সৌরভ ভৌমিক দোতলা বাংলোটির রং ছিল ছাই ধূসর, যেন রোদে পোড়া কোনও পুরোনো অ্যালবাম থেকে উঠে এসেছে। জানালার কাচগুলো ঘোলাটে, কাঠের পাল্লায় পোকায় ধরা ক্ষতচিহ্ন। হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে গাড়ির শব্দ থেমে গেলে মৃদু হাওয়া বইছিল পুরনো বাগানের ঘাসের গায়ে। গাড়ির দরজা খুলে নামলেন সায়ন আর রীতা। নবদম্পতি, শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে খানিক দূরে এক নিঃসঙ্গ বাংলোয় নতুন শুরু করতে এসেছেন। “এমন একটা জায়গা তুমি ঠিক করো কীভাবে?”—রীতার গলায় মৃদু অসন্তোষ। সায়নের হাসিটা ধীর, ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত প্রশান্তি—”শান্তি চেয়েছিলে, না? এখানে ট্রাফিক নেই, শব্দ নেই, কিচ্ছু নেই।” রীতা মুখ ফেরালেও বাড়ির দিকে চাইল—তাদের নতুন বাসা। ব্রোকার বলেছিল, বাড়িটা আগে এক ইংরেজ…
-
-
স্নেহা মুখার্জী অধ্যায় ১: আগমন পৃথিবীতে কিছু আগমন নিতান্তই ঘটনাক্রম নয়, বরং পূর্বনির্ধারিত ছক, যা কারও অজান্তে বুনে চলে ভাগ্যের জাল। অরিন্দম মুখার্জির শান্তিনিকেতনে আগমন তেমনই এক আগমন। আপাতদৃষ্টিতে গবেষণার জন্য শান্ত, নির্জন পরিবেশে এসে লোকসাহিত্য নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে এসেছেন তিনি, কিন্তু বাস্তবে—এই যাত্রা ছিল অতীতের একটি অসমাপ্ত অধ্যায়ের টান। এক মেঘলা শরতের দুপুর। খোলা রিকশায় বসে অরিন্দম শান্তিনিকেতনের দিকে এগোচ্ছে। রাস্তার ধারে লালমাটির পথ, পাশে শাল-পলাশের অরণ্য, মাঝে মাঝে কাঁঠালের গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে। আকাশে রোদ-আলোর সঙ্গে মিশে আছে হালকা কুয়াশা, যেন প্রকৃতিই কিছু লুকিয়ে রেখেছে। রিকশাওয়ালা জিজ্ঞাসা করল, — “আপনার বাড়ি কোথায়, বাবু?” — “কলকাতা। তবে এখন…