সন্দীপ সেনগুপ্ত হুগলির বিস্তীর্ণ গ্রামীণ প্রান্তরে, নদীর ধারে শ্যাওলায় ঢাকা ইটের প্রাচীর আর ধ্বংসস্তূপের মতো দাঁড়িয়ে আছে সেই পুরনো গড়। সময়ের ক্ষয়ে ক্ষয়ে এর অনেকটা ভেঙে পড়েছে, অনেকটা মাটির নিচে চাপা পড়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় নিস্তব্ধ প্রকৃতির কোলে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো অদ্ভুত নিদর্শন, অথচ স্থানীয়রা একে ভয়ে এড়িয়ে চলে। দীর্ঘদিন ধরে শোনা যায়, গড়ের ভেতরে রাত নামলে অদ্ভুত শব্দ শোনা যায়—কখনো তলোয়ারের ঝনঝনানি, কখনো পদশব্দ, আবার কখনো গভীর নিশ্বাসের আওয়াজ। ফলে গ্রামবাসীর চোখে এ জায়গা “অভিশপ্ত” বলেই পরিচিত হয়ে উঠেছে। এই ভয়ের মধ্যেও সরকার ঠিক করে, প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে জায়গাটি খনন করা দরকার। হয়তো গড়ের ভেতর থেকে মিলবে বাংলার ইতিহাসের…
-
-
অনিৰ্বাণ দাস ১ সকালবেলা শহরের কাগজে প্রথম পাতার শিরোনামই ছিল—“বিখ্যাত লেখক অরিন্দম সেন আর নেই।” গত রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়, অথচ মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাহিত্য মহল থেকে শুরু করে পাঠকসমাজ স্তব্ধ হয়ে যায়। জীবদ্দশায় অরিন্দম ছিলেন রহস্য ও খুনের কাহিনীর এক অনন্য কারিগর, যার প্রতিটি লেখা পাঠকের মনে গা ছমছমে আবহ তৈরি করত। তাঁর বয়স হয়েছিল পঁয়ষট্টি, তবে এখনো নিয়মিত লেখালিখি করছিলেন। এমন একজন মানুষের হঠাৎ মৃত্যুতে সবাই ধরে নেয় হয়তো হার্ট অ্যাটাক বা বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা। কিন্তু তার বাসভবন—শহরের এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা পুরোনো ভিক্টোরিয়ান ঢঙের দোতলা বাড়িটি—যেন মৃত্যুর পর অদ্ভুত এক নীরবতায় ডুবে যায়। বাড়ির ভেতর ছড়ানো পুরোনো…
-
চৈতালি লাহিড়ী এক প্রতিভার জীবনের প্রথম স্মৃতি যেন সেই গন্ধ—হলুদের, ধূপের, আর নতুন শাড়ির আলতো কলকার। বাল্যবিয়ে তার জন্য ছিল এক নীরব আনুষ্ঠানিকতা, চোখের কোনায় জল জমলেও মন বোঝেনি এর অর্থ। ছোট্ট গ্রামের মাটির বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ির লাল ইটের প্রাচীরের মধ্যে পা রাখার মুহূর্তে সে অনুভব করেছিল পৃথিবীটা কত বড়, আর সেই বড় পৃথিবীতে সে কতটুকু ক্ষুদ্র। প্রতিভার বয়স তখন মাত্র তেরো, বইয়ের পাতায় এখনও তার হাতের গন্ধ লেগে ছিল, অথচ জীবনের নতুন পাঠশালায় তাকে পা রাখতে হলো অনিচ্ছায়। স্বামী অরুণমাধব, দশ বছরের বড়, শুরুর দিকে মুখে কথাই বলতেন না; শ্বশুরবাড়ির রীতিনীতি, শাশুড়ির কড়া চোখ, আর গৃহস্থালির দায়িত্ব একসঙ্গে যেন…