• Bangla - ভূতের গল্প

    পদচিহ্ন

    নিবেদিতা চক্রবর্তী অধ্যায় ১: কুমিরডাঙার বাংলো অরিত্র বসুর মনটা বেশ কয়েক মাস ধরেই ভারী হয়ে আছে। ছবি আঁকার চেষ্টা করলেই মনে হয়, ব্রাশটা যেন বাতাসে দোলা খায়, কিন্তু রঙে ডুবে না। ক্যানভাসে রঙ মিশে যায় ঠিকই, কিন্তু তাতে জীবন থাকে না। তার ভেতরের কিছু যেন চুপ করে বসে আছে, আর তা না জাগলে কিছুই উঠে আসে না ক্যানভাসে। কলকাতার কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে, এক বন্ধুর পরামর্শে সে চলে এল পুরুলিয়ার এক প্রাচীন, নির্জন গ্রামে—কুমিরডাঙা। পাহাড়, জঙ্গল আর অদ্ভুত নীরবতায় ঘেরা এই গ্রাম এখনো যেন কালের গায়ে আঁচড় পড়তে দেয়নি। এখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক চলে না, ইলেকট্রিকের তার আসে আবার যায়—আর…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    নবান্নর আগের রাত

    অর্ঘ্য দত্ত আগমন বিকেলের আলো তখনো জমে আছে গাছের পাতায়, যখন শুভম দাস ট্রেন থেকে নামল। ছোট্ট একটা স্টেশন—নাম ‘মাহেশচর’। আশেপাশে ঝিম ধরা সবুজ মাঠ, দূরে একটা নদীর রেখা দেখা যায়, আর ঝাঁক বেঁধে উড়ছে সাদা বক। শুভম শহরের ছেলে, কলকাতার এক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। পিএইচডির বিষয় “লোকজ কৃষিপদ্ধতি ও তার সামাজিক প্রভাব”, আর সেই সূত্রেই আজ এই প্রত্যন্ত জায়গায় তার পদার্পণ। এতটা ভিতরে ঢুকতে হবে, তা আগে আন্দাজ করেনি। স্থানীয় এক শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচিত হয়েছে গ্রামের নাম—গোপীনাথপুর, আর সেই গ্রামের পাশেই একটি রহস্যময় ধানখেত, যেখানে প্রতি বছর নবান্নর আগের রাতে কেউ পা রাখে না। স্টেশন থেকে বেরিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেই…

  • Bangla - নাটক

    কালাপাহাড়ের ছায়া

    সৌভিক রায়চৌধুরী পর্ব ১ বর্ষার বিকেল। গৌড়ের আকাশে কেবলই মেঘ জমছে। দূরে বাজ পড়ে, নদীর ধারে শাল, সেগুন আর কদম গাছের পাতা ভিজে নেমে আসে। দূর থেকে দেখা যায়, নদী যেন আছড়ে পড়ছে নিজেই নিজের বুকের ওপর। সেই জলপথ ধরে ধেয়ে আসছে এক একলা ঘোড়সওয়ার—ঘোড়ার খুরের শব্দ ডুবে যাচ্ছে বৃষ্টির ছন্দে। তার মাথায় পাগড়ি, চোখে তীক্ষ্ণ ছায়া, কপালে গাঢ় চিন্তার রেখা। সে কালাপাহাড়, নবাব সুলেমান কররানির সেনাপতি। কিন্তু তার জন্মনাম ছিল রামপ্রসাদ। একদা হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান, আজ ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্রদের এক—ভাঙন, রূপান্তর, এবং আগুনের প্রতীক। এই পথ আজ যুদ্ধের জন্য নয়। এই পথ আজ তাকে নিয়ে যাচ্ছে তার…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    গহনপুরের গুপ্তধন

    অর্ণব গুহ অধ্যায় ১: হারিয়ে যাওয়া নোটবই গহনপুর – নামটায় এক রকম রহস্য আছে। বাঁকুড়া জেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামটার ইতিহাস কতদূর ছড়িয়ে, কেউ তা স্পষ্ট বলতে পারে না। জঙ্গলে ঘেরা, পিচঢালা রাস্তা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানেই এই গহনপুর। গ্রামের মধ্যে এখনও কিছু টালির ছাউনি ঘর, একটা ভাঙা জমিদার বাড়ি আর একটা প্রাচীন শিবমন্দির—কোনটা কবে তৈরি, সঠিক কেউ জানে না। সেই গহনপুরেই পৌঁছল তিনজন বন্ধু—সুদীপ্ত, ঐন্দ্রিলা আর বাপি। কলকাতার স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব এখন কাজের চাপে একটু আলগা হলেও, এই রহস্যময় আমন্ত্রণ তাদের আবার এক করল। “এই বাড়িটা তো একেবারে হন্টেড সিনেমার মতো!”—বাপি গাড়ি থেকে নামতে নামতে বলে। ঐন্দ্রিলা একটু…