• Bangla - তন্ত্র

    চন্দ্রনাথের কালো জল

    সায়ন্তন ঘোষ সন্ধ্যার আলো তখন পাহাড়ের ঢালে মিশে যাচ্ছে। সিলেট শহর ছেড়ে চন্দ্রনাথের পথে এগোতে এগোতে রুদ্র অনুভব করছিল এক অদ্ভুত গা ছমছমে শূন্যতা। পাহাড়ের রাস্তায় লোকজন নেই বললেই চলে, শুধু কোথাও কোথাও ধূপের গন্ধ ভেসে আসছে—গ্রামের বাড়িগুলোতে পূর্ণিমার পূজা চলছে। ট্যাক্সির ভেতরে বসে অনন্যা জানলার কাঁচে কপাল ঠেকিয়ে বাইরের অন্ধকার দেখছিল। তার মনে হচ্ছিল, পাহাড় যেন অদৃশ্য চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। —“এই জায়গাটার মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক আছে, তাই না?” হঠাৎ ফিসফিস করে বলল তিথি। অভিষেক হেসে উত্তর দিল, —“তুমি আবার ভূতের গল্প শুরু করছো নাকি? আমরা এসেছি বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে। কালো জলের খনিজ উপাদান বের করলে হয়তো একটা…

  • Bangla - তন্ত্র

    কালরাত্রির ডাকে

    প্রিয়াংশু মুখোপাধ্যায় অধ্যায় ১ গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে, যেখানে কাঁদামাটি ধীরে ধীরে কালচে ধূসর বালিতে মিশে গেছে, আর গঙ্গার একটি পরিত্যক্ত শাখা নদী যেন মৃত সাপের মতো স্থির হয়ে শুয়ে আছে, সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে সেই প্রাচীন শ্মশান। দিনের বেলাতেও এখানে ছায়া ঘন হয়, আর রাত নামলে মনে হয় যেন অদৃশ্য কোনো প্রহরী অন্ধকারের চাদর মেলে দিয়েছে। প্রায় তিনশো বছরের পুরনো এই শ্মশান একসময় জমিদারদের পারিবারিক চিতা স্থল ছিল, পরে ধীরে ধীরে সবার জন্য উন্মুক্ত হয়। তার ভাঙাচোরা প্রবেশদ্বারের ওপরের পাথরের খোদাইয়ে ক্ষীণভাবে এখনও দেখা যায় কালো দাঁত বের করা দেবীমূর্তি, যার চোখে লাল সিঁদুর লেপ্টে আছে। আশেপাশের পুরনো শিমুল, শিরীষ আর…

  • Bangla - তন্ত্র

    শিবের দশম দরজা

    রুদ্রনীল চক্রবর্তী ১ কলকাতার এক বর্ষণ-ভেজা সন্ধ্যা। শীতের কুয়াশা তখনও নামেনি, কিন্তু বাতাসে একটা আর্দ্র শীতলতা ভাসছে। অর্ণব মুখোপাধ্যায়, শহরের এক জনপ্রিয় দৈনিকের তরুণ অনুসন্ধানী সাংবাদিক, ডেস্কে বসে খুঁটিয়ে দেখছিলো কিছু খবরের কাটিং। বেশ কয়েকদিন ধরেই তার মন অস্থির—একটি নাম বারবার কানে আসছে, এক অদ্ভুত সংবাদ হিসেবে। নামটি—শ্রীশরণানন্দ মহারাজ। তারাপীঠের এই সাধুর সম্পর্কে শোনা যাচ্ছে এমন সব দাবি, যা সাধারণ মানুষ যেমন বিশ্বাস করতে পারছে না, তেমনি অস্বীকারও করতে পারছে না। নাকি তিনি এমন এক আচার জানেন, যা “দশম দরজা” খুলে দিতে পারে। এই দরজা, কথিত আছে, শুধু মৃত্যু-পরবর্তী আত্মাদের জন্য নয়—এটি নরক ও পৃথিবীর মাঝের গোপন পথ, যা মানবচক্ষুর…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    চন্দ্রবিলের ডাক

    সিঞ্জিনী চক্রবর্তী আগমন নদিয়ার চন্দ্রপুর গ্রামটা সময়ের দিক থেকে যেন অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। শহরের তুলনায় এখানে সময় যেন একটু ধীরে চলে। দিনগুলো এখানে বড় শান্ত, নিঃসঙ্গ; সন্ধ্যা নামতেই ঘরবাড়ির দরজা জানলা বন্ধ হয়ে যায়, কুকুরের ডাকে চমকে ওঠে মানুষ। গ্রামটা যেন নিজেই একটা দীর্ঘশ্বাস। পাকা রাস্তা নেই, মোবাইল টাওয়ারের সংকেত আসে-যায়। চায়ের দোকানে বিকেলের আড্ডাও যেন কেমন নিরুত্তাপ। আর সন্ধ্যে নামলেই চারপাশে এমন এক নীরবতা নামে, যেন শব্দ করাটাই পাপ। এই চন্দ্রপুর গ্রামেই আসে রক্তিম সেন—কলকাতার যুবক, ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। সে আসছে তার মামাবাড়িতে, গরমের ছুটির জন্য। পুরনো দিনের মতো চিঠি বা ফোন করে নয়, হঠাৎ করেই একদিন চেপে…