সায়ন সান্যাল ভবিষ্যতের শহর যেন এক চলমান স্বপ্ন—কাঁচের মতো স্বচ্ছ আকাশচুম্বী দালান, ইস্পাতের গায়ে প্রতিফলিত অগণিত আলোকছটা, আর আকাশপথে দৌড়ানো মসৃণ ট্রেনগুলো যেন সময়কে ছাড়িয়ে ছুটে যাচ্ছে। রাত নেমে এলে শহরের রাস্তাঘাট নীল আলোয় মোড়া হয়ে ওঠে, যেন সমগ্র নগরটাই আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো নক্ষত্রপুঞ্জ। মানুষ এ শহরে বিশ্বাস করে তারা নিয়ন্ত্রণের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে—প্রযুক্তি, শৃঙ্খলা আর কড়া নিয়মের মাধ্যমে সবকিছু পূর্বানুমেয়, সবকিছুই নিখুঁতভাবে সাজানো। যানবাহন চলে সময় মেপে, বাতাসে নেই ধূলিকণা, পানির ফোঁটাও নষ্ট হয় না, এমনকি আবহাওয়াও নিয়ন্ত্রিত। এই ঝকঝকে শহর তার নাগরিকদের মনে এক অদ্ভুত নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি করেছে—কেউ বিশ্বাস করে না যে এখানে কোনো অস্থিরতা…
-
-
সৌরভ নাগ ১ ভারতের প্রত্যন্ত এক ছোট্ট গ্রাম, চারদিকে বিস্তৃত ধানক্ষেত, দূরে দূরে তালগাছ আর মাঝখানে মাটির ঘরগুলির সারি। দিনের বেলা গ্রামটি শান্ত, মানুষজন তাদের ফসল ও গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত থাকে, আর সন্ধ্যা নামলেই যেন গ্রামটা ঢেকে যায় অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতায়। আকাশভরা তারার নীচে সারা গ্রাম যখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই ঘটল সেই অদ্ভুত ঘটনা। সেদিন ছিল অমাবস্যার রাত, চারপাশে অন্ধকার নেমে এসেছে, কেবল কিছু ঘরে কুপির আলো দপদপ করছে। সেই সময় হঠাৎ মেঘলা, গ্রামেরই এক কিশোরী, উঠোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। সে আকাশ দেখার অভ্যেস করেছে ছোটবেলা থেকে, তার মনে হয় রাতের আকাশে লুকিয়ে আছে হাজারো গল্প, হাজারো…
-
নিশীথ চক্রবর্তী সুন্দরবনের উপকূল সবসময়ই রহস্যে ঘেরা, অর্ধেক জল আর অর্ধেক জঙ্গলের মিলিত রূপ যেন সময়ের সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা এক অদ্ভুত ভূমি। ভোরবেলা আকাশ যখন ধীরে ধীরে আলোকিত হয়, তখন কাদা মাটির গন্ধ আর লবণাক্ত বাতাস জেলেদের নাকে এসে লাগে, নদীর স্রোত যেন ডাকে নতুন দিনের শিকারে নামতে। রফিকুল ইসলাম সেই দিনও স্বাভাবিক নিয়মে নিজের ছোট্ট নৌকো নিয়ে বের হয়েছিল। জীবনের প্রতিদিনের লড়াই, পরিবারকে দু’মুঠো খাবার জোগানোর চিন্তা আর সমুদ্রের অনিশ্চয়তা—সবকিছু মিলে তার দিনগুলোর রং একঘেয়ে, কিন্তু এই দিনের সকালটা যেন অন্যরকম কিছু হয়ে উঠতে চলেছে। জাল ফেলার জন্য সে যখন নৌকো থেকে ভর করে দাঁড়াল, তখন নদীর পানি ছিল…
-
সায়ন পাল ১ হিমালয়ের পাথুরে বুক চিরে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় মহাকর্ষ গবেষণা কেন্দ্র’ ছিল এক নিঃসঙ্গ চিহ্ন—যেন সভ্যতা থেকে বহু দূরের এক গোপন সভ্যতার সূচনা। ভারতের বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্প—প্রকৃতির গভীরে প্রবেশ করে এমন কিছু আবিষ্কার করার চেষ্টা, যা শুধু তত্ত্বেই সম্ভব ছিল এতদিন। এই কেন্দ্রের নেপথ্যে ছিলেন ডঃ দীপ্তনারায়ণ মুখার্জী, একজন অনমনীয়, নীরব, অথচ অসম্ভব দূরদর্শী পদার্থবিজ্ঞানী। তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল ‘শ্যাডো’ নামের এক গবেষণা ইউনিট, যার লক্ষ্য ছিল মানুষের হাতে কৃত্রিম কৃষ্ণগহ্বর তৈরি করা। প্রায় এক দশকের প্রস্তুতির পর তারা আজ সেখানে পৌঁছেছে—যেখানে একটিমাত্র বোতাম টিপলেই শুরু হবে সেই মহাপরিকল্পনার বাস্তব রূপদান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন…