প্রশান্ত ভৌমিক এক ডঃ অনির্বাণ দত্ত ট্রেন থেকে নামলেন বোলপুর স্টেশনে, অগস্টের একটি অলস দুপুরে। তাঁর কাঁধে ক্যাম্ব্রিক কাপড়ের ব্যাগ, ভেতরে নোটবুক, একটি পুরনো ক্যামেরা, আর কিছু প্রয়োজনীয় গবেষণা-সামগ্রী। শান্তিনিকেতনের এই আশপাশের অঞ্চলে তিনি বারবার এসেছেন, কিন্তু এবারের উদ্দেশ্য কিছুটা ব্যতিক্রম। পূর্ব ভারতের লোকজ শিল্পের উপর একটি দীর্ঘ গবেষণাপত্রের কাজ করছেন তিনি, যার জন্য বিশেষ করে বীরভূম জেলার হারিয়ে যাওয়া পটচিত্রের খোঁজে এসেছেন। তিনি শুনেছিলেন, বোলপুর থেকে প্রায় পনেরো কিলোমিটার দূরে এক গ্রামে এমন একটি পটচিত্র আছে, যা কেবল শিল্পগুণের জন্য নয়, তার অদ্ভুত, অলৌকিক ইতিহাসের জন্যও লোকের মুখে মুখে ফেরে। এই গল্প প্রথম তিনি শুনেছিলেন তাঁর গুরু প্রণবেশ মিত্রর…
-
-
শ্রীজিত সাহা অধ্যায় ১: হাটের হদিস কলকাতার গাঢ় ধূসর সকালে শহরের বুক চিরে যখন শরদ রায় তাঁর পুরনো অ্যাম্বাসাডার গাড়ি নিয়ে রওনা দিলেন, আকাশে তখনও কুয়াশার বৃষ্টি লটকে ছিল। পেছনের সিটে রাখা ছিল একটি ধুলোমাখা ক্যামেরা, নোটবই, এবং বছর তিরিশেক পুরনো বাংলার লোকশিল্প বিষয়ক একটি জীর্ণ বই। শরদ একজন খ্যাতনামা শিল্প সংগ্রাহক হলেও তাঁর সংগ্রহ মানেই কেবল গ্যালারির ঝকঝকে ফ্রেম বা বিদেশ থেকে আনা মিনিয়েচার নয়—তিনি খোঁজেন মাটির গন্ধে মাখা হারিয়ে যাওয়া শিল্প, লোকজ ঐতিহ্য। আর তাই আজ তিনি চলেছেন নদিয়ার ধারের এক প্রাচীন গ্রামে, যেখানে প্রতি বছর বসে “মারগাঁ হাট”—এক আশ্চর্য হাট, যেখানে লোকশিল্পীরা নিজেদের সৃষ্ট পট, মুখোশ, মাটির…