ঋত্বিক বসু পর্ব ১: কুয়াশার ভিতর হারিয়ে যাওয়া মানুষ শীতের সকাল। কলকাতার উত্তর শহরতলির এক পুরনো গলির ভেতর অদ্ভুত কুয়াশা জমে আছে। লাল ইটের বাড়ি, কাঠের দরজা, ম্লান আলো—মনে হয় যেন সময় এখানে থমকে গেছে। গলির মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এক টালির ছাদওয়ালা পুরনো ডাকঘর। এই ডাকঘরের সামনে থেকেই নিখোঁজ হয়েছিল মানুষটা—সুদীপ্ত মল্লিক। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে, পেশায় কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক। ঘটনাটা ঘটেছিল মাত্র দু’দিন আগে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি প্রতিদিনের মতো চিঠি পাঠাতে এসেছিলেন ডাকঘরে। তখনো কুয়াশা কাটেনি। তিনি ভেতরে ঢুকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কয়েক মিনিট পর তাকে দেখা গেল না। আর বেরোলেন না তিনি। সবাই ভেবেছিল, হয়তো অন্য দরজা দিয়ে…
-
-
সন্দীপন ধর খামে মোড়া নীরবতা রমেশচন্দ্র বসু বসে আছেন জানালার ধারে রাখা সেই পুরনো বেতের চেয়ারে। জানালার গরাদের ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়া বিকেলের আলো তার রুপোলি চুলে খেলে যাচ্ছে। মাথার ঠিক পাশেই একটা ছোট কাঠের তাক, সেখানে রাখা তার স্ত্রীর একটা ছবি — মেঘলা শাড়ি, মৃদু হাসি, কপালে ছোট্ট টিপ। নাম ছিল তার — কাবেরী। আজ অনেকদিন পর আবার পোস্টম্যান এসেছিল। লাল-হলুদ ইউনিফর্ম, কাঁধে ব্যাগ। সে বলল, “বসুবাবু, আপনার পেনশনের শেষ চেকটা এসেছে।” রমেশচন্দ্র ধীরে হাত বাড়িয়ে খামটা নিলেন। যেন মৃদু এক স্নেহে ছুঁলেন। এই খামে শুধু টাকা নেই, আছে একটা দীর্ঘ জীবনের সমাপ্তি ঘোষণা। অফিসের শেষ বেতন মাসেরও বেশি…