঙ্গী করতে পারেনি। তার মন ছুটতে চেয়েছিল দূরে, তার চোখ ছিল নতুন দিগন্তে, যেখানে জীবনের অনেক সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সে জানত, সে তার ছোট্ট গলির মধ্যেই বন্দী। সেই গলির প্রাচীরের বাইরের পৃথিবী তার জন্য এক কল্পনা মাত্র। সহেলী ছিল খুব চুপচাপ। একা থাকলেই…
-
-
রূপালী রায় ১ গ্রামের এক কোণায় এক প্রাচীন মেলা বসেছিল, যেখানে সারা গ্রাম ও আশেপাশের অঞ্চলের লোকজন একত্রিত হয়েছিল। বাতাসে মিষ্টি রঙিন কাগজের ঝলকানি আর মিষ্টির গন্ধ মিশে গিয়েছিল। চারপাশে হইহই করে চলছিল হাসি-আলাপ, এবং কিছু কিছু ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে বলছিল তাদের যাদু-গল্প। এখানে ছিল কিছু পুরনো কাঠের খেলনা, ঝুলন্ত লাইট, আর সুরম্য ছোট ছোট দোকান। নির্বাণ, যার জীবনে এমন অনুষ্ঠান ছিল কিছুটা বিরক্তির, সে মেলাতে আসতে বাধ্য হয়েছিল। তার পিতা, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, আশা করেছিলেন যে, তার ছেলে গ্রামের রাজনৈতিক গুরুদের সঙ্গে মেলামেশা করবে। কিন্তু নির্বাণ একা ছিল, এবং তার মনে কিছুই ছিল না, শুধু ছিল এক অজানা আকর্ষণ…
-
ঐশী চৌধুরী জঙ্গলের ডাক মেঘমালা বসাকের বয়স পনেরো। কিন্তু তার চোখে যেন হাজার বছরের পুরোনো বৃক্ষের জ্ঞান আর ভবিষ্যতের বাতাসের গন্ধ। সবুজডাঙা গ্রামের এই দশম শ্রেণির ছাত্রী বরাবরই একটু অন্যরকম। পুতুল খেলায় তার মন ছিল না, বরং মাঠে ঘুরে ঘাসের গন্ধ নিতে, পাখিদের ডাক শুনতে আর গাছের ছায়ায় বসে গল্পের বই পড়তে ভালোবাসত। গ্রামের পাশেই একটুকরো জঙ্গল, যেখানে ছোট্ট খালটা বয়ে গেছে বাঁক নিয়ে। সেই খালের পাড়ে বসে মেঘমালা ভাবত, পৃথিবী যদি সবসময় এমন সবুজ থাকত! কিন্তু সবুজডাঙার সবুজ আর আগের মতো নেই। নতুন রাস্তা তৈরির নাম করে পঞ্চায়েত কয়েক মাস আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জঙ্গলের একাংশ কেটে ফেলা হবে। গাছগুলোতে…