এক শ্যামবাজারের রাস্তাগুলো দিনের আলোয় যতটা সরগরম থাকে, রাত নামলেই যেন ততটাই অচেনা হয়ে যায়। বিশেষ করে শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড় থেকে একটু ভেতরের সরু গলিটা যেন আরও রহস্যে ভরা। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এক পুরনো থিয়েটার হল, যার নাম আজ আর কেউ মনে রাখে না। একসময় এখানে জমজমাট নাটকের আসর বসত, শহরের বড় বড় অভিনেতারা মঞ্চে আসতেন, তুমুল হাততালিতে ভরে উঠত আসনভর্তি দর্শক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব থেমে যায়—একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে থিয়েটারটি বন্ধ হয়ে পড়ে। তারপর কেটে গেছে দুই দশকেরও বেশি সময়, ধুলো জমে গেছে ভেতরে, মাকড়সার জালে জড়িয়ে গেছে সোনালি আসন, কাঠের মঞ্চ কেবল পচতে পচতে দাঁড়িয়ে…
-
-
সায়ন্তিকা দাশগুপ্ত অধ্যায় ১: শেষ কৌশলের রাত স্টার থিয়েটারের আলো নিভে যাওয়ার মুহূর্তেই সবার নিঃশ্বাস যেন আটকে গিয়েছিল। কলকাতার থিয়েটার-প্রেমীরা বহুদিন পর আবার এমন চমকপ্রদ কিছু প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছেন—রাজদীপ মুখার্জির “শেষ কৌশল”। থিয়েটারজুড়ে স্তব্ধতা। পর্দা ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে, ঘন কালো ধোঁয়ার মধ্যে থেকে উদিত হচ্ছে সোনালী আলো, তার মাঝে একা দাঁড়িয়ে আছেন রাজদীপ—তার মুখাবয়বে এক রহস্যময় আত্মবিশ্বাস, গলায় কোটের কলার তুলে। হাতজোড়া তুলে বললেন, “এই কৌশল দেখার পর যদি কেউ বলতে পারেন কীভাবে করলাম, আমি আমার ম্যাজিক ছাড়বো। আর যদি না পারেন, তবে আজ আপনারা দেখবেন… মৃত্যু থেকে ফেরা যায় কি না!” দর্শকদের ভেতরে কেমন যেন এক অজানা কাঁপুনি…