• Bangla - প্রেমের গল্প

    নিভৃতে চিরন্তনী

    দেবিকা দাশগুপ্ত গ্রাম বাংলার এক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পবিত্রতা মিশে রয়েছে। রিয়া, গ্রাম্য সংস্কৃতির মাঝেই বেড়ে ওঠা এক তরুণী, যার চোখে মিশে আছে নির্ভরতা ও বেঁচে থাকার লড়াই। সে সমাজের প্রথা, নিয়ম-কানুন ও প্রত্যাশার সীমানার মধ্যে বন্দী। প্রতিদিন সকালে মাঠে হাঁটতে যাওয়া থেকে শুরু করে পরিবারের কাজ সেরে নেয়া, সবটাই যেন তার জীবনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তার মন সে নিয়মের বাইরে, সে জানে নিজের ভেতরে আরও গভীর কিছু আছে, যেটা সে নিজে বুঝতে পারেনি। রিয়ার পরিবার তার ভবিষ্যত গড়ার জন্য এক সম্ভ্রান্ত যুবকের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেছে। কিন্তু রিয়ার মন তার চাওয়া স্বপ্নের পথে হাঁটতে…

  • Bangla - প্রেমের গল্প

    চাঁদের আলোয়

    দিব্যরূপ বক্সী সূর্যাস্তের আগে, আকাশের কোণে ধীরে ধীরে ছায়া নেমে আসে, আর সমুদ্রের নীল জলরাশির উপর লাল-সোনালী রঙের খেলা শুরু হয়। সেই রঙ যেন সমস্ত আকাশকে আঁকাবুঁকি দিয়ে মাখিয়ে দেয়, আর সমুদ্রের ঢেউগুলো নরমভাবে সৈকতের বালির উপর আছড়ে পড়ে, যেন পৃথিবী নিজেই তাদের স্বাগত জানাচ্ছে। দম্পতি প্রথমবার এই নিরিবিলি সৈকতে আসে, এবং নতুনত্বের উত্তেজনা তাদের হৃৎপিণ্ডে স্পন্দন জাগিয়ে তোলে। তারা একে অপরের দিকে তাকায়, চোখে চোখ রেখে হালকা হেসে ওঠে, আর মৃদু বাতাসে একে অপরের চুল ছুঁয়ে যায়। সমুদ্রের নোনা হাওয়া তাদের মুখে মৃদু ছোঁয়া দেয়, যেন প্রকৃতিই তাদের মাঝে একটি অদৃশ্য বন্ধন স্থাপন করছে। তাদের পদক্ষেপে বালির নরম দোলান,…

  • Bangla - প্রেমের গল্প

    শরতের শরীরী চাঁদ

    মৌপ্রিয়া ঘোষ ১ কলেজের সেমিনার লাইব্রেরি তখন অর্ধেক ফাঁকা, বিকেলের ঘোলাটে আলো জানালার কাঁচে ঠেকেছে। সবার চোখ বইয়ে, কিন্তু অনিন্দ্যের চোখ স্থির হয়ে গিয়েছিল ডানদিকের চতুর্থ সারিতে বসা মেয়েটির দিকে। মেয়েটি তার সামনে রাখা বইয়ে মুখ গুঁজে থাকলেও তার ঠোঁটে ভেসে উঠছিল এক অচেনা সুর—গলা নিচু, কিন্তু কানে লেগে থাকার মতো। “এই পথ যদি না শেষ হয়…”—এই গানের লাইনটাই তখন হাওয়ায় মিশছিল। অনিন্দ্য একটু অবাক হয়েছিল। এতখানি নিঃশব্দতার ভিতরেও এত স্পষ্টভাবে সুর বেজে উঠতে পারে? সে জানত না মেয়েটির নাম, জানত না তার বিষয়ে কিছুই, শুধু চোখের পলক ফেলে দেখতে শুরু করেছিল। মেয়েটির গায়ের শাড়ির রঙ ছিল ইটের মতো লাল,…

