অনির্বাণ দাস অধ্যায় ১: অপরিচয়ের শুরু প্রথম দেখা ছিল হঠাৎ, একেবারেই অপ্রস্তুত অবস্থায়। কলেজের প্রথম দিন, সকালবেলার আকাশে হালকা মেঘ আর বাতাসে অদ্ভুত একটা শীতলতা ছিল। নতুন পরিবেশে ঢুকে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মনে হচ্ছিল, সবকিছুই অচেনা, সবকিছুই কেমন যেন কৌতূহলের আড়ালে ঢাকা। অনেকগুলো নতুন মুখ, কারও চোখে আত্মবিশ্বাস, কারও চোখে অচেনা ভয়ের ছায়া। ঠিক সেখানেই সে চোখে পড়ল—একটি পরিচিত অথচ অপরিচিত মুখ, যেন ভিড়ের ভেতর থেকে আলাদা হয়ে ওঠা কোনো আলো। মেয়েটির গায়ের রঙে এক অদ্ভুত উজ্জ্বলতা, চুলে অগোছালো ঢেউ, চোখে গভীর শান্তি। সে ছিল না অতিরিক্ত সাজানো বা চটকদার, বরং একদম সহজ, সরল, অথচ তীব্রভাবে আকর্ষণীয়। ছেলেটির মনে হলো,…
- 
				
 - 
				
স্পন্দন ভট্টাচাৰ্য অধ্যায় ১: শহরের প্রান্তে বা কোনো গ্রামীণ মেলায় উৎসবের সেই দিনটা ছিল একেবারেই আলাদা। চারপাশ যেন আলো, রঙ আর সুরের মিশেলে এক অনন্য আবহ তৈরি করেছিল। রাস্তার দু’পাশে সাজানো হয়েছিল সারি সারি আলপনা, আকাশ ভরে উঠেছিল রঙিন কাগজের ঝালর আর লণ্ঠনের আলোয়। মানুষের ভিড় ক্রমশ বাড়ছিল—কেউ দোকান ঘুরছে, কেউ প্যান্ডেলে ঢুকে ঠাকুর দেখছে, কেউ আবার হইচই করে রঙিন মেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। অয়ন, সদ্য গ্র্যাজুয়েট হয়ে ওঠা এক তরুণ, সেই ভিড়ের মধ্যেই হাঁটছিল। উৎসব তার কাছে শুধু আনন্দের উপলক্ষ নয়, বরং একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার মুহূর্ত। চাকরি খোঁজার চাপ, শহরের প্রতিযোগিতার হাহাকার, আর সংসারের নানান জটিলতা থেকে সামান্য মুক্তি খুঁজতে…
 - 
				
রুদ্রজিত ঘোষ অধ্যায় ১ : ডায়েরির গোপন পৃথিবী মায়ার দিন শুরু হয় খুব সাধারণভাবে—আলোর নরম ছায়ায় জানালার পর্দা দুলতে দুলতে তার ঘর ভরে ওঠে সকালের আলোয়। বাইরে পাখিদের ডাকে ভোরবেলার নিস্তব্ধতা ভেঙে যায়, অথচ মায়ার ভেতরটা সবসময় অন্যরকম ব্যস্ততায় ভরে থাকে। সবার চোখে সে হয়তো একেবারেই সাধারণ এক কিশোরী, কলেজে যাওয়া-আসা করে, বান্ধবীদের সঙ্গে গল্প করে, মাঝে মাঝে ক্লাসে মনোযোগ হারিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু আসলে মায়ার পৃথিবীটা আলাদা, আর সেই আলাদা পৃথিবীর দরজা খোলে শুধু একটি জিনিসে—তার ডায়েরি। লালচে রঙের মোটা মলাটের সেই ডায়েরিটা যেন তার প্রাণেরই এক অংশ। রাত গভীর হলে কিংবা দিনের ভিড়ভাট্টা ফুরোলে মায়া বসে…
 - 
				
অদিতি চক্রবর্তী (১) ঋতমের কাছে গোধূলি বেলা সবসময়ই এক অদ্ভুত আকর্ষণের সময়। সূর্যের শেষ সোনালি আলো যখন নদীর জলে গিয়ে মিশে যায়, তখন আকাশ, জল আর বাতাস মিলেমিশে তৈরি করে এক রঙিন ক্যানভাস, যা তার আঁকার খাতায় ধরা পড়ে না, কিন্তু তার মনে গভীর ছাপ ফেলে। সেদিনও সে স্কুলের ব্যাগ ঘরে ফেলে দিয়ে হাতে স্কেচবুক আর পেন্সিল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল সেই পরিচিত বাঁকের দিকে। রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে সে শুনতে পায় পাখিদের বাসায় ফেরার ডাক, দূরে কারো গরু ফেরানোর বাঁশি, আর গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে হালকা আলো এসে তার গায়ে পড়ছে। নদীর ধারের কাশফুলগুলো তখন গোধূলির আলোয় যেন রুপালি আভা…