নীলাঞ্জনা রায় বর্ধমান শহরের জানুয়ারির সকালগুলোয় কুয়াশা যেন চাদরের মতো শহরটাকে ঢেকে রাখে। স্কুলের মাঠটা তখনো ঘুমঘুম, কেবল কয়েকটা কাক আর গাছের ডালে বসে থাকা রংচটা ধোঁয়াশার ভেতর কিছু চেনা-অচেনা আওয়াজ। সেই রকম এক সকালে ঊর্মিলা সাইকেল ঠেলে স্কুলে ঢুকল, কানটুপি ঢাকা মুখে একরাশ মনোযোগ—তবে বাইরের নয়, তার নিজের ভিতরের কোনো অজানা ভাবনায়। ভেতরের কাঁপুনি ঠেকিয়ে সে সাইকেলটা লাইব্রেরির পাশে রেখে ক্লাসরুমের দিকে হাঁটতে লাগল, মেঝেতে জমে থাকা শিশিরে পা পিছলে যাবার মতো টান, আর জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ছেলেকে দেখে হঠাৎ থেমে গেল। ছেলেটা, নীল টুপি আর ধূসর সোয়েটারে আবৃত, জানালার বাইরে তাকিয়ে ছিল—হয়তো কুয়াশার ভেতর কিছু একটা…
-
-
দেবিকা সেনগুপ্ত অধ্যায় ১: প্রথম দেখার দিন শীতের সকালগুলো কলকাতার শহুরে ব্যস্ততার মধ্যেও এক অদ্ভুত শান্তির সুর বয়ে আনে। ডিসেম্বরের কুয়াশায় মোড়া সেই সকালে, কলকাতার সেই প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর যেন নীরবতার চাদরে ঢাকা পড়েছিল। মেন বিল্ডিং-এর পাশের লাল ইটের করিডর, বটগাছের শিকড় ছাওয়া পায়েচলা পথ আর পাতা ঝরা কুয়াশা ভেজা মাঠ তখনও ঘুমিয়ে ছিল আধো জাগরণে। এই চেনা অথচ প্রতিদিন নতুন করে জাগ্রত হওয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে পা রেখেছিল রিয়া—একটা রোদ্দুর-ছোঁয়া স্বপ্নের মতো মেয়ে। তার পরনে ছিল নীল-সাদা কটন শাড়ি, কপালে ছোট্ট এক ফোঁটা লাল টিপ। চোখে ছিল এক অদ্ভুত কৌতূহল আর প্রাণের দীপ্তি, যা প্রথম দেখাতেই কারও মন কাড়তে পারত।…