  • Bangla - প্রেমের গল্প

    চাঁদের নিচে নিঃশব্দ শরীর

    ঋতুপর্ণা দাশগুপ্ত এক ট্রেনের জানালা দিয়ে ভোরের আলো ঢুকে পড়েছিল দু’জনের নীরব কামনাভেজা মনোভারতিতে। শহরের ঘুমন্ত রাস্তাগুলো পেছনে ফেলে আদ্রিত ও ঋদ্ধিমা একটানা তাকিয়ে ছিল বাইরে, কুয়াশায় মোড়া মাঠ, তালগাছ, আর দূরের গ্রামের ঘরগুলোর দিকে। আদ্রিত জানালার ধারে বসে, চোখে একটা অদ্ভুত প্রশান্তি নিয়ে, হালকা হাসি খেলিয়ে বলেছিল, “তুই জানিস, শহরের ভিড়ে আমরা যেটা খুঁজি, সেটা আসলে কোথাও বাইরের নয়—ভেতরের।” ঋদ্ধিমা তার পাশে হেলান দিয়ে চোখ বুজে ছিল, তার বুকের সঙ্গে ঠেকেছিল ব্যাগের চেইনে ঝুলে থাকা একটা ছোট্ট রুদ্রাক্ষ। সে কিছু বলেনি, শুধু আদ্রিতের হাত ধরে রেখেছিল নরমভাবে, যেন শব্দহীন বিশ্বাস। তাদের মধ্যে এমনিতেই বেশি কথা হয় না—একটা চাহনি, একটুখানি…

  • Bangla - প্রেমের গল্প

    তাহাদের দেখা হয়েছিল মাঘের শীতে

    ঊর্মি দাশগুপ্ত মাঘ মাসের এক কুয়াশাভরা সকালে বাস থেকে নামল সুদীপ। বোলপুরের পরে আরও চল্লিশ মিনিটের রাস্তা ধরে পৌঁছেছে নদীপারের ছোট্ট গ্রাম ‘চণ্ডীপুর’। ঠান্ডার কামড়ে কাঁপছিল চারদিক, ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির রোদ উঠলেও গলে না। হালকা বাদামি রঙের মাফলার জড়িয়ে সে তাকিয়ে রইল চারপাশে—বাঁশঝাড়, সরু মাটির পথ, আর দূরে গাঁয়ের মাঠে কিছু কাক খুঁটে বেড়াচ্ছে। মোহন কাকার সাইকেলের টুং টাং শব্দে সে ফিরে এল বাস্তবে। “এই তো! পৌছেও গেলে,” মোহন কাকা হাসলেন। মোটা চাদর জড়ানো শরীর আর রুক্ষ গলা, তবে চেহারায় যত্নের ছাপ স্পষ্ট। কলেজে পড়ার সময় সুদীপ একবার এক সেমিনারে তাঁর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল, তখনই বলেছিলেন—”তুই যদি গ্রাম…

  • Bangla - ছোটদের গল্প

    স্টারডাস্ট ক্যাফে

    সায়ন দত্ত সেই বর্ষার দুপুরটা ছিল অবিশ্বাস্যরকম নীরব, যেন কলকাতার ক্যাম্পাস চত্বরও আজ একটু হেঁসে বলছে, “চুপ করে থাকো, কেউ আসছে…”। তন্ময় দত্ত সেদিন হোস্টেল থেকে বেরিয়েছিল একটা ছেঁড়া ছাতা হাতে, আর নিজের কল্পনার ভারে ভারাক্রান্ত মনে। ক্লাস বাতিল, ফোনে নেট নেই, আর মাথার ভেতর ঘুরছে পুরনো অর্ধেক লেখা কবিতার লাইন, “ভিজে রাস্তায় হারিয়ে গেল যে পদচিহ্ন, সে কি আবার ফিরবে?” সে হেঁটে যাচ্ছিল মূল ফটকের দিকে, কিন্তু জানত না সে হাঁটছে অন্য এক জগতে প্রবেশের পথে। কলেজের পিছনের সরু গলিটা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার চোখে পড়ে একটি কাঠের সাইনবোর্ড – হাতের লেখা, কিন্তু যেন একশো বছর আগের কালি…