• Assamese

    অগুৰি নদীৰ বোকা

    ইন্দ্ৰাণী ফুকন আকাশত মেঘ জমা হৈছিল, যেন সেই গাঁওখনৰ ওপৰত ওজনীয় এটি নিৰৱ অভিশাপ বগাই আছিল। দীৰ্ঘ দহ বছৰৰ পাছত পল্লবী ওভতি আহিছিল অগুৰিপাৰ গাঁৱলৈ—এটা সুপ্ত স্মৃতিৰ পাহাৰৰ তলৰ জীয়াই থকা দুখ-সুখৰ পাতনি খুলি লৈ। গুৱাহাটী বিশ্ববিদ্যালয়ত স্নাতকোত্তৰ শেষ কৰাৰ পিছত জোৰদাৰ এটি সংবাদ সংস্থাত কাম পালে যদিও, বহুদিন ধৰি এক বুজাব নোৱাৰা ক্লান্তি, একেটা সপোনৰ ঘূৰ্ণি আৰু ঠাইদেউতাৰ দিন-দিন অসুস্থতাৰ খবৰে যেন অলক্ষ্যে তাক গাঁৱলৈ টানি আনিছিল। ছাঁ ছাঁকৈ গৈ থকা বেলিৰে সৈতে গাঁওখনত প্ৰৱেশ কৰোতেই, তেজপীয়া নদীৰ পাৰত থকা সেই অগুৰি নদী, সৰুতে য’ত সি বানৰ পাৰত খেলিছিল, এতিয়া যেন সুধি উঠিছিল—“কিয় ঘূৰি আহিলি, পল্লবী?” বতাহৰ চক্ৰকূটত উৰুৱা…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    মৃত্যুস্থান বনাম মুক্তিস্থান

    দীপঙ্কর মাহাতো পুরুলিয়ার দক্ষিণ প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটিতে ঢোকার পথটাই যেন শহরজীবনের ব্যস্ততা থেকে এক অলক্ষ্য ছেঁটে ফেলা। ঝাউগাছ, শাল, পিয়াল আর মহুয়ার সারি সারি গাছের ফাঁকে রাস্তা বেঁকে গেছে পাহাড়ের বুক চিরে। মে মাসের শুকনো রোদ আর ধুলোভরা বাতাসের মধ্যেও সেখানে এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিল, যেন প্রকৃতি নিজেই শব্দ চেপে বসে আছে। এমনই নিঃসঙ্গ, প্রায় বিস্মৃতপ্রায় এই জায়গাতেই নিজের শেষ জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডা. অনিরুদ্ধ গুহ। কলকাতার এক খ্যাতনামা হাসপাতালে চব্বিশ বছর ধরে সার্জারি বিভাগের প্রধান ছিলেন তিনি, সহকর্মী আর ছাত্রছাত্রীদের কাছে ছিলেন এক কঠোর অথচ নীতিনিষ্ঠ পথপ্রদর্শক। তবে সময়ের নিয়মে অবসরের দিন ঘনিয়ে এলে…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    কাদার মানুষ

    পল্লব সেনগুপ্ত বিকেলের আলো ধীরে ধীরে ফ্যাকাশে হয়ে আসছিল, যখন অনন্যা ঘোষ ছোট ট্রলারে করে নদী পার হয়ে পৌঁছাল সুন্দরবনের এক প্রত্যন্ত গ্রামে। আশপাশে কেবলমাত্র কাঁকড়াভরা কাদা, উঁচু বাঁধ, এবং জলপথের ওপর একধরনের ঘন স্তব্ধতা—যেটা শহরের মানুষদের অচেনা। অনন্যা কয়েক মাসের জন্য এসেছে এক NGO-র প্রতিনিধি হিসেবে, উদ্দেশ্য—মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তাঁর হাতে একটা পুরনো নোটবুক, যেখানে কাজের পরিকল্পনা লিখে এসেছে, কিন্তু গ্রামের নিস্তব্ধতা আর হাওয়ার গন্ধ যেন ওই সব কাগজের যুক্তির চেয়েও বেশি বাস্তব। গ্রামের মানুষজন তাকে সম্মান দেখিয়েই স্বাগত জানাল, কিন্তু তাদের চোখে একটা নিরুত্তাপ দূরত্ব ছিল—যেমন কেউ জানে অতিথি বেশিদিন থাকবে না।…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    ভগ্নবাড়ির বাঁশি

    প্রদীপ মালাকার এক ঈহিত কর্ণিক নদীর দিকে তাকিয়ে বসেছিল লোকাল বাসের জানালায়, কাঁচের ওপারে ভেসে যাচ্ছিল আধা ঝাপসা একচিলতে সবুজ, দূরের সোনালি সর্ষে আর মাঝেমাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছের সারি। কলকাতার শীতের দুপুর ফিকে হয়ে আসছিল, আর তারই ফাঁকে ফাঁকে গ্রামের শান্ত ধুলোপথ যেন পুরনো কাহিনির বইয়ের মতো পাতা উল্টাচ্ছিল। ঈহিত, পেশায় অনলাইন নিউজ পোর্টালের রিপোর্টার, কিন্তু আসলে একজন কৌতূহলী অনুসন্ধানকারী—যে ভয় আর যুক্তির মাঝখানে দাঁড়িয়ে খুঁজে বেড়ায় সত্য। গত দুই মাস ধরে সে অনুসরণ করছিল এই নদীপারের পুরনো প্রাসাদের গল্প, যেখানে নাকি রাতের গভীরে বাঁশির সুর ভেসে আসে, আর যাদের সে সুর ছুঁয়ে যায় তারা কখনো ফিরে আসে…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    নিঝুম গ্রাম

    বিশ্বরূপ সাহা কলকাতার হাওয়া তখনো গরম, তবু একধরনের অদ্ভুত শূন্যতা ঘিরে ধরেছিল অরুণাভ চৌধুরীকে। তিন মাস আগেই একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবে তার সর্বশেষ ডকুমেন্টারি প্রশংসা কুড়িয়েছিল, কিন্তু সে সাফল্য তাকে আর আলোড়িত করত না। ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েনে, একদিকে ভেঙে যাওয়া বিয়ে, অন্যদিকে বাবার আকস্মিক মৃত্যু—সব মিলিয়ে সে যেন নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছিল। এই মুহূর্তে তার একটাই প্রয়োজন—নিজেকে সরিয়ে নেওয়া, শহরের কোলাহল থেকে দূরে, এমন এক জায়গায় যেখানে না আছে নেটওয়ার্ক, না আছে মানুষের হুড়োহুড়ি, কেবল নিস্তব্ধতা আর অজানা ইতিহাসের গন্ধ। আর এই আকাঙ্ক্ষাই তাকে টেনে এনেছিল বীরভূমের গভীরে অবস্থিত নিঝুম নামের এক ছোট্ট গ্রামে। এই গ্রাম সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    আলতা পায়ের ছাপ

    সুদীপ্তা কর ১ সরকার পরিবার বহু পুরোনো। শহরতলির শেষপ্রান্তে, ক্যানেলের ধারে মোটা পাঁচিলে ঘেরা প্রাসাদসদৃশ এক বাড়ি—যার কাঠের দরজার ওপর এখনও খোদাই করে লেখা আছে ‘সরকার ভিলা, ১৯২৩’। প্রবোধ সরকার এখানে জন্মেছিলেন, তাঁর বাবা-মারও জন্ম এই বাড়িতেই। সময় বদলেছে, কিন্তু বাড়ির চালচিত্র, লোহার রেলিং, কাঠের মেঝে—সবই থেকে গেছে ঠিক তেমনি। বিয়ের দিনটা ছিল মাঘের মাঝামাঝি—হালকা শীত, শিউলির শেষ গন্ধ, আর বাড়ি ভরা আলো। বিয়ের কোলাহলের মধ্যে শ্রেয়া এসে পা রাখল এই পুরনো সংসারে, লাল বেনারসীতে ঢাকা মুখে একরাশ লাজ লুকিয়ে। মীনাক্ষী দেবী, নতুন বৌমাকে দেখে অদ্ভুত একটা প্রশান্তি অনুভব করলেন—মেয়েটা যেন একদম শান্ত, পরিণত, গম্ভীর। সে কম কথা বলে, হাসে…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    নিসর্গপুরের নীলকণ্ঠ

    নির্মাল্য সেনগুপ্ত এক পাথুরে পাহাড়, দূরের শাল-পলাশের বন আর উষার কুয়াশায় মোড়ানো পথ ধরে যখন অভিজিৎ আর রোহনের জিপটা ঢুকছিল পুরুলিয়ার নিসর্গপুরে, তখন সকাল গড়িয়ে দুপুর প্রায়। ঝিরঝিরে হাওয়ায় পাতা কাঁপছিল, গাছের ছায়া রাস্তার উপর ভেসে বেড়াচ্ছিল নিরবে। অভিজিৎ জানালা দিয়ে মাথা বের করে ভিডিও করছিল, ক্যামেরার সামনে হাসি ঝলমল করে বলছিল, “ওয়েলকাম টু দ্য আনচার্টেড, বন্ধুরা! আজ আমরা এসেছি পশ্চিমবঙ্গের এক রহস্যময় গ্রামে, যার নাম নিসর্গপুর। এখানে প্রতি পূর্ণিমায় পাহাড় থেকে শোনা যায় রুদ্রতাণ্ডবের ধ্বনি, আর বলে হয়, শত বছর আগে এখানে এক নীলকণ্ঠ সন্ন্যাসী ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন… কেউ তাঁর ধ্যানভঙ্গ করলে আর ফিরতে পারে না। সত্যি? না গুজব? চলুন,…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    তেঁতুলতলার ঠাকুরদা

    ভাস্কর ভট্টাচার্য ১ নদিয়ার গ্রামের মেঠো রাস্তাগুলো যেন এখনো কুয়াশা গিলে রাখা স্মৃতির মতো। শহুরে ব্যস্ততার ভিড়ে পঁচিশ বছর পার করা অর্ঘ্য সেনগুপ্তর মনে হলো, গ্রামের মাঠের গন্ধটা আজও বদলায়নি। লাল মাটির পায়ে ধুলো লাগিয়ে সে নামল বাস থেকে, আর পেছনে তাকিয়ে দেখল একটুকরো ফেলে আসা সময় ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে আসছে। পেটচেরা রোদের মাঝে মাথার ওপর গাঢ় সবুজ তালগাছগুলো হেলে পড়েছে, পাশে পাটক্ষেতের গায়ে গায়ে গা ঘেঁষে সাঁই সাঁই করে ছুটছে দক্ষিণা বাতাস। স্টেশনের ধারে চায়ের দোকানে সেই পুরোনো হরিপদ কাকুর চায়ের হাঁড়ি এখনো উনুনে বসে, আর কাকুর চোখেমুখে সেই চেনা কৌতূহল—“চেনা চেনা লাগতেছে নাতি, তুই কি হরেন বাবুর…

  • Bangla - তন্ত্র - রহস্য গল্প

    নির্বাপিত প্রদীপ

    সুব্রত গাঙ্গুলি প্রতীক দত্ত, কলকাতার এক নামকরা দৈনিকের অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিক, চিরকাল যুক্তির পথ ধরেই হাঁটতে অভ্যস্ত ছিল। কিন্তু কিছু ঘটনা এমন থাকে, যেগুলো যুক্তিকে ছাপিয়ে যায়—এমনই এক ঘটনার পেছনে ছুটে সে এসে পৌঁছেছিল পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এক গ্রামে, নাম উজানডাঙা। শহর থেকে অনেকটা পথ পেরিয়ে, রুক্ষ কাঁচা রাস্তা ও নিস্তব্ধ পলিমাটির ফাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রামটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এক পরিত্যক্ত জমিদারবাড়ি—মহিমা চৌধুরী প্রাসাদ। এই বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কাহিনি তাকে টেনেছিল এখানে: প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তির রাতে, বাড়ির মধ্যবর্তী ত্রিকোণ চত্বরে রাখা এক প্রাচীন ব্রোঞ্জের প্রদীপ নিজে থেকেই জ্বলে ওঠে—কেউ জ্বালায় না, কেউ দেখেনি জ্বালাতে, তবুও জ্বলে। খবরটি প্রথম সে পায় এক…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    রুদ্রসিংহের দোতলা

    তথাগত বিশ্বাস অধ্যায় ১ বর্ধমান শহর থেকে খানিক দূরে, কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে সবুজ ধানক্ষেতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক বিশাল পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল সেই চারজন। অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ, হালকা কুয়াশা ভাসছে বাতাসে, আর সন্ধ্যার আলো ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। চারদিকে নিস্তব্ধতা, শুধু মাঝে মাঝে দূরের কুয়ো থেকে ভেসে আসা কুকুরের ঘেউঘেউ শব্দ। সৌগত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, চোখে চশমা ঠিক করে বাড়িটার দিকে তাকাল। ইট আর চুনের প্রাচীন কারুকাজ করা বাড়ি, সময়ের থাবায় কালচে হয়ে গেছে। তার পাশে নন্দিতা রায়, প্রত্নতত্ত্ববিদ, ব্যাগ থেকে নোটবুক বের করে কিছু লেখার আগে গা ছমছমে কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল, “এই বাড়িটা যেন…