অমৃতা দেবনাথ ১ অফিসের দিনভর আনন্দ আর হৈচৈয়ের পর ধীরে ধীরে রাতের পর্দা নামছে। পিকনিকের শেষ মুহূর্তে চারপাশের হইচই যেন আলতো করে স্তিমিত হয়ে এসেছে, শুধুই গঙ্গার ঘাটের বাতাসে থেকে যাচ্ছে দিনের মিষ্টি ক্লান্তি। বড় বড় গাছের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো গলে এসে নদীর জলে ঝিকিমিকি ছড়াচ্ছে, মাঝে মাঝে দূরে কোনো নৌকার ঘণ্টাধ্বনি বা ট্রেনের হুইসেল শোনা যাচ্ছে। অফিসের সহকর্মীরা একজন দুজন করে নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ শেষবারের মতো গ্রুপফটো তোলার জন্য ব্যস্ত। রুদ্র দাঁড়িয়ে আছে খানিকটা দূরে, কোলাহলের ভিড় থেকে আলাদা হয়ে। সে লক্ষ্য করল, তৃষাও এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে, মুখে একটা মৃদু হাসি…
-
-
চৈতালী বৰ্মন চাঁদের আলোয় ডুবে থাকা সেই গ্রামটির চারপাশে এক অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছিল। দিনের কোলাহল ফুরিয়ে গেলে গ্রামের আকাশ যেন হঠাৎ নিস্তব্ধ হয়ে যায়, কেবল দূরের পুকুরের ব্যাঙের ডাক আর মাঝেমধ্যে শেয়ালের হাঁক সেই নীরবতাকে খানিকটা ভেঙে দেয়। অরিন্দমের জীবনের প্রতিটি দিন কাটত একই ছন্দে—ভোরের আলোয় খেতের কাজে বেরিয়ে যাওয়া, দুপুরের রোদে ঘেমে-নেয়ে খড়ের গাদায় বসে বিশ্রাম নেওয়া আর সন্ধ্যার দিকে ফেরার পথে মাঠের আল দিয়ে একবার চোখ ফেরানো। সে জানত, সেই দিকেই হয়তো দেখা মিলবে মিতালীর। কৃষকের ছেলে হয়েও তার ভেতরে এক গভীর কোমলতা ছিল, যা মাটির গন্ধে জন্মেছিল, অথচ গ্রামের চোখে সে ছিল এক সাধারণ শ্রমিক, যার…
-
অনন্যা দত্ত ১ কলকাতার ভিড়ভাট্টা, ট্রাফিকের হর্ন, অফিসের শেষ না হওয়া মিটিং আর সময়ের পেছনে দৌড়তে থাকা জীবন—এই সব মিলিয়ে সৌভিক ও অভিসারিকার সংসার যেন এক অদৃশ্য যান্ত্রিক চক্রে আটকে গেছে। সৌভিক সকালেই বেরিয়ে যায়, অফিসের নথি, ক্লায়েন্ট কল আর প্রেজেন্টেশনের মধ্যে ডুবে থাকে, ফেরে রাত অবধি; তখন ক্লান্ত মুখে একমুঠো হাসি দেওয়ার শক্তিও থাকে না তার। অভিসারিকা, একসময় যার দিন কাটত রঙতুলি আর ক্যানভাসের মাঝে, এখন নিজের শিল্পকর্মের থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছে। স্কুলে আঁকা শেখানোর ফাঁকে ফাঁকে মন চলে যায় বহু বছর আগের সেই দিনগুলিতে—যখন সৌভিক হঠাৎ সন্ধ্যায় এসে তার জানালার নিচে দাঁড়িয়ে ডাক দিত, কিংবা রঙিন চিঠি…