উৎসব মুখার্জী মেদিনীপুর শহরের প্রান্তে যখন অর্ণবের ট্রেন এসে দাঁড়াল, তখন সকালের কুয়াশা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। সে নেমে চারদিকে তাকাল—পরিচিত অথচ অচেনা লাগছিল জায়গাটিকে। ছোটবেলায় সে এখানে বহুবার এসেছে, মামার বাড়ি ছিল এই শহরে, কিন্তু তারপর থেকে কলকাতার ব্যস্ততা, পড়াশোনা, চাকরি আর শহুরে জীবনের দৌড়ঝাঁপ তাকে এই মাটির গন্ধ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। এখন আবার ফিরে আসার একটাই কারণ—তার বোন অনন্যা। বহু বছর আগে, অদ্ভুতভাবে অনন্যা হারিয়ে যায়। পরিবারে সেই ক্ষত আজও শুকোয়নি। বাবা-মা বোনের নাম শুনলেই কেঁদে ফেলেন, আর আত্মীয়রা চুপ করে যায়। অর্ণব একসময় চেষ্টা করেছিল খোঁজার, কিন্তু অল্প বয়সে তার কিছুই করার ছিল না। এখন যখন সে…
-
-
আত্রেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যায় ১: হারানো মুখ হাসপাতালের করিডোরটা ঠান্ডা আর ধূসর, যেন কাঁচের খাঁচায় আবদ্ধ কোনো অদৃশ্য বিষাদ। অর্ঘ্য সান্যাল জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল—তার হাতের মুঠোয় একটুকরো পুরনো ছবি, যেখানে ছয় বছর বয়সী একটি মেয়ে হাসছে; পরনে হলুদ ফ্রক, গলায় একটি লাল হৃদয় আকৃতির লকেট। পাশেই এক কিশোর ছেলেকে দেখা যাচ্ছে—চোখেমুখে দায়িত্ব, একরাশ ভালোবাসা। ছবিটার নিচে কালি দিয়ে লেখা—“দাদা আর রাত্রি, পুরুলিয়া ভ্রমণ, ২০০৩।” অর্ঘ্য ছবিটার দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে, গভীর শ্বাস নেয়। তারপর চোখ মেলে চুপিচুপি ফিসফিসিয়ে বলে, “আমি এবারও তোর কাছে পৌঁছাব, রাত্রি।” বিগত বিশ বছর ধরে তার এই কথাটুকু বদলায়নি, শুধু মানুষটা বদলে গেছে—বিজ্ঞানমনস্ক থেকে সে…