ঋতুপর্ণা দাশগুপ্ত এক ট্রেনের জানালা দিয়ে ভোরের আলো ঢুকে পড়েছিল দু’জনের নীরব কামনাভেজা মনোভারতিতে। শহরের ঘুমন্ত রাস্তাগুলো পেছনে ফেলে আদ্রিত ও ঋদ্ধিমা একটানা তাকিয়ে ছিল বাইরে, কুয়াশায় মোড়া মাঠ, তালগাছ, আর দূরের গ্রামের ঘরগুলোর দিকে। আদ্রিত জানালার ধারে বসে, চোখে একটা অদ্ভুত প্রশান্তি নিয়ে, হালকা হাসি খেলিয়ে বলেছিল, “তুই জানিস, শহরের ভিড়ে আমরা যেটা খুঁজি, সেটা আসলে কোথাও বাইরের নয়—ভেতরের।” ঋদ্ধিমা তার পাশে হেলান দিয়ে চোখ বুজে ছিল, তার বুকের সঙ্গে ঠেকেছিল ব্যাগের চেইনে ঝুলে থাকা একটা ছোট্ট রুদ্রাক্ষ। সে কিছু বলেনি, শুধু আদ্রিতের হাত ধরে রেখেছিল নরমভাবে, যেন শব্দহীন বিশ্বাস। তাদের মধ্যে এমনিতেই বেশি কথা হয় না—একটা চাহনি, একটুখানি…
-
-
সুদীপ্তা মিত্র অধ্যায় ১ বৃষ্টি আসবে কি না, সেটি নিয়ে আকাশ যেন নিজেই দ্বিধায়। পাড়ার মাথায় পুরোনো অশ্বত্থ গাছটার পাতায় কুয়াশার মতো শিশির জমে আছে, রোদ এখনও মুখ খুলে উঠতে পারেনি। সকাল ঠিক দশটা। এই সময়েই প্রতিবারের মতো ধীরপায়ে এসে দাঁড়ালেন অনুরাধা মিত্র—মনে হলো যেন প্রতিটি পা-ই কোনও অদৃশ্য প্রতিশ্রুতির ভার বইছে। তাঁর শাড়িটা একরঙা হালকা ধুসর, মাথায় সাদা খোঁপা, কপালে ছোট্ট লাল টিপ। মুখে একরকম ধীর, নরম বিষণ্ণতা—যেটা বয়সের চিহ্ন নয়, বরং সময়ের সঙ্গে লড়াই করে রয়ে যাওয়া অভ্যেস। তিনি বোথের ভেতর ঢুকলেন, দরজাটা নিজে থেকেই খট করে বন্ধ হল, আর পাশের চায়ের দোকানে বসা সোমনাথ ঠোঁটে চায়ের কাপ…