অভ্রনীল দত্ত পর্ব ১ – যাত্রা শুরু সকালবেলা কোলাহলমুখর শিয়ালদহ স্টেশনের ভিড়ের ভেতর দিয়ে যখন তারা সবাই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছল, তখনও কারও মাথায় ছায়ামাত্রও ছিল না কী অপেক্ষা করছে সামনে। কলকাতার এই পাঁচজন কলেজ–বন্ধু—অনিক, সুমিত, তন্ময়, দেবলীনা আর রুদ্র—দীর্ঘদিন পর আবার মিলে একসঙ্গে কোথাও বেরোচ্ছে। গন্তব্য সুন্দরবন। ভ্রমণের উদ্দেশ্য একটাই—দু–একদিন শহরের কোলাহল ভুলে প্রকৃতির নির্জন অরণ্যে কিছুটা সময় কাটানো, বাঘ দেখার ভাগ্য হলে আরও ভালো, আর সবার ওপরে একধরনের অদেখাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা। রুদ্র, যে দলের মধ্যে সবচেয়ে উচ্ছল, আগেই পরিকল্পনা করেছিল গোটা ট্রিপ। সে বলেছিল—“এইবার তো পুজোর ভিড় নেই, একেবারে নিস্তব্ধ জঙ্গলে গিয়ে আসব। কী রোমাঞ্চ বলো তো!” বাকিরা তার কথায়…
-
-
তিয়াস চক্রবর্তী ১ বটগাছটা ছিল বিশাল, ছায়াময় আর পুরনো। বনের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা সেই গাছটাকে পাখিরা ডাকে “আকাশদ্বার”—যেন তার ডালপালায় সিঁড়ি বেয়ে আকাশ ছোঁয়া যায়। সেখানে বাস করত রকমারি পাখি—নীল টিয়া, সবুজ বেনেবউ, সোনালি ঘুঘু আর শাদা পায়রা। প্রত্যেকের নিজের গান ছিল, নিজের আভিজাত্য। গাছজুড়ে প্রতিদিন সকালবেলা এক অপূর্ব সঙ্গীতসন্ধ্যা বসত—কারও কণ্ঠে মিষ্টি রাগ, কারও গলায় ঝংকারের ঝরনা। এই সংগীতের মাঝেই বসবাস ছিল একমাত্র সেই পাখিটির—যার গলায় ছিল না কোনো সুর, যার গায়ে ছিল না কোনো রং। তার নাম কেউ নেয় না—সবাই তাকে বলে “ওই কাকটা।” সে নিজে নিজের নাম রেখেছিল কাকু। কাকু কালো, সাধারণ, আর তুচ্ছ—এই তিন অভিধায়…
-
সোমশুভ্র লাহিড়ী পর্ব ১: জলের নীল স্পর্শ ট্রেনটা যখন ক্যানিং স্টেশনে থামে, তখন সকাল বেলা ঠিক ভালোভাবে জেগে উঠেছে। প্ল্যাটফর্মে ভীড় নেই, কেবল কিছু লোকাল চা-ওয়ালা, এক-দুজন মাছের কাঁধে ঝোলা নিয়ে নেমে পড়েছে। আমার ব্যাগ হালকা—তিন দিনের নৌকা-বিহারের জন্য যা লাগে, তাই সঙ্গে এনেছি। এই সফরটা একরকম পালানোর মতো। শহরের কোলাহল, ক্লান্তি আর নিয়ত বদলাতে থাকা সময়ের চাকা থেকে বেরিয়ে এসে কিছু নিঃশব্দের খোঁজে বেরিয়েছি। স্টেশন থেকে বেরিয়ে একটা ছোটো গাড়ি আমাকে নিয়ে যায় গোসাবার দিকে। রাস্তা পেরিয়ে যখন শেষ গ্রামটার ধারে পৌঁছলাম, তখন চারপাশে কেবল জল আর গাছের ছায়া। ছোট্ট একটা খেয়া নৌকা আমাকে পৌঁছে দিল জেটিতে, যেখানে আমার…