• Bangla - তন্ত্র

    রুদ্রাক্ষের অভিশাপ

    অয়ন চক্রবর্তী পর্ব ১: উত্তরাধিকার কলকাতার ব্যস্ত জীবন থেকে অনেক দূরে, পুরোনো গ্রাম বাড়িটায় পা রাখতেই অর্কের মনে হল যেন সময় থমকে দাঁড়িয়ে আছে। চারদিক নিস্তব্ধ, কেবল বাতাসে খেজুরপাতার শোঁ-শোঁ শব্দ। অর্ক বহু বছর পর ফিরেছে এখানে—তার ঠাকুরদার মৃত্যুর খবর পেয়েই। ছোটবেলা কেটেছিল এই বাড়িতেই, তারপর বাবা-মায়ের সঙ্গে শহরে উঠে যাওয়া। ঠাকুরদা ছিলেন একেবারে গ্রামীণ মানুষ, কিন্তু তার চোখে একটা অদ্ভুত দীপ্তি ছিল, যেন তিনি অনেক অজানা কিছু জানতেন। বাড়ির ভেতর পা রাখতেই ধুলোমাখা গন্ধ নাকে এল। মাটির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে, সিঁড়িতে শেওলা জমেছে। কিন্তু ঠাকুরদার ঘরটা ছিল যেমন ছিল, তেমনই আছে। বাঁশের খাট, একপাশে বইয়ের তাক, আর পুরোনো কাঠের…

  • Bangla - তন্ত্র

    শবনৃত্য

    ঋত্বিক বসু পর্ব ১ শ্মশানের ধোঁয়া যেমন ধীরে ধীরে রাতের বাতাসে মিলিয়ে যায়, তেমনই গোপালচন্দ্রর জীবনও এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় মিশে গেছে। সে এই শ্মশানকর্তার কাজ করছে প্রায় পনেরো বছর। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত—কখনও কফিনে ঢাকা শরীর, কখনও শবযাত্রার সানাই, আবার কখনও হাহাকার করা আত্মীয়দের চোখের জলে ভিজে যাওয়া কাঠের চৌকি। তার কাছে সব যেন একই রকম। শ্মশান মানেই মৃত্যু, মৃত্যু মানেই চুপচাপ এক ছায়ার দিকে মিলিয়ে যাওয়া। কিন্তু সে রাতে কিছু যেন অন্যরকম ছিল। আগুন নিভে এসেছে, শেষ কাঠটুকু ছাইয়ে পরিণত হয়েছে। গোপালচন্দ্র বাঁশের ঝুড়ি হাতে গঙ্গার জলে ভিজিয়ে ছাই ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। চারদিক নির্জন, কেবল রাতের পেঁচার ডাক আর…

  • Bangla - তন্ত্র

    পঞ্চমন্ত্র

    ঋতব্রত চক্রবর্তী পর্ব ১ : স্বপ্নের শুরু রাতের নিষ্প্রভতা যেন লালচে ছাই হয়ে উঠে বসে আছে স্বপ্নের ভেতরে—একটা শ্মশান, পাঁচটি নিবিড় প্রদীপ, নিরাবেগ নদীর ধারে কাঁসার থালায় রাখা কালচে ধূলি, আর কোথাও থেকে ভেসে আসা অসম্পূর্ণ শব্দ: “হ্রীং… ক্রৌঁ… শৌঃ… ন—” তারপরই ফাঁকা, এমন এক ফাঁকা যা নিঃশব্দ নয়; অদৃশ্য কণ্ঠের ভাঙন-ধ্বনি সেখানে ঘণ্টার মতো পাক খেতে থাকে, মাটির নিচে চোরা জলের শব্দের মতো সরে যায়, আবার ফিরে আসে। সেই স্বপ্ন থেকে পাঁচজন পাঁচ জায়গায়, পাঁচটি শরীর ভিন্ন ভিন্ন ঘামে, একই আতঙ্কে জেগে উঠল—যেন কোনো অদেখা আঙুল তাদের বুকের ওপর অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে লিখে রেখে গেল একটি মাত্র বৃত্ত, যার ভিতরে…

  • Bangla - ভূতের গল্প - হাস্যকৌতুক

    ভূতের হাসি

    সঞ্জয় দে পর্ব ১: বাড়ির রহস্য অভিজিৎ ছিল ইতিহাসের ছাত্র। তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল পুরনো বাড়িগুলোর ইতিহাস খোঁজা, বিশেষত সেগুলোর যেগুলো সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে অথবা কেউ তাদের কাহিনী জানে না। একদিন, তার বন্ধু প্রীতম তাকে একটি পুরনো বাড়ির কথা জানায়, যে বাড়ি সম্পর্কে নানা গুজব ছড়িয়ে আছে। লোকজন বলে, এখানে অদ্ভুত হাসির শব্দ শোনা যায় এবং অনেক মানুষ এখানে হারিয়ে গেছে। সেই রাতের পর থেকেই বাড়িটির নাম তার মনের মধ্যে দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। অভিজিৎ ভেবেছিল, এই বাড়ির রহস্য উন্মোচন করতে পারলে তার গবেষণায় নতুন একটি দিক যোগ হবে। তাই এক সকালে, তার গবেষণার জন্যই সেদিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত…