অর্জুন দে ১ গ্রামের প্রান্তে অবস্থিত খোশরুরাজ সরকারের পুরনো বাড়িটি বছরের পর বছর আগের সেই ভাঙাচোরা মেঝে আর ছাদের গাছের ফাঁকফোকর দিয়েই তার কাহিনী বলে চলে। আজও বাড়ির দেয়ালে সোনালী দিনের স্মৃতিগুলো উজ্জ্বল—তবে এখন যেন ম্লান হয়ে এসেছে সময়ের ধুলোয়। খোশরুরাজ, যে এককালে গ্রামের মঞ্চের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী ছিলেন, এখন নির্জনতার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন। সাদা ধোঁড়া চুল আর গভীর রেখাচিত্র তার মুখে সময়ের সাক্ষী, কিন্তু চোখে এখন শুধুই নিস্তব্ধতা। পুরোনো দিনের গান আর সুরের স্মৃতি তার হৃদয়ে বাজে বারবার, যেন এক পুরানো রেকর্ড প্লেয়ারের সিডির মতো। তার একাকীত্ব ঘিরে রেখেছে একটি গভীর শূন্যতা—তাঁর একমাত্র সন্তান অনেক বছর আগেই শহরে…
-
-
দেবায়ুধ পাল গাড়ি থামল কুঁয়োডাঙায় কুঁয়োডাঙা গ্রামের নামটা প্রথম শুনে মনে হয়েছিল কোথাও একটা গভীর কুয়ো আছে—শুধু গভীর না, এমন কিছু একটা যার দিকে তাকালেই গা ছমছম করে ওঠে। সুজয় যখন গাড়ি থামাল, তখন সন্ধে নামছে। পুরো গ্রাম যেন অন্ধকারের গায়ে চাদর মুড়িয়ে বসে আছে। অল্প আলোয় দেখে বোঝা গেল চারপাশে মাটির ঘর, তাল-খেজুর গাছ, আর একটাই পাকাবাড়ি—লাল ইটের একতলা, বন্ধ জানালায় কালো কাঁচ। ওটাই নাকি ‘ওদের’ বাড়ি। সুজয় কলকাতার একজন ছোটখাটো ইউটিউবার। নিজের চ্যানেল ‘ভূতুড়ে বাংলায়’ মাঝেমাঝেই চেনা-অচেনা ভৌতিক জায়গায় গিয়ে ভিডিও তোলে। আজ তার সঙ্গে এসেছে ক্যামেরাম্যান অলোক আর নতুন যুক্ত হওয়া সাউন্ড টেকনিশিয়ান রোহিনী। রোহিনী কিছুটা চুপচাপ…
-
সিঞ্জিনী চক্রবর্তী আগমন নদিয়ার চন্দ্রপুর গ্রামটা সময়ের দিক থেকে যেন অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। শহরের তুলনায় এখানে সময় যেন একটু ধীরে চলে। দিনগুলো এখানে বড় শান্ত, নিঃসঙ্গ; সন্ধ্যা নামতেই ঘরবাড়ির দরজা জানলা বন্ধ হয়ে যায়, কুকুরের ডাকে চমকে ওঠে মানুষ। গ্রামটা যেন নিজেই একটা দীর্ঘশ্বাস। পাকা রাস্তা নেই, মোবাইল টাওয়ারের সংকেত আসে-যায়। চায়ের দোকানে বিকেলের আড্ডাও যেন কেমন নিরুত্তাপ। আর সন্ধ্যে নামলেই চারপাশে এমন এক নীরবতা নামে, যেন শব্দ করাটাই পাপ। এই চন্দ্রপুর গ্রামেই আসে রক্তিম সেন—কলকাতার যুবক, ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। সে আসছে তার মামাবাড়িতে, গরমের ছুটির জন্য। পুরনো দিনের মতো চিঠি বা ফোন করে নয়, হঠাৎ করেই একদিন চেপে…