সন্দীপন ধর খামে মোড়া নীরবতা রমেশচন্দ্র বসু বসে আছেন জানালার ধারে রাখা সেই পুরনো বেতের চেয়ারে। জানালার গরাদের ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়া বিকেলের আলো তার রুপোলি চুলে খেলে যাচ্ছে। মাথার ঠিক পাশেই একটা ছোট কাঠের তাক, সেখানে রাখা তার স্ত্রীর একটা ছবি — মেঘলা শাড়ি, মৃদু হাসি, কপালে ছোট্ট টিপ। নাম ছিল তার — কাবেরী। আজ অনেকদিন পর আবার পোস্টম্যান এসেছিল। লাল-হলুদ ইউনিফর্ম, কাঁধে ব্যাগ। সে বলল, “বসুবাবু, আপনার পেনশনের শেষ চেকটা এসেছে।” রমেশচন্দ্র ধীরে হাত বাড়িয়ে খামটা নিলেন। যেন মৃদু এক স্নেহে ছুঁলেন। এই খামে শুধু টাকা নেই, আছে একটা দীর্ঘ জীবনের সমাপ্তি ঘোষণা। অফিসের শেষ বেতন মাসেরও বেশি…
-
-
অনিন্দ্য দাশগুপ্ত পর্ব ১: যে মানুষটি নিখোঁজ পুজোর ঠিক আগের বিকেল, আকাশে হালকা সোনালি রোদ। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার এক ফ্ল্যাটবাড়িতে চার তলায় হঠাৎ কোলাহল—”নয়নবাবু কোথায়? ফোন ধরছেন না!” ফ্ল্যাটের দারোয়ান রবীন, পাশের ফ্ল্যাটের মৌসুমীদির সঙ্গে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন মুখে তাকিয়ে আছে। নয়ন ঘোষাল, ৬৮ বছর বয়স, অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কেরানি। প্রতিদিন সকালে বারান্দায় বসে চা খেয়ে ‘আনন্দবাজার’ পড়তেন। ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে হতো না, নাতির পড়াশোনা তদারকি করতে হতো না, এমনকিছুই ছিল না তাঁর জীবনজুড়ে। স্ত্রী সুপর্ণা গতবছর চলে গেছেন—স্তব্ধতা ও অভ্যাসের মাঝখানে একা দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি যেন হঠাৎ নেই। “ফোন বন্ধ, দরজাও ভেতর থেকে বন্ধ নয়। মানে উনি নিজের…