অবন্তি দে অধ্যায় ১: শহরের ছায়া ভবিষ্যতের কলকাতা যেন এক অদ্ভুত দ্বন্দ্বে দাঁড়িয়ে আছে। আকাশচুম্বী টাওয়ার, নীয়ন আলোয় ঝলমল করা রাস্তাঘাট, উড়ন্ত গাড়ির শব্দে ভরা আকাশ—সব মিলিয়ে এক মহাজাগতিক প্রযুক্তির ঝলক শহরটিকে নতুন যুগে পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু এই উজ্জ্বলতার মাঝেই অন্ধকার গলিগুলো যেন আরও গভীর হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির আলো যত বেড়েছে, ততই মানুষের ভেতরের ভয়, শূন্যতা আর অচেনা অন্ধকার ঘনীভূত হয়েছে। সেই অন্ধকারেই ঘাপটি মেরে আছে এক রহস্যময় অপরাধী, যে অস্ত্র কিংবা বন্দুক ব্যবহার করে না, বরং মানুষের মস্তিষ্কে ঢুকে নিয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ—স্মৃতি। আজকাল কলকাতার রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো মানুষদের চোখে একটা আতঙ্ক স্থায়ী ছাপ ফেলে যাচ্ছে, কারণ কেউ…
-
-
অনিন্দ্য মিত্র কলকাতার রাতের নিস্তব্ধতা সবসময়ই এক অদ্ভুত রকমের সৌন্দর্য বহন করে—কোথাও ল্যাম্পপোস্টের ম্লান আলো, কোথাও অটোর হর্নের টুংটাং, আবার কোথাও গলির মোড়ে ভাজাভুজির গন্ধ মিশে থাকা বাতাস। কিন্তু সেই রাতে শহরের হৃদস্পন্দন যেন থমকে গিয়েছিল এক ভয়ঙ্কর দৃশ্যের সামনে। সঞ্জয়, একজন সাধারণ ট্যাক্সিচালক, রাত সাড়ে দশটার দিকে তার গাড়ি নিয়ে ধর্মতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী খুঁজছিল। দিনের চাপে তার চোখে লালচে আভা, শরীর ক্লান্ত, কিন্তু টাকার অভাবে আরও কিছু সময় গাড়ি চালানোর লোভ সামলাতে পারল না। ঠিক তখনই সে দেখতে পেল, রাস্তার অপর পাশে এক অচেনা লোক হঠাৎ করে ধপাস করে পড়ে গেল। প্রথমে ভেবেছিল লোকটা হয়তো মদ খেয়ে অজ্ঞান…
-
রাহুল রায় অধ্যায় ১: শহরের ব্যস্ততম ব্যবসায়িক মহল যে মানুষটির ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবিত ছিল, তিনি হলেন শশাঙ্ক বসু। সত্তরের কোঠায় পৌঁছেও তাঁর প্রভাবশালী উপস্থিতি এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা সবাইকে মুগ্ধ করত। তিনি ছিলেন রিয়েল এস্টেট, জুয়েলারি থেকে শুরু করে বিদেশি আমদানি-রপ্তানির মতো নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এক ধনকুবের। তাঁর অফিসগুলো শহরের প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কোণে ছড়িয়ে ছিল, আর তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাজারের গতিপথ বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখত। কিন্তু ব্যবসায়িক সাফল্যের বাইরেও মানুষটি সম্পর্কে শহরের সাধারণ মানুষ ও প্রতিদ্বন্দ্বীরা খুব বেশি কিছু জানত না। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল এক রহস্য, এমনকি তাঁর পরিবারও তাঁকে কখনও সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারেনি। শশাঙ্ক বসু কখনও মদ,…
-
১ কলকাতার এক শীতল সন্ধ্যা। হাওয়ার ঝাপটায় জানালার কাঁচ খানিকটা কেঁপে ওঠে, বাইরের রাস্তার আলো ঘরের অন্ধকারকে ভেদ করতে পারে না। ছোট্ট টেবিলের ওপর খোলা ল্যাপটপে ইশিতা সেনের চোখ আটকে আছে। প্রথম বর্ষের কলেজছাত্রী সে, ক্লাস শেষ করে সাধারণত রাতেই পড়াশোনা আর সোশ্যাল মিডিয়ার খোলা জানালায় হারিয়ে যায়। তার একঘেয়ে দিনযাপনকে একটু প্রাণবন্ত করে রাখত প্রিয় বান্ধবী সুহানি দত্ত, কিন্তু সেই মেয়েটিই এখন আর নেই। ঠিক এক বছর আগে, কলেজের হোস্টেল থেকে হঠাৎ উধাও হয়েছিল সুহানি, পরে খবর এলো রহস্যজনকভাবে মারা গেছে সে। পুলিশ বলেছিল আত্মহত্যা, কিন্তু সেই কথায় কখনোই বিশ্বাস করতে পারেনি ঈশিতা। বন্ধু হারানোর যন্ত্রণা আর অসমাপ্ত প্রশ্নের…