স্নেহাশিষ রায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল হচ্ছে। জাদরেল রোদের আভা ছড়িয়ে পড়েছে শহরের স্টেশনে। গরম বাতাসে ছিন্ন কাপড়ের মতো ওড়ানো যাচ্ছে না কোনো মন। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ৩২ নম্বর লোকাল ট্রেনের কামরায় যেন আগুনের ঢেউ বইছে। সেই উত্তপ্ত কামরার মধ্যে দিয়ে হাঁটছে দশ বছরের একটি ছেলে—হাতে একগুচ্ছ তালপাতার পাখা। ছোট্ট শরীরে ঘাম জমে রেখার মতো গড়িয়ে পড়ছে, তবে চোখে কোনো ক্লান্তি নেই। তার ঠোঁটে এক মৃদু ডাক—“তালপাতার পাখা নিন… গরমে আরাম… পাঁচ টাকায় একখানা…”। প্রতিটি যাত্রীকে দেখে সে যেন কল্পনা করে, কে কিনবে, কে ফিরিয়ে দেবে। কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয়, কেউ তিরস্কার করে—“যাও যাও, বিরক্ত করো না।” তবু সে এগিয়ে যায়।…
-
-
সুব্রত দাশগুপ্ত ১ রিমার চোখে এই শহর ছিল এক স্বপ্নময় চিত্রপট — বড় বড় বিল্ডিং, আলোর রোশনাই, গাড়ির একটানা শব্দ, আর ছাদের ওপর নীল আকাশে উড়তে থাকা সাদা পায়রার মতো সুখ। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভাঙতে সময় লাগেনি। মায়ের মৃত্যুর পরে মামা তাকে শহরে নিয়ে আসে, একটা “ভালো” বাড়িতে কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। বয়স দশ হলেও, রিমা জানত কাজ বলতে কী — খাটুনি, হাঁটু পর্যন্ত ঝাঁপ দেওয়া, বকুনি খাওয়া আর সবশেষে নিঃশ্বাস ফেলার সময়টুকুতে ঘুমিয়ে পড়া। প্রথম দিন শহরে এসে মালবিকার বাড়িটা দেখে তার মনে হয়েছিল, এ যেন এক রাজপ্রাসাদ। চারপাশে ঝকঝকে কার্পেট, অচেনা গন্ধে ভরা ঘর, দেয়ালে টাঙানো ছবি আর…