নীলাঞ্জনা সেন সকালটা যেন এক অচেনা হাওয়ার মতো এসে ঢুকে পড়েছিল ঘরে, জানালার ফাঁক দিয়ে রোদ ঢুকছিল ধীরে ধীরে, সেই আলো এতটা নরম যে মনে হচ্ছিল একে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিলেই মিলিয়ে যাবে, বোনটা তখনো আধো ঘুমের ভেতর চায়ের কাপ হাতে বসে ছিল, তার চোখের তলায় হালকা লাল রেখা, হয়তো রাত জেগে ছিল অনেকক্ষণ, অথবা হয়তো নিঃশব্দে কারও সঙ্গে দীর্ঘ কথোপকথন করেছে ফোনে, আমি কিছু জিজ্ঞেস করিনি, কারণ ভোরের নীরবতা ভাঙতে ইচ্ছে করছিল না, শুধু দেখছিলাম সে নিঃশব্দে স্ট্যাটাস আপডেট করছে—“বিষ্ণুপুর যাচ্ছি, সকালটা তোর কপালে”—আমার অদ্ভুত লাগছিল এই লাইনগুলো, কাকে পাঠালো, কেন পাঠালো, তার ভেতরে কী চলছে আমি জানি না,…
-
-
অমিত ধর ১ সকালবেলার ট্রেন থেকে নেমে দলটি যখন বিষ্ণুপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পা রাখল, তখনো শহরের আকাশে ছিল কুয়াশার হালকা চাদর। শীতের সকালের সেই আর্দ্র ও শীতল বাতাসের মধ্যে দূরে কোথাও বাজছিল মন্দিরের ঘণ্টা, যা মিলেমিশে এক ধরনের মিষ্টি শান্তি এনে দিচ্ছিল মনকে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিল ধূসর কুয়াশার আচ্ছাদন, আর তার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছিল লাল ইটের প্রাচীন টেরাকোটা মন্দিরের মাথা, যেন ইতিহাসের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে। অরিজিৎ কাঁধের ব্যাগ থেকে ক্যামেরা বের করে মুহূর্তগুলো ধরে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল—কুয়াশার মধ্যে উঁকি মারা শিখর, প্রাচীন অলঙ্করণে ভরা মন্দিরের দেওয়াল, আর সকালের হাটে আসা মানুষের ভিড়। প্রিয়া নোটবুক খুলে…
-
অভিজিৎ দাস পর্ব ১: আগমনী কলকাতার বিখ্যাত নাট্যদল ‘অভিনয়নগর’ তাদের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে শহরের বাইরে একটা থিয়েটার রিট্রিটের আয়োজন করেছিল। স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বিষ্ণুপুর—ইতিহাস আর সঙ্গীতের শহর। সেখানে গিয়ে নাটকের মহড়া, স্ক্রিপ্ট রিডিং, ওয়ার্কশপ, আর প্রকৃতির মধ্যে কিছুটা সময় কাটানো—এই ছিল উদ্দেশ্য। দলের অন্যতম প্রবীণ সদস্য অভিজিৎদা বলেছিলেন, “বিষ্ণুপুরে একটা পুরনো রাজবাড়ির মন্দির আছে। বহুদিন কেউ যায় না, একটু ভৌতিক, কিন্তু জায়গাটা একেবারে থিয়েটার-যোগ্য।” সবার কৌতূহল জাগল। নাটকের ছায়া পড়ার জন্য এমন পরিবেশই তো চাই। রওনা হয়েছিল দশজন—আটজন অভিনেত্রী, একজন মেকআপ আর্টিস্ট, আর রুদ্র—স্ক্রিপ্ট লেখক এবং নির্দেশক। দলটির গঠন ছিল যেন এক থ্রিলারের চাবিকাঠি। সকলেই নিজস্ব জীবনযন্ত্রণা…