অধ্যায় ১ – নতুন হোস্টেল, নতুন জীবন অয়ন তার কলেজ লাইফের নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছে, আর সেই শুরুটি নতুন হোস্টেলের ঘর থেকে। কলেজের গেট পার হতেই তার মন এক ধরনের অদ্ভুত উত্তেজনায় ভরে ওঠে। হোস্টেলটি শহরের মূল রাস্তার কাছে অবস্থিত, তবে বাইরে থেকে দেখলে যেন এটি সাদা রঙের এক নিঃসঙ্গ স্থাপনা, যার দেয়ালগুলো পুরনো, আর জানালার কাঁচগুলো ধুলো-আবৃত। প্রথম দিনেই অয়ন তার ব্যাগ উঠিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরটি ছোট হলেও যথেষ্ট খোলামেলা, এক পাশে ধূসর রঙের লোহার বেডগুলো সজ্জিত, আর জানালার পাশে ছোট্ট ডেস্ক। জানালা দিয়ে আসে বাইরের মৃদু রোদ, যা ঘরের দেয়ালে ছাপ ফেলছে। তবে সবকিছুর মাঝেই যেন…
-
-
মৃত্যুঞ্জয় নস্কর এক সকালটা ছিল একেবারে অন্যরকম। শীতকালীন সকালের হালকা কুয়াশা এখনো খেলার মাঠের চারপাশে ঝুলে আছে, অথচ স্কুলের করিডোরে অস্বাভাবিক একটা গুঞ্জন। টিফিনের আগেই খবরটা ছড়িয়ে পড়েছিল—এইবারের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় মঞ্চনাটক হবে “সিরাজউদ্দৌলা”। সাধারণত প্রতি বছর নাচ-গান, আবৃত্তি আর ছোটখাটো নাটিকা হয়, কিন্তু ঐতিহাসিক নাটক করার সিদ্ধান্তটা ছিল একেবারে চমকপ্রদ। খবর শুনেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা উত্তেজনার ঢেউ বয়ে গেল। ক্লাসে বসে কেউ মন দিয়ে পড়াশোনা করছিল না, সবাই ফিসফিস করে আলোচনা করছে—কে কোন চরিত্রে মানাবে, কে নায়ক হতে পারে, কে আবার খলনায়ক! এমনকি যারা সাধারণত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় না, তারাও এবার আগ্রহী হয়ে উঠেছে, যেন এই নাটকের…
-
এক অভিষেক রুমের এক কোণে বসে তার ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে চোখ স্থির করে তাকাল। হোস্টেলের ঘরটি ভোরবেলার কেমন অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় মুড়িয়ে আছে, যেখানে কেবল তার নিজের নিশ্বাস আর কিবোর্ডের হালকা শব্দই ভেসে আসছে। ঘরের জানালা দিয়ে ঢোকার সূক্ষ্ম আলো তার চারপাশের সবকিছুকে ফিকে করে দিয়েছে, যেন পুরো রুমটা ধীরে ধীরে বাস্তব থেকে অমূর্তে রূপান্তরিত হচ্ছে। প্রতিদিনের অনলাইন ক্লাসের সময় অভিষেকের কাছে এই নিস্তব্ধতা কিছুটা স্বস্তি দেয়, আবার কিছুটা চাপের অনুভূতিও তৈরি করে। তার একাকীত্ব তাকে মানসিকভাবে কিছুটা ক্লান্ত করেছে, কারণ শহরের এই হোস্টেল জীবনে সামাজিক কোনো সম্পর্ক তার কাছে থাকেনা। ল্যাপটপের হেডফোনটি কানে দিয়ে সে ক্লাসে যোগ দিতে গিয়ে শিক্ষকের…
-
সৌভিক ভট্টাচার্য ১ সৌমিক দে নামের সেই সাধারণ ছাত্রটির জীবন ছিল একঘেয়ে – সকালে স্কুল, বিকেলে টিউশন, রাতে মা-বাবার বকুনিতে পড়াশোনা। ক্লাস নাইনের গড়পড়তা ছাত্র সে, কিন্তু তার চোখে একটা স্বপ্ন লুকিয়ে ছিল—মীনাক্ষী সেন। হ্যাঁ, সেই মেয়েটি যে আঁকা-আঁকিতে দুর্দান্ত, প্রতিটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতে আনে, আর যার হাসিতে সৌমিকের হৃদয়ের কাঁপুনি বেড়ে যায়। মীনাক্ষী তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলেও সেটা সৌজন্যবোধ না প্রেম—সে বিষয়ে সৌমিকের কখনও সাহস হয়নি ভাবারও। তবে প্রেমে পড়া তো আর যুক্তির বিষয় নয়—একদিন হঠাৎ ক্লাসরুমে মীনাক্ষী যখন তার খাতা ফেরত দিয়ে বলল, “তোর লেখা কবিতাটা দারুণ লেগেছে”, তখনই সৌমিক যেন ভেসে গেল এক অলীক মেঘের…