অন্তরা মান্না নীলমালা রাজপ্রাসাদের অন্তঃপুরে দাঁড়িয়ে আছে, চারপাশে বিশাল সোনার ঝলমলে আলো, রত্নজড়িত আসবাবপত্র, সোনার কাঁটা-পালিশ করা দরজা, কিন্তু সবকিছুই যেন তার হৃদয়ে খাঁড়া স্রোতের মতো বোঝাপড়া ছিনিয়ে নেয়। ভেতরের নিস্তব্ধতা, সিলিং থেকে ঝুলানো ক্রিস্টালের ঝুমকাগুলি হালকা হেলায় নড়ে ওঠার সময় যে মৃদু আওয়াজ করে, তা নীলমালার কানে এক অদ্ভুত সংকেতের মতো বাজে। সে দেখছে—তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, তার বিয়ে, তার নিজস্ব মতামতের বাইরে কেউ ঠিক করছে। কেবল পারিবারিক রীতি, রাজকীয় শর্তাবলী এবং সামাজিক প্রত্যাশার ঘূর্ণি তাকে চারপাশ থেকে চেপে ধরে। নীলমালার চোখে জল আসে, কিন্তু সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, যেন কোনো অসহায় পাখি খাঁচার ভিতরে নিজের পাখনা ঝাপটাচ্ছে।…
-
-
সিঞ্জিনী চক্রবর্তী আগমন নদিয়ার চন্দ্রপুর গ্রামটা সময়ের দিক থেকে যেন অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। শহরের তুলনায় এখানে সময় যেন একটু ধীরে চলে। দিনগুলো এখানে বড় শান্ত, নিঃসঙ্গ; সন্ধ্যা নামতেই ঘরবাড়ির দরজা জানলা বন্ধ হয়ে যায়, কুকুরের ডাকে চমকে ওঠে মানুষ। গ্রামটা যেন নিজেই একটা দীর্ঘশ্বাস। পাকা রাস্তা নেই, মোবাইল টাওয়ারের সংকেত আসে-যায়। চায়ের দোকানে বিকেলের আড্ডাও যেন কেমন নিরুত্তাপ। আর সন্ধ্যে নামলেই চারপাশে এমন এক নীরবতা নামে, যেন শব্দ করাটাই পাপ। এই চন্দ্রপুর গ্রামেই আসে রক্তিম সেন—কলকাতার যুবক, ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। সে আসছে তার মামাবাড়িতে, গরমের ছুটির জন্য। পুরনো দিনের মতো চিঠি বা ফোন করে নয়, হঠাৎ করেই একদিন চেপে…