• Bangla - ভূতের গল্প

    কাশীপুরের ভিটে

    অভিজিৎ রায় পর্ব ১ কালো মেঘে ঢাকা সন্ধেটা যেন গ্রামের বুক থেকে আলোটুকু শুষে নিয়েছিল। নদীর ধারে পেঁচানো পথ দিয়ে হাঁটছিল অর্ণব। কলকাতা থেকে সে এসেছিল কিছু কাজের সূত্রে, কিন্তু এই গ্রামে এসে তার মনে হচ্ছিল, শহরের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পাওয়া মানে এই নয় যে মন শান্ত হয়ে যাবে। বরং প্রকৃতির অন্ধকারের ভেতরেই এক অদ্ভুত নিঃসঙ্গতা ঘিরে ফেলছিল তাকে। গ্রামটার নাম কাশীপুর, লোকসংখ্যা অল্প, আর চারদিকে ঘন জঙ্গল। তার থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল এক পুরোনো বাড়িতে—লোকেরা যাকে বলে মজুমদারদের পরিত্যক্ত ভিটে। লোকজন তাকে আগেই সাবধান করেছিল, রাত হলে যেন একা বাইরে না বেরোয়। অর্ণব ভেবেছিল, এগুলো নিছক গ্রামীণ গুজব, যেখানে ভূতের…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    চতুষ্পথে দাঁড়িয়ে

    মেঘলা রায় পর্ব ১: সেই চিঠি পূর্ব ক্যালকাটা কর্পোরেশনের ঘিঞ্জি কোয়ার্টার, হরিদেবপুরের বাসা। সেইখানেই প্রতিদিন ঠিক আটটায় ঘুম ভাঙে সৌম্য মিত্রর। ঘুম থেকে উঠেই বাম দিকের দেয়াল ঘেঁষে থাকা পুরনো লোহার আলমারিটা খোলে—চাবি নেই, সরাসরি তালা ভেঙে রাখা। সেই তালার ভেতরেই পুরোনো চিঠিগুলো থাকে, মায়ের লেখা, ভাইয়ের পাঠানো, কয়েকটা সরকারি চিঠি, দু-তিনটে কাটা টিকিট। কিন্তু আজ সকালটা যেন কেমন অন্যরকম। জানলা গলে ঢুকছে একরাশ ঝিরঝিরে ঠান্ডা আলো, যেটা কলকাতার চেনা আষাঢ়ে মেলে না। আর তার ফাঁক দিয়ে, ছেলেবেলায় শোনা মাধবীলতার ঘ্রাণ এসে পড়ছে বিছানার বালিশে। হাতের প্রথম চিঠিটা হলুদ হয়ে যাওয়া খামে মোড়া। উপরে কালো কালিতে বড় বড় হরফে লেখা—সৌম্য…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    পদচিহ্ন

    নিবেদিতা চক্রবর্তী অধ্যায় ১: কুমিরডাঙার বাংলো অরিত্র বসুর মনটা বেশ কয়েক মাস ধরেই ভারী হয়ে আছে। ছবি আঁকার চেষ্টা করলেই মনে হয়, ব্রাশটা যেন বাতাসে দোলা খায়, কিন্তু রঙে ডুবে না। ক্যানভাসে রঙ মিশে যায় ঠিকই, কিন্তু তাতে জীবন থাকে না। তার ভেতরের কিছু যেন চুপ করে বসে আছে, আর তা না জাগলে কিছুই উঠে আসে না ক্যানভাসে। কলকাতার কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে, এক বন্ধুর পরামর্শে সে চলে এল পুরুলিয়ার এক প্রাচীন, নির্জন গ্রামে—কুমিরডাঙা। পাহাড়, জঙ্গল আর অদ্ভুত নীরবতায় ঘেরা এই গ্রাম এখনো যেন কালের গায়ে আঁচড় পড়তে দেয়নি। এখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক চলে না, ইলেকট্রিকের তার আসে আবার যায়—আর…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    অলীক ধোঁয়া লেখক

    দীপন চক্রবর্তী পর্ব ১ ঘড়ির কাঁটা রাত সোয়া বারোটায় এসে থেমে গেছে যেন। কলকাতার উত্তরের এই পুরনো পাড়াটায় এমনিই রাতের নির্জনতা নেমে আসে একটু আগে, কিন্তু আজকের রাতটা যেন আরও ভারী, যেন বাতাসেও কেউ গোপনে নিঃশ্বাস ফেলছে। রায়চৌধুরি বাড়িটা ছিল এক সময় নামকরা জমিদারদের বাসভবন, এখন তা আধভাঙা প্রাসাদ, চারপাশে বড় বড় শালিকের ডাক আর পেছনের বাঁশবনে মৃদু শব্দে ফিসফিসে বাতাস। আজ সেই বাড়ির একমাত্র উত্তরাধিকারী সায়ন্তন রায়চৌধুরি ফিরেছে বিদেশ থেকে, বারো বছর পর। এয়ারপোর্ট থেকে সে সোজা এসেছিল এখানেই, চালকের হাতে চাবি দিয়ে ঢুকেছিল সেই গম্বুজওয়ালা লোহার ফটক ঠেলে। কিন্তু তার ফেরা শুধুমাত্র একটা ছুটির কারণে নয়। পৈতৃক সম্পত্তির…