স্নেহা চৌধুরী সকালবেলা গ্রামের শান্তিপূর্ণ আবহে অনিকেত সাইকেলের চাকা ঘুরাতে থাকে, যেন প্রতিটি ঘূর্ণনই গ্রামের মানুষের জীবনের ছোট্ট গল্পকে স্পর্শ করছে। সূর্য কুয়াশার ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠছে, এবং পাতার কোণে কণা কণায় জলরাশি ঝলমল করছে। গ্রামের সরু মাটির পথ ধরে সে এগিয়ে যাচ্ছে, প্রতিটি বাঁক, প্রতিটি ছোট্ট গলি তার কাছে পরিচিত—যেমন সে সেই গ্রামের প্রত্যেকটি মুখের সঙ্গে পরিচিত। ডাকপিয়ন হিসেবে তার দৈনন্দিন কাজ হলো চিঠি পৌঁছে দেওয়া, কিন্তু অনিকেতের কাছে প্রতিটি চিঠি কেবল কাগজ নয়; তা মানুষের আবেগ, স্মৃতি এবং হাহাকার-এর সংমিশ্রণ। বাড়ি বাড়ি যায়, দরজার ঘুষি বাজায়, কখনও কেউ হাসি দিয়ে স্বাগত জানায়, কখনও কেউ নীরবতা বজায় রাখে।…
-
-
অর্পিতা সেনগুপ্ত ১ ২০২৫ সালের বসন্তকাল। শান্তিনিকেতনের কাঁচা রাস্তার ধুলো তখনো শীতের শেষ হাওয়ায় হালকা হয়ে উড়ছে, আর কৃষ্ণচূড়া গাছগুলোতে ফুটতে শুরু করেছে লালচে ফুল। ভোরবেলা গ্রামের পূর্বদিকে হঠাৎ যেন এক অচেনা কোলাহল নেমে আসে। কাঁচা রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে ঢুকে পড়ে কয়েকটি বড় ট্রাক—কেউ বহন করছে বিশাল আলো ঝোলানোর স্ট্যান্ড, কেউ বা কাঠের বাক্সে ভরা অদ্ভুত যন্ত্রপাতি। সঙ্গে রঙিন কভার দিয়ে ঢাকা পোশাকের গাড়ি, আরেকটিতে খাবারের সরঞ্জাম। কয়েকজন লম্বা বিদেশি, গলায় ক্যামেরা ঝুলানো, আর চওড়া টুপিওলা কর্মীরা নামতেই গ্রামের শিশুরা কৌতূহলী চোখে ভিড় জমায়। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা খেজুর গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে, “ওরা নাকি সিনেমা তুলবে।” শ্যামলী দত্তের হোমস্টের উঠোন তখন…
-
বটুকেশ্বর পাল পটাশপুর গ্রামের নাম যাঁরা শুনেছেন, তাঁরা জানেন—এই গ্রামে জিনিসপত্র যত পুরনো, তার চেয়ে বেশি পুরোনো মানুষের বিশ্বাস। কিন্তু এই প্রাচীন চিন্তার ঢেউয়ে মাঝেমাঝে উঠে আসে এক-একটা অদ্ভুত ঢেউ, যেমন হরিপদ কাকা। উনি এমন একজন ব্যক্তি, যিনি নিজেকে “গাঁয়ের গ্যালিলিও” বলেই দাবি করেন। যদিও কাকার অঙ্কে তেমন হাত ছিল না—শ্রেণি সাত অবধি পড়েছেন, তারপরে খাজাঞ্চির দোকানে হিসেব রাখার বদলে লোকের পকেট ভুল করে গুণে গুণে ফাঁকা করে ফেলেছিলেন। সেই থেকে “গণিত ত্যাগ” করে, মন দিয়েছেন বিজ্ঞানে—অর্থাৎ, নিজের মতো করে সব কিছু আবিষ্কার করার চেষ্টায় দিনরাত বিভোর। কাকার এই বিজ্ঞানমনস্কতা আসলে এল আকাশ থেকে। কয়েক বছর আগে এক ঝড়বৃষ্টির রাতে…