অমিত সিনহা ১ হিমালয়ের নক্ষত্র মানমন্দিরে রাতটা ছিল এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতার। বাইরে বরফঢাকা পর্বতের মাথায় ছড়িয়ে থাকা ঠান্ডা হাওয়া যেন পৃথিবীর অন্তিম যুগের শীতলতার পূর্বাভাস দিচ্ছিল। শতাব্দীর শেষ প্রহরগুলোতে পৃথিবীর মানুষ আর প্রকৃতি, দুজনেই এক অচেনা ছন্দে বেঁচে ছিল। সূর্যের শক্তি ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত, গ্লোবাল তাপমাত্রা কখনও অস্বাভাবিক উষ্ণতায় ফেটে পড়ছে, আবার মুহূর্তেই হিমেল শীতের ছুরিকাঘাত নামছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আকাশের উচ্চতায়। শহরগুলো ধীরে ধীরে নিভে গেছে, সভ্যতার আলো কমেছে মানুষের হাতের ছোঁয়ায় নয়, বরং মহাবিশ্বের এক অচেনা চক্রে। এই মৃত্যুপথযাত্রী পৃথিবীতে আর্যন সেন যেন এক ব্যতিক্রম। তরুণ, মেধাবী জ্যোতির্বিজ্ঞানী সে, যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য আকাশের ভাষা বোঝা। অজানাকে ছুঁতে চাওয়ার নেশায়…
-
-
অয়ন সরকার ১ কলকাতার রাত সাধারণত যেমন থাকে, তেমনই ছিল—রাস্তায় গাড়ির হর্ন, চায়ের দোকানে আড্ডা, ফুটপাথে ছুটোছুটি করা মানুষ, আর দূরে হাওড়া ব্রিজের আলোয় ঝলমল নদী। কিন্তু সেই রাতে হঠাৎই যেন পুরো শহরের হৃদস্পন্দন থেমে গেল, যখন আকাশে দেখা গেল এক অদ্ভুত আলোকবিন্দু। প্রথমে কয়েকজন পথচারী চোখ কুঁচকে তাকিয়ে ভাবল, হয়তো এটা কোনো উল্কাপাত, কিংবা সামরিক বিমানের আলো। কিন্তু আলোটা থেমে রইল, এক বিন্দু থেকে ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে লাগল। মিনিটের পর মিনিট কেটে যাচ্ছে, অথচ আলো নড়ছে না, বরং তার চারপাশে যেন অদ্ভুত তরঙ্গ তৈরি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ল এই খবর—“কলকাতার আকাশে রহস্যময় আলো”—আর মানুষ ভিড় জমাতে…
-
সায়ন সান্যাল ভবিষ্যতের শহর যেন এক চলমান স্বপ্ন—কাঁচের মতো স্বচ্ছ আকাশচুম্বী দালান, ইস্পাতের গায়ে প্রতিফলিত অগণিত আলোকছটা, আর আকাশপথে দৌড়ানো মসৃণ ট্রেনগুলো যেন সময়কে ছাড়িয়ে ছুটে যাচ্ছে। রাত নেমে এলে শহরের রাস্তাঘাট নীল আলোয় মোড়া হয়ে ওঠে, যেন সমগ্র নগরটাই আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো নক্ষত্রপুঞ্জ। মানুষ এ শহরে বিশ্বাস করে তারা নিয়ন্ত্রণের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে—প্রযুক্তি, শৃঙ্খলা আর কড়া নিয়মের মাধ্যমে সবকিছু পূর্বানুমেয়, সবকিছুই নিখুঁতভাবে সাজানো। যানবাহন চলে সময় মেপে, বাতাসে নেই ধূলিকণা, পানির ফোঁটাও নষ্ট হয় না, এমনকি আবহাওয়াও নিয়ন্ত্রিত। এই ঝকঝকে শহর তার নাগরিকদের মনে এক অদ্ভুত নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি করেছে—কেউ বিশ্বাস করে না যে এখানে কোনো অস্থিরতা…