• Bangla - রহস্য গল্প

    কালরাত্রির ছায়া

    সৌরদীপ মুখোপাধ্যায় পর্ব ১ : অশুভ নিমন্ত্রণ কলকাতার শীতের শুরু। সন্ধ্যা নামতেই শহর জেগে উঠছে দীপাবলির আলোয়, আর দক্ষিণ কলকাতার পুরোনো বনেদি পাড়ায় লাহিড়ীবাড়ির কালীপুজোকে ঘিরে চারদিকে হৈচৈ। লাহিড়ীবাড়ির পুজো শুধু দেবতার কাছে ভক্তি নিবেদন নয়, বরং পাড়ার এক সামাজিক উৎসব, যেখানে কয়েক প্রজন্ম ধরে জড়ো হয় মানুষ। ঋদ্ধিমান মিত্র, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, লোকসংস্কৃতির ছাত্র। তাঁর কাছে এই নিমন্ত্রণ ছিল অদ্ভুত। লাহিড়ীবাড়ির এক তরুণী, অর্পিতা, হঠাৎ একদিন লাইব্রেরিতে এসে তাঁকে বলেছিল— “আমাদের বাড়ির পুজোয় এ বছর আপনাকে অবশ্যই আসতে হবে। হয়তো আপনার পড়াশোনার কাজে লাগবে।” ঋদ্ধিমান প্রথমে অবাক হলেও, ভেবেছিল এ হয়তো গবেষণার একটা সুযোগ। কিন্তু অর্পিতার চোখের ভেতর অদ্ভুত…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    ভাঙা হাতঘড়ি

    সৌরদীপ ব্যানার্জী পর্ব ১ : থেমে যাওয়া সময় কলকাতার গ্রীষ্ম সন্ধ্যা। শহরের ব্যস্ততা তখনও ফুরোয়নি। কিন্তু শান্তিনিকেতন লেনের পুরনো তিনতলা বাড়িটা যেন অন্য জগতের মতো নিঃশব্দ। চারপাশে কেবল ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ, আর ভেতরে জমে উঠছে অস্বস্তিকর হাহাকার। সেই বাড়ির দোতলার পড়ার ঘরে নিথর হয়ে পড়ে আছেন অধ্যাপক অনিরুদ্ধ মুখার্জী—শহরের খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ। তাঁর শরীরটা একপাশে হেলে পড়ে আছে, টেবিলের ওপরে কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। মাথার কাছে পড়ে আছে একটি হাতঘড়ি—কাঁচ ভাঙা, কাঁটা থেমে আছে রাত ২টা ১৭ মিনিটে। পুলিশ আসে, চারদিক ঘিরে ফেলে। দারোয়ান অশোক ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে জানায়— “সার, আমি তো বিকেল সাড়ে চারটের সময় ভেতরে ঢুকে লাশ দেখি। দরজা ভেতর থেকে…

  • Assamese

    অন্ধকাৰৰ ছায়া

    দীপাংশু বোৰঠাকুৰ পৰ্ব ১: বৰষুণৰ ৰাতি আৰু অদ্ভুত কল শহৰখনৰ ওপৰত সেই ৰাতি আকাশখনৰ মেঘ গাঢ় হৈ নামি আহিছিল। পূৰ্ণ বতাহেৰে পৰা বৰষুণৰ শব্দে মানুহৰ মনত এক ধৰণৰ বিৰক্তি আৰু ভয় দুয়ো মিশ্ৰিত অনুভূতি জাগ্ৰত কৰিছিল। গুৱাহাটী শহৰৰ ভাৰেলি পাথাৰৰ এডাল বাটৰ কাষত থকা এটা পুৰণি দুমজিলা ঘৰখনত অৰুণ জোনাকত একো নাথাকিলেও আলোছায়াৰ খেলা চলিছিল। ঘৰখনত বাস কৰিছিল মণিশংকৰ বৰুৱা। গুৱাহাটীৰ এটা কলেজত ইতিহাসৰ অধ্যাপক। বয়সত পঞ্চাশ পাৰ হ’লেও তেওঁৰ কণ্ঠস্বৰ, দৃঢ় চাহনি আৰু কথা কোৱাৰ ভঙ্গীমাই মানুহৰ মনত এক ধৰণৰ ভৰসা জাগ্ৰত কৰিছিল। কিন্তু এই মানুহটোৰ জীৱনত বহুবছৰ ধৰি এটা অদ্ভুত শূন্যতা আছিল। পত্নী দীৰ্ঘদিন আগতেই মৃত্যুবৰণ কৰিছিল, পুতেক…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    শেষ চিঠির সূত্র

    ঋত্বিক বসু পর্ব ১: কুয়াশার ভিতর হারিয়ে যাওয়া মানুষ শীতের সকাল। কলকাতার উত্তর শহরতলির এক পুরনো গলির ভেতর অদ্ভুত কুয়াশা জমে আছে। লাল ইটের বাড়ি, কাঠের দরজা, ম্লান আলো—মনে হয় যেন সময় এখানে থমকে গেছে। গলির মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এক টালির ছাদওয়ালা পুরনো ডাকঘর। এই ডাকঘরের সামনে থেকেই নিখোঁজ হয়েছিল মানুষটা—সুদীপ্ত মল্লিক। বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে, পেশায় কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক। ঘটনাটা ঘটেছিল মাত্র দু’দিন আগে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি প্রতিদিনের মতো চিঠি পাঠাতে এসেছিলেন ডাকঘরে। তখনো কুয়াশা কাটেনি। তিনি ভেতরে ঢুকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কয়েক মিনিট পর তাকে দেখা গেল না। আর বেরোলেন না তিনি। সবাই ভেবেছিল, হয়তো অন্য দরজা দিয়ে…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    শূন্যঘরের নিঃশ্বাস

    মায়া মুখোপাধ্যায় পর্ব ১: অদৃশ্য কালি রাত সাড়ে বারোটার পর কলকাতার গলিগুলো এমন এক শ্বাসে ঢুকে পড়ে, যাকে আলাদা করে বোঝানো যায় না— যেন শহরটা এক বিশাল ঘড়ির কেসিং, ভেতরে অদেখা গিয়ারেরা ধীরে ধীরে ঘোরে, আর প্রতিটি ক্লিকের মাঝে কোথাও একটুখানি অন্ধকার জমে ওঠে। সেই অন্ধকারে পায়ের শব্দ মিশিয়ে দ্রুত হাঁটছিল শায়ন্তনী সেন— শহরের ছোট্ট এক সংবাদমাধ্যমের ক্রাইম রিপোর্টার। এক ঘণ্টা আগেই তার কাছে এসে পৌঁছেছে একটি অদ্ভুত খাম— কোন প্রেরকের নাম নেই, শুধু টপাটপ করে বসানো তিনটি কালো ডট, যেন কেউ ইচ্ছা করে বাকিটুকু গিলে ফেলেছে। খামের ভেতরে একটিই কাগজ, তাতে মাত্র এক লাইন: “ঘরের নিশ্বাস শুনতে পেলে বুঝবে…

  • Bangla - হাস্যকৌতুক

    গণেশদার গোয়েন্দাগিরি

    সুব্রত বসাক পর্ব ১: চায়ের দোকানে চাঞ্চল্য গাঁয়ের নাম গোরুর হাট। ম্যাপে নেই, তবে পাড়ার চা-তেলের দোকান থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত অফিস পর্যন্ত সবাই জানে, এখানে সমস্যা মানেই “গণেশ দা-র তদন্ত”! গণেশ দা হলেন পাড়ার অঘোষিত গোয়েন্দা—মাথায় হালকা টাক, হাতে চা, আর পকেটে সবসময় কলম আর ছেঁড়া খাতা। চশমা কাঁধে ঝুলিয়ে যখন হাঁটেন, তখন মনে হয় পাড়ার সব রাজ্যগুপ্ত খবর উনারই কানে। ঘটনা শুরু হয় এক সকালে, বাজারের মোড়ে হাকিম দা-র চায়ের দোকানে। হাকিম দা বলল, — “রঘুর দোকান থেকে সোনালি ইলিশ চুরি গেছে রে!” — “সোনালি ইলিশ?” – পাশে বসে থাকা মধু বলল। — “হ্যাঁ রে! ওইটা প্ল্যাস্টিকে মোড়ানো,…

  • Bangla - রহস্য গল্প

    বাতাসিয়াপুর হত্যাকাণ্ড

    জয় ভট্টাচার্য চুপচাপ বাতাস কালিম্পঙের এক কোণে, কুয়াশা মোড়া ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম বাতাসিয়াপুর। চারদিকে পাহাড়, গাছগাছালি আর নিঃস্তব্ধতা—শহরের ব্যস্ততা থেকে যেন একেবারে পালিয়ে আসার জায়গা। ঠিক সেখানেই শীতের ছুটিতে ঘুরতে এসেছিল চার বন্ধু—সৌরভ, অরিত্র, তিয়াসা আর মেহুল। দার্জিলিং থেকে ছোট গাড়িতে এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে, শেষ বিকেলে তারা পৌঁছালো বাতাসিয়াপুর। গ্রামের একদম কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা পুরনো কাঠের বাংলো—“হিমালয় ভিউ লজ”। নামের সঙ্গে মিলে বাংলোর বারান্দা থেকেই দেখা যায় কুয়াশার চাদরে মোড়া পাহাড়ের চূড়া। বাংলোর কেয়ারটেকার বুড়ো গনেশবাবু, মুখে চিরকালীন ধূসরতা। “রাতের দিকে বেশি বাইরে যাইয়েন না বাবুরা,” বললেন চা এগিয়ে দিতে দিতে। “এই পাহাড়ে কুকুরও কখনও কখনও হাওয়ায় ঘেউ ঘেউ…