অভয় চক্রবর্তী অধ্যায় ১: পথের শুরু ট্রেনের জানালা দিয়ে তাকিয়েই প্রথম যে দৃশ্যটা ধরা দিল, তা হলো লালচে মাটির বিস্তার আর শালমহুয়ার গাছের সারি। কোলাহলমুক্ত ছোট্ট স্টেশন, যাত্রীদের ভিড়ও অদ্ভুতভাবে শান্ত—মনে হচ্ছিল কেউই তাড়াহুড়ো করছে না, যেন এখানে সময়ের গতি খানিকটা থেমে গেছে। ট্রেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই এক অনন্য আবহ আমাকে ঘিরে ধরল। শহরের দমচাপা পরিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে প্রথম নিঃশ্বাসেই বুঝলাম—এই জায়গার বাতাসেই অন্যরকম স্বাদ। রেলস্টেশন থেকে মাটির পথ ধরে হাঁটা শুরু করলাম। চারপাশের দৃশ্য যেন আমাকে বলছে, “তুমি এসে গেছো এক নতুন দুনিয়ায়।” পথের দুই পাশে পল্লীগ্রামের ছোঁয়া, কাঁচা ঘর, উঠোনে শীতলপাটি শুকোচ্ছে, কোথাও আবার মাটির কলসি…
-
-
অনিন্দিতা কর্মকার এক মেঘলা সেনগুপ্ত কলকাতার ভিড়ভাট্টার ভেতর থেকে ট্রেনে উঠে বসেছে শিলাইদহের উদ্দেশ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী সে, বয়স একুশ, চোখে অগণিত প্রশ্ন ও স্বপ্নের ভিড়। বইয়ের পাতায় পড়ে এসেছে রবীন্দ্রনাথের কথা, পদ্মার ধারে তাঁর কুঠিবাড়ির গল্প, কবিতার জন্মের রহস্য, কিন্তু আজ সে যেন সেই সব গল্পের ভিতর দিয়ে হেঁটে যাবে। ট্রেনের কামরায় বসে জানলার বাইরে তাকাতেই মেঘলার চোখে ধরা দিল অচেনা অথচ আপন গ্রামবাংলার চিত্র। দূর থেকে দেখা যায় বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, সবুজের ঢেউ, কাঁচা রাস্তা ধরে হাঁটা কৃষক, শাড়ি পরে মাথায় ঘড়া তোলা নারী—সব যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে। কলকাতার ব্যস্ত শহর থেকে আসা মেঘলার কাছে এই দৃশ্য যেন…