ঐশী মুখার্জি ট্রেনটা আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ছিল পুরুলিয়ার ছোট্ট স্টেশনে। জানালার ফাঁক দিয়ে লালচে ধুলো হাওয়ায় উড়ছিল, যেন মাটির গন্ধে মাখানো কোনো অদৃশ্য ধোঁয়া। রিনি ব্যাগটা আঁকড়ে ধরে বসেছিল জানালার ধারে। কলকাতার চাকরিজীবনের ব্যস্ত, ধাতব আওয়াজে ভরা দিনগুলো থেকে বেরিয়ে সে এসেছিল, ঠিক এক মাসের জন্য। নিজের ইচ্ছেতেই চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে, বন্ধুদের কাছে এখনো সে সিদ্ধান্তটা অযৌক্তিক, অনেকটা পাগলামির মতো শোনায়। কিন্তু রিনির মনে হচ্ছিল, এই লালমাটি-ঢাকা পথই তাকে নতুন কিছু শিখিয়ে দেবে। স্টেশনটা ছোট, নিস্তব্ধ, বাইরে নামতেই সাইকেলের ঘন্টাধ্বনি আর হকারের ডাক একসাথে কানে বাজলো। রোদটা ঝলমল করছিল, তবুও হাওয়ায় একটা শুষ্ক ঠান্ডা মিশে ছিল। রিনি বুকের ভেতর হঠাৎ…
-
-
Aparna Basu অধ্যায় ১: স্বপ্নের বীজ শীতলডাঙ্গা গ্রামের সকালগুলো খুব বেশি বদলায় না, বছরের পর বছর ধরে একই ছন্দে বয়ে যায় এখানকার সময়। মাটির রাস্তা বেয়ে গরুর গাড়ির চাকা আঁকিবুঁকি কেটে চলে, ঝুপড়ি ঘরের চালার ফাঁক দিয়ে প্রথম রোদের আলো মাটির উঠোনে ছড়িয়ে পড়ে, আর বনে-পাহাড়ে শাল-পলাশের গন্ধ মিশে যায় হাওয়ার সাথে। সেই হাওয়াতে ভেসে আসে পাখিদের ডাক, যেটা প্রতিদিন ঘুম ভাঙায় গ্রামের মানুষদের। শীতলডাঙ্গার শেষপ্রান্তে, বাঁশঝাড়ের পাশে এক মাটির ঘর, খড়ের ছাউনি দেওয়া। সেই ঘরে থাকে মুক্তা, বারো বছরের কিশোরী মেয়ে, যার চোখে আছে বিশাল স্বপ্নের জগৎ, যদিও সেই স্বপ্ন এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মায়ের ডাকেই তার সকাল শুরু…