প্ৰতুল দে ১ চায়ের গন্ধে ভেজা বিকেল হাসপাতালের নিঃশব্দ করিডোর, মেয়ের বিদেশ থেকে আসা না আসা নিয়ে হিসেব, রোজকার ডায়েরির পাতায় অনুপস্থিত মানুষটার অদৃশ্য ছায়া—এসবের মাঝখানে অনন্যা সেন নিজের জীবনের হিসেবনিকেশ করতে করতে কখন যে পঞ্চাশের ঘর পেরিয়ে এসেছেন, সেটা বুঝতেও পারেননি। স্বামীর মৃত্যুর পরে সংসারটা কেমন যেন ঝিমিয়ে গিয়েছিল, একটা দীর্ঘ নিঃশব্দতায় আবৃত একাকীত্ব। কলকাতার দক্ষিণ শহরতলির ছোট্ট ফ্ল্যাটটা যেন ধীরে ধীরে তার ঘর নয়, নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা হয়ে উঠেছিল। একমাত্র মেয়ে দীপা বিয়ের পর লন্ডনে পাড়ি দেওয়ার পরে সেই নিঃশব্দতা আরও ঘনীভূত হয়, যেন পুরোনো আসবাব, দেয়ালের রং, ড্রয়ারের ভাঁজে ভাঁজে শুধু স্মৃতি জমে থাকে, জীবনের চলন নয়।…
-
-
ইশিতা দে অধ্যায় ১: কলকাতার শীতকাল একরকমের বিষণ্ণতায় মোড়া থাকে, যেন শহরটা হঠাৎই ধীরে নিঃশ্বাস নিতে শেখে। গা জড়ানো শালের মোলায়েম পরশ, ঠোঁট ছুঁয়ে থাকা কফির উষ্ণতা আর ফুটপাথের পুরনো বইয়ের গন্ধে মেশা হাওয়ার সাথে এক অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে ওঠে এই শহরের মানুষের। ঠিক এমনই এক সকালে প্রথম দেখা হয়েছিল অরিন্দম আর রূপার — কলেজ স্ট্রিটের এক ছোট্ট ক্যাফেতে। ক্যাফেটারিয়াটার নাম ‘কোয়েট লাইফ’। কাঠের টেবিল, ধুলো ধরা বইয়ের তাক আর দেয়ালে ঝুলন্ত পুরনো পোস্টারগুলো বলে দেয়—এখানে গল্প জমে, চুপিচুপি। এখানে এসে কফির কাপ নিয়ে বসে থাকা মানেই সময়কে একটু থামিয়ে রাখা। অরিন্দম ঠিক সেটাই করতে চেয়েছিল সেদিন। সে এসেছিল এক…