সুলগ্না দেব এক অফিসের ব্যস্ত সময়টা যেন এক অদৃশ্য স্রোত, যেখানে প্রতিটি মানুষ ভেসে চলে তার নিজস্ব দায়-দায়িত্ব, টার্গেট আর ডেডলাইনের ভেতর দিয়ে। শহরের এক নামী বহুজাতিক কোম্পানির করিডর দিয়ে প্রতিদিনের মতো হাঁটছিলেন অরিত্র সেন—ত্রিশোর্ধ্ব বয়সী, ফরমাল শার্ট-প্যান্টে মোড়া এক নির্লিপ্ত মুখ, হাতে কফির কাপ আর চোখে চশমা। তার অভ্যাসই হলো কাজ ছাড়া অন্য কিছুতে না জড়ানো; সম্পর্ক, হাসি, বা ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব—সব যেন সময়ের বাইরে রাখা কোনো বইয়ের পাতার মতো। অপরদিকে মেঘলা দত্ত, ক্রিয়েটিভ টিমের প্রাণবন্ত এক মেয়ে, যার হাসি অফিসে একধরনের হাওয়ার মতো ছড়িয়ে থাকে। সহকর্মীরা তাকে সহজেই মিশুক বলে জানে, তবে খুব কম মানুষই বোঝে তার ভেতরে জমে…
-
-
মিতালী চট্টোরাজ নীল জানালার পাশে শীতের সকালটা ঠিক যেন অলস হয়ে উঠেছিল। কলকাতার দক্ষিণ শহরতলিতে এমন গা-ছুঁয়ে যাওয়া শীত খুব বেশি পড়ে না, তবু জানালার ধারে বসে ঐন্দ্রিলা নিজের শাড়ির আঁচলটাকে একটু ভালোভাবে গায়ে জড়াল। জানালার বাইরে একটা কৃষ্ণচূড়ার গায়ে রোদ পড়েছে, লালচে পাতাগুলো ঝলমল করছে। চুপচাপ বসে থাকা ঐন্দ্রিলার মনে হচ্ছিল, অনেকদিন এমনভাবে নিজেকে ছুঁয়ে দেখেনি সে। চারপাশে স্বাভাবিক জীবনের নিস্তরঙ্গতা। স্বামী সুজয় সকালেই বেরিয়ে গেছেন, বরাবরের মতোই। তাঁর সঙ্গে কথোপকথন এখন প্রায় শুধুই প্রয়োজনীয়তায় সীমাবদ্ধ। ছেলে তমাল ব্যাঙ্গালোরে—আইটি কোম্পানির চাকরিতে ব্যস্ত। ঐন্দ্রিলা এখন আর কারো ‘মা’, ‘স্ত্রী’, ‘ম্যাডাম’ হয়ে বাঁচতে চায় না। নিজের নামটা আবার নিজের মতো করে…