শুভাশিস রায় পর্ব ১: ঘর, সমাজ আর আমি স্নিগ্ধা যখন জানলার ধারে দাঁড়িয়ে থাকত, শহরের কোলাহল তার গায়ে কখনও লাগত না। একসময় যে শহরে সে স্বপ্ন দেখতে শিখেছিল, সেই শহরই এখন যেন প্রতিদিন তাকে প্রশ্ন করে—”তুমি এখনো আছো কেন?” তিন বছর আগে দুর্ঘটনায় মারা যায় তার স্বামী অভিরূপ। দাম্পত্য ছিল শান্ত, যদিও প্রেমে রঙের চেয়ে দায়িত্বের ছায়া ছিল বেশি। একমাত্র ছেলে রুদ্র তখন মাত্র আট বছরে পা রেখেছে। অভিরূপের মৃত্যু সংবাদ শুনে ছেলেটার চোখে কোনো প্রশ্ন ছিল না, শুধু একটা স্থির তাকিয়ে থাকা। সেই চাহনি আজও স্নিগ্ধার স্মৃতিতে খোদাই হয়ে আছে। দেখতে গেলে সমাজ তাকে দয়া করে রেখেছে। “বিধবা মেয়েদের…
-
-
সোমা মিত্র আমার স্মৃতি পুরোনো অ্যালবামের মতো—কিছু ছবি রঙ হারিয়েছে, কিছু এখনো ঝকঝকে। উত্তর কলকাতার যে বাড়িটাতে আমার জন্ম, সেই লালবাড়িটা এখন আর নেই। সেটার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে চকচকে অ্যাপার্টমেন্ট, নাম—“মঙ্গলতারা হাইটস”। মাঝে মাঝে ভাবি, নামটা কত গ্ল্যামারাস, অথচ সেই নামের নিচেই চাপা পড়ে গেছে আমার ছোটবেলার চটি পায়ে দৌড়ানো বারান্দা, কাঁঠালের গন্ধমাখা দুপুর, আর দিদার হাতে বাঁধা তুলসী মালা। আমাদের বাড়িটা ছিল এক রকম রেওয়াজি—সকালে প্রার্থনা, দুপুরে শব্দ করে পাখার ঘুরন্ত আওয়াজ, আর সন্ধ্যেবেলা harmonium-এর একঘেয়ে সুর। বাবা অফিসফেরতা এককাপ চায়ে দিন শেষ করতেন, আর মা রান্নাঘরের কোণে বসে চুপচাপ মাছ কুটতেন—কখনোই অকারণে হাসতেন না। তবু আমি জানতাম, মা…