অর্ঘ্যদীপ চ্যাটার্জী এক শ্মশানের রাতের অন্ধকারে যে ভয়ঙ্কর নীরবতা ছড়িয়ে থাকে, সেটাই যেন কালিকেশ তান্ত্রিকের সাধনার উপযুক্ত আবাস। চাঁদের আলো নেই, আকাশে ছড়ানো মেঘে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা দিচ্ছে, আর সেই ক্ষণিক আলোকেই উন্মোচিত হচ্ছে পুড়ে যাওয়া কাঠ, ছাই, হাড়গোড়, আর সদ্য নির্বাপিত চিতার ধোঁয়া। মৃতদেহের গন্ধ তখনও বাতাসে ভাসছে, কুকুর আর শেয়ালের হিংস্র ডাক শ্মশানের চারদিক থেকে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিবেশের মাঝেই আগুনের সামনে বসে আছে কালিকেশ, গায়ে কেবল লাল রঙের কাপড়, কপালে সিঁদুরের টানা রেখা, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। তার চোখদুটো অদ্ভুত উন্মত্ততায় জ্বলছে, ঠোঁটে নিঃশব্দ মন্ত্রের আওয়াজ। মাঝে মাঝে তার কণ্ঠে ভেসে ওঠা ভৈরব মন্ত্রের গর্জন…
-
-
অভ্রনীল দত্ত পর্ব ১ – যাত্রা শুরু সকালবেলা কোলাহলমুখর শিয়ালদহ স্টেশনের ভিড়ের ভেতর দিয়ে যখন তারা সবাই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছল, তখনও কারও মাথায় ছায়ামাত্রও ছিল না কী অপেক্ষা করছে সামনে। কলকাতার এই পাঁচজন কলেজ–বন্ধু—অনিক, সুমিত, তন্ময়, দেবলীনা আর রুদ্র—দীর্ঘদিন পর আবার মিলে একসঙ্গে কোথাও বেরোচ্ছে। গন্তব্য সুন্দরবন। ভ্রমণের উদ্দেশ্য একটাই—দু–একদিন শহরের কোলাহল ভুলে প্রকৃতির নির্জন অরণ্যে কিছুটা সময় কাটানো, বাঘ দেখার ভাগ্য হলে আরও ভালো, আর সবার ওপরে একধরনের অদেখাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা। রুদ্র, যে দলের মধ্যে সবচেয়ে উচ্ছল, আগেই পরিকল্পনা করেছিল গোটা ট্রিপ। সে বলেছিল—“এইবার তো পুজোর ভিড় নেই, একেবারে নিস্তব্ধ জঙ্গলে গিয়ে আসব। কী রোমাঞ্চ বলো তো!” বাকিরা তার কথায়…
-
রজত মিত্র দূরপাল্লার লোকাল ট্রেনটা ধীরে ধীরে গ্রামের ছোট্ট স্টেশনে এসে থামল। বিকেলের নরম আলোয় প্ল্যাটফর্মটা যেন হালকা সোনালি ধুলোয় মোড়া। ট্রেন থেকে নেমে চারপাশের নিস্তব্ধতা অনুভব করতেই মোহনাদের কলকাতার কোলাহলের সঙ্গে একেবারে বিপরীত এক জগৎ মনে হল। হাতে ছোট্ট ট্রলিব্যাগ, আর কাঁধে স্লিংব্যাগ নিয়ে সে স্টেশনের গেট পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে এল। গ্রামের রাস্তা নির্জন, দু’পাশে শিউলি আর শালবনের সারি। দূরে দেখা যায়, ধূসর এক প্রাসাদসদৃশ বাড়ি, আকাশের নিচে একাকী দাঁড়িয়ে আছে—সেটাই রায়চৌধুরী বাড়ি। বাবার মুখে অনেক শুনেছে এ বাড়ির গল্প, কিন্তু বাস্তবে দেখে যেন বুকের ভিতরে অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল। অটোরিকশা চালক যখন ভাড়া নেওয়ার পর তার দিকে একবার…