উপাসনা রায় উত্তর কলকাতার যে রাস্তার নাম বারবার বদলেছে, সেখানে একটা বাড়ি আছে যার নাম কখনও বদলায়নি—লোকমুখে “কালোজানালা বাড়ি”। অর্পণ যখন প্রথম দিন চাবিটা হাতে পেল, বিকেলের আলো তখন ছেঁকে পড়ছে ছাদের ধুলোতে; সিঁড়ির মুখে জোনাকি বাতির মতো ঝুলছে পুরনো বাল্ব, আর মেঝের কালো-সাদা মোজাইকের ফাঁক থেকে উঠছে এক ধরনের স্যাঁতসেঁতে গন্ধ—আদ্রতা আর শেওলার মিশ্রণ। বাড়িওয়ালার সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই, দালাল বাবু বলেছিল, “এখানে যারা থাকে তারা নিজ দায়িত্বে থাকে। পানীয় জল নিজের মতো জোগাড় করবেন, আর… কালো জানালাগুলো বন্ধ রাখবেন।” কথাটা বলে একটু থেমে হেসেছিল, যেন মজা করছে। অর্পণ ভেবেছিল, পুরনো বাড়ির দোষ। কিন্তু যে জানালাগুলোর কাঠে সরু লোহার…
-
-
সঞ্জয় দে পর্ব ১: বাড়ির রহস্য অভিজিৎ ছিল ইতিহাসের ছাত্র। তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল পুরনো বাড়িগুলোর ইতিহাস খোঁজা, বিশেষত সেগুলোর যেগুলো সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে অথবা কেউ তাদের কাহিনী জানে না। একদিন, তার বন্ধু প্রীতম তাকে একটি পুরনো বাড়ির কথা জানায়, যে বাড়ি সম্পর্কে নানা গুজব ছড়িয়ে আছে। লোকজন বলে, এখানে অদ্ভুত হাসির শব্দ শোনা যায় এবং অনেক মানুষ এখানে হারিয়ে গেছে। সেই রাতের পর থেকেই বাড়িটির নাম তার মনের মধ্যে দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। অভিজিৎ ভেবেছিল, এই বাড়ির রহস্য উন্মোচন করতে পারলে তার গবেষণায় নতুন একটি দিক যোগ হবে। তাই এক সকালে, তার গবেষণার জন্যই সেদিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত…
-
নবনীতা বসু পর্ব ১: “যে চিঠি লেখা হয়নি কখনও” কলকাতার গলিগুলো রাত বারোটার পর অন্যরকম হয়ে যায়। আলো কমে আসে, ট্রামলাইনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়াগুলো যেন একটু লম্বা হয়, আর পুরনো বাড়িগুলোর জানালায় সময় দাঁড়িয়ে থাকে। ঠিক যেমন দাঁড়িয়ে থাকে ৩৫, বেণীপুর লেনের পুরনো দোতলা বাড়িটা, যার একতলায় ভাড়া থাকে অনুরাধা। সদ্য চাকরি পেয়েছে, একটা ডিজাইনিং এজেন্সিতে ক্রিয়েটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট। কলেজ স্ট্রিট থেকে বেশি দূরে নয় এই ফ্ল্যাট, আর বাড়িটাও সস্তায় মিলে গেছে বলে না ভাবলেও চলে। বাড়ির ভেতর ঢুকতেই একটা পলকা গন্ধ এসে লাগে তার নাকে—পুরোনো কাপড়, একটু ভ্যাপসা, আর কোথাও ধুলো মাখা কাঠের। অনুরাধা যদিও গন্ধ নিয়ে খুব একটা…