সুদীপ্ত ভৌমিক ১ কমনার দিনগুলি যেন একটি নিরব, নিঃশব্দ নদীর মতো ধীরে ধীরে চলতে থাকে, যেখানে কোন রঙ বা উত্তেজনার স্পন্দন নেই। সকাল শুরু হয়, সূর্যের প্রথম আলো তার বেডরুমের জানালার কাচে প্রতিফলিত হয়ে ধূসর ছায়া ফেলতে থাকে। ঘরের ভিতরে সমস্ত কিছু নিখুঁতভাবে সাজানো—সাদা পর্দা, মসৃণ কাঠের ফ্লোর, এবং ফ্রেমে ঝুলানো স্বল্পাঙ্গী তাজা ফুলের পিক। কিন্তু এই নিখুঁত সাজানো পরিবেশের ভেতর কমনার হৃদয় যেন শূন্য। তার স্বামী দিনের বেশির ভাগ সময় অফিসের ব্যস্ততায় এবং ব্যবসার জটিলতায় ডুবে থাকেন, ফলে কমনা একা থেকে যায় সংসারের সকল দায়িত্বে। নাস্তার জন্য চা বানানো, ঘর পরিষ্কার করা, পোষ্য বিড়ালকে খাওয়ানো—এই রুটিনের মধ্যে দিনটি এগিয়ে…
-
-
গ্রামের নাম ঘোলশ্বরীপুর। নদিয়ার বিস্তীর্ণ প্রান্তরে, পদ্মা নদীর এক পুরনো শাখার ধারে গড়ে ওঠা এই গ্রাম বহু শতাব্দীর পুরোনো। শস্যে ভরা মাঠ, ঘন বাঁশঝাড়, আর ভাঙন–খাওয়া কাদামাটি মেশানো গলিঘুপচি পথ দিয়ে ছড়িয়ে আছে মানুষের বসতি। দিনের বেলা এখানকার জীবন ঠিক যেমন সরল, তেমনি হাসিখুশি; কিন্তু রাত নামলেই এক ভিন্ন ছায়া নেমে আসে এই জনপদে। গ্রামের সবচেয়ে বড় রহস্য হল মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল তেঁতুলগাছ। গ্রামের বৃদ্ধেরা বলেন, এই গাছ অন্তত চারশো বছরের পুরোনো। এর ছায়ার নীচে একসময় পুঁথি পাঠ হতো, বউভাতের ভোজ বসত, আবার মহামারীর সময় কবরও দেওয়া হয়েছে এরই তলায়। কিন্তু যত পুরোনো স্মৃতি তেঁতুলগাছ ঘিরে রয়েছে, ততই…