সায়ন্তনী ধর পর্ব ১: অচেনা স্পর্শ কলকাতার ভিজে সন্ধ্যে। বৃষ্টির টুপটাপ শব্দে ফ্ল্যাটের বারান্দা যেন একা বসে আছে। রিমঝিম ভেজা আলোয় স্নিগ্ধা দাঁড়িয়ে, হাতে এক কাপ কফি। তিরিশ পেরোনো এই নারী, সংসার আর অফিসের একঘেয়েমি পেরিয়ে আজ হঠাৎ যেন নিজের ভেতরেই অস্থিরতা টের পাচ্ছে। বিয়ের আট বছরের সম্পর্ক—অর্ণব, তার স্বামী, এখন প্রায় যন্ত্রের মতো। অফিস থেকে ফিরে শুধু ক্লান্ত শরীর আর একবিন্দু নিরুত্তাপ আলাপ। শারীরিক সম্পর্কও বহুদিন হয়ে উঠেছে দায়িত্বের মতো—যেন টিক চিহ্ন দিয়ে শেষ হওয়া কর্তব্য। স্নিগ্ধা আয়নায় তাকায়। চোখের নিচে হালকা কালি, ঠোঁটে এক চাপা অভিমান। অথচ শরীর তার এখনো মায়াবী, নরম চামড়ার নিচে লুকোনো এক অদম্য কামনা…
-
-
ঋদ্ধিমা বসুরায় দুধে চিনি একটু কম দিলে চা ঠিক যেন তার মনমতো হয়—তেতো নয়, আবার অতটাও মিষ্টি নয় যে জিভকে পীড়া দেয়। স্নিগ্ধা এত বছর ধরে নিজের চায়ের স্বাদ নিজের মতোই গড়ে তুলেছে, কিন্তু কেউ সেটা জানে না। রতন জানে না, মা জানেন না, এমনকি ছেলেও নয়। হয়তো এটাই তার আসল একাকীত্ব—নিজের মতো হতেই চা বানাতে হয়। প্রতিদিন সকাল আটটায় ছেলের স্কুল, আর আজ একটু তাড়াতাড়ি বেরোতে হয়েছিল। স্কুল গেটের সামনে একটা ভিড় জমেছে। একটা নতুন শিক্ষক যোগ দিয়েছেন, অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ করানো হচ্ছে। স্নিগ্ধা কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে তাকাল, তারপর চোখ আটকে গেল। হালকা গায়ের রঙ, লম্বা গড়ন, চোখে কালো…
-
অলীক ছায়ার ঘর রোজকার আলোচ্য বিষয়ের বাইরে কলকাতার একটি ছোট্ট ফ্ল্যাট, বালিগঞ্জের গলিতে। জানালার পাশে বসে শিউলি তাকিয়ে থাকে একঘেয়ে আকাশের দিকে। মেঘ জমেছে, কিন্তু বৃষ্টি আসে না। যেমন তার জীবনে জমেছে ক্লান্তি, কিন্তু উপশম নেই। দশ বছর হয়ে গেল বিয়ের। রঞ্জনের সঙ্গে একসময় প্রেম ছিল, হাতে হাত রেখে সিনেমা দেখা, ট্রামে চেপে লেকের ধারে হাওয়া খাওয়া। এখন সেইসব স্মৃতি যেন পুরোনো কাপড়—আছে, কিন্তু ব্যবহার হয় না। রুটিনে বেঁধে গেছে জীবন। সকালে উঠে রান্না, অফিস, বিকেলে ফিরে টিভির আওয়াজ, রাতে নিঃশব্দ বিছানা। রঞ্জন বলে, — “আজ আবার টিফিনে ঝোল কম ছিল।” শিউলি মৃদু হেসে বলে, — “তুমি তো এমনিতেও কম…