অনিন্দিতা ঘোষ পাল ১ প্রান্তি ছিল গ্রামের একেবারে সাধারণ মেয়ে। কাঁচা মাটির ঘর, উঠোনে মাটির চুলা, আর সারাদিন খাটুনি খাটা বাবা-মা—এই ছিল তার বেড়ে ওঠার পরিবেশ। তবে তার মধ্যে এক অন্য রকম প্রাণ ছিল। চারপাশের মেয়েরা যখন মাঠের ধারেই লাজুক হয়ে বসে থাকত বা পুতুল নিয়ে খেলত, তখন প্রান্তি ছেলেদের সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ করতে বেশি ভালোবাসত। স্কুল থেকে ফিরে বইখাতা ফেলে দিয়ে ছুটে যেত পাড়ার মাঠে। সেখানে ফুটবল খেলছিল বড় ছেলেরা, তার চোখে পড়ল বলটা কীভাবে এপাশ-ওপাশ দৌড়চ্ছে, ছেলেরা কেমন মন দিয়ে তাড়া করছে। প্রথমবারের মতো তার মনে হল, “এই খেলাটার মধ্যে যেন এক যাদু আছে।” মনে হল, ফুটবলের ওই গোল…
-
-
তিতলি মুখার্জী অধ্যায় ১: শিমুলগাছের ছায়ায় তিতির পালের জীবনের সেইসব দিন, যেগুলো সে পরবর্তীকালে স্মরণ করত “শিমুলফুলের দিন” নামে, আসলে ছিল এক অবিচল, নির্ভেজাল গ্রামীণ শৈশবের প্রতিচ্ছবি। তার গ্রাম—জয়নগর, ছিল যেন এক আলসে দুপুরের মতো ধীর, ছায়াঘেরা, অথচ অনুভবের গভীরে গাঁথা। কাঁচা রাস্তার দু’ধারে খেজুরগাছের ছায়া, পুকুরপাড়ে বসে থাকা ধলেশ্বর মাছের প্রত্যাশায় জাল ফেলে রাখা, আর বিকেলে মাঠের ধারে ছুটোছুটি—এইসবই ছিল তিতিরের দুনিয়া। তাদের ছোট্ট কুঁড়েঘরটি ছিল শিমুলগাছের পাশে, যে গাছের ছায়ায় বসে তিতির স্কুলের হোমওয়ার্ক করত। সেই গাছ, গাঢ় লাল শিমুলফুলে ভরা, যেন তার ছোট্ট জীবনের প্রতিটি স্বপ্নকে আগলে রাখত। হরিপদ পাল—তিতিরের বাবা, ছিলেন একজন গ্রাম্য পাঠশালার শিক্ষক, যিনি